ঢাকা, ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

মাদারীপুরে প্রাথমিকে শিক্ষক সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

মাদারীপুর প্রতিনিধি
২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
mzamin

মাদারীপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক সংকটের কারণে মানসম্মত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। জেলার ২০০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষক দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। আর সহকারী শিক্ষক সংকটেও সৃষ্টি হয়েছে নাজুক অবস্থা। দ্রুত শূন্য পদ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 
সরজমিন কথা হয় সহকারী শিক্ষক শিপ্রা বৈরাগীর সঙ্গে। তিনি মাদারীপুরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের দত্ত কেন্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। প্রধান শিক্ষক না থাকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি পালন করছেন বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব। এতে অধিকাংশ সময় দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকছেন তিনি। এদিকে, কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বছরের অক্টোবরে প্রধান শিক্ষক অর্চনা গোলদার অন্যত্র বদলি নেন। পরে এই পদে আসেন সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান। পাঠদানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের অন্য একাধিক কাজ করায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এদিকে, শহরের পুলিশ লাইন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০০ জন শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ১২ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু আছে মাত্র ৬ জন। 
শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র বলছে, জেলার ৭১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২৪টি প্রধান শিক্ষক ও ২০৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০১৩ সালের পর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া বন্ধ রয়েছে। আর মামলা জটিলতায় আটকে আছে সহকারী শিক্ষকের মধ্য থেকে পদোন্নতিও। শিক্ষার্থী প্রত্যয় দেব বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট থাকায় পড়ালেখা কিছুটা বিঘ্ন হয়। আমরা চাই পরিপূর্ণভাবে শিক্ষক থাকুক। তাহলে আমরা আরও বেশি করে পাঠদান করতে পারবো। পড়ালেখার মানও ভালো হবে। অনন্যা বলে, আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। আমরা চাই হেড স্যার আসুক। তাহলে আমাদের দিকনির্দেশনাও ঠিকঠাক হবে। পড়ালেখা ও রেজাল্টও ভালো হবে। কেন্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিপ্রা বৈরাগী বলেন, একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা খুব কঠিন। একদিকে দাপ্তরিক কাজ, অন্যদিকে পাঠদানের কাজ। একসঙ্গে দু’টি করতে নাজুক অবস্থা হয়। তাই দ্রুত প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক অন্যত্র চলে যাওয়ার পর এই পদের দায়িত্ব পালন করলেও কঠিন অবস্থা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পর অন্য কাজ করা খুবই কঠিন হয়। এর ঘাটতি প্রধান শিক্ষকই পারেন পূরণ করতে। তাই এই পদটিতে দ্রুত নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। পুলিশ লাইন্স্‌ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৫০০ জন। শিক্ষক মাত্র ৬ জন। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। শিক্ষক সংকটে হিমশিম অবস্থা তৈরি হয় বাকি শিক্ষকদের। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনজুর রহমান জানান, শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শিক্ষা দপ্তরে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয় অধিদপ্তর। তাই জেলা অফিস থেকে সেটি শুধু জানানোই যায়, এর বাইরে আমাদের কিছুই করার নেই। আর সহকারী শিক্ষকদের সম্প্রতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাই তেমন বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ খালি নেই।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status