বাংলারজমিন
আগামী নির্বাচন হবে ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠুু, নিরপেক্ষ: প্রেস সচিব
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
(৫ ঘন্টা আগে) ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ৯:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:০৭ অপরাহ্ন

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠুু, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে যে উৎসবমুখর পরিবেশে দেখা যেতো, সেই পরিবেশকে ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। এই নির্বাচনে দেশের জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে পারবে। শনিবার বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রেস সচিব এ কথা বলেন। নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ ও যোগ্য ব্যক্তি যাতে প্রার্থী হতে পারেন, সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি। এজন্য নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটি প্রস্তাবনা পেশ করেছে। আশা করছি দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় ও উৎসবমুখর ভোট আপনারা দেখতে পাবেন।
তিনি বলেন, খুলনার উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আছে। এই শহরের উন্নয়নের সাথে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বাড়ানোর সম্পর্ক আছে। মোংলা বন্দরের উন্নয়নের জন্য সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মোংলা বন্দরের পাশে অর্থনৈতিক জোনে শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এজন্য বিডা কাজ করছে।
বেসরকারি খাতে খুলনায় নতুন নতুন পাট শিল্প কারখানা স্থাপনে উদ্যোগী হলে সরকার তাদেরকে সহায়তা দেবে বলে জানান প্রেস সচিব। বলেন, সরকারি অনুদানে আর ইন্ডাস্ট্রি চালানো সম্ভব না। এখানে বেসরকারি উদ্যাগে নিতে হবে। অর সেজন্য বিডা, কমার্স মিনিস্ট্রি, এডুকেশন মিনিস্ট্রি, ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে। শিক্ষা শহর হিসেবেও বেড়ে ওঠার সুযোগ আছে খুলনার। অনেকগুলো সরকারি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় রয়েছে এখানে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় খুলনা শহরে অনেক ক্লাইমেট রিফুজি আসছেন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, তাদের জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। তারা যাতে নিরাপদ আবাসন পায় সে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শ্যামনগর গাবুয়ায় এলজিইডির উদ্যোগে নিরাপদ পানি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এখন সেটা সমস্ত উপকূল এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগ এখন দৃশ্যমান না হলেও এক সময় তা দেখা যাবে এবং আগামী এক দশকে খুলনা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। খুলনার বন্ধ হয়ে জুট মিল গুলোতে যেসব স্কুল আছে, সবগুলোকে সরকারিকরণ করা হবে বলেও জানান। এ সময় ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ, প্রেস সচিবের সুরাহার আশ্বাস
এদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা খুলনা প্রেসক্লাব ঘেরাও করে। এ সময় ভেতরে অবস্থান করছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম। শনিবার বিকেল ৬টার দিকে প্রেস সচিব সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে খুলনা প্রেস ক্লাবে এলে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রেস সচিব ক্লাবে প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পরই আন্দোলনকারীরা ক্লাব ভবনে উপস্থিত হয়ে সামনের সড়ক অবরোধ করে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের সময়কালে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি চরম নাজুক পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিদিনই খুলনায় খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু এখনো কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে খুলনা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ প্রেস সচিব ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা আলোচনায় বসতে সম্মত হন। প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে আলোচনায় খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এখানে ঘন্টাব্যাপী আলোচনা হয়। প্রেস সচিব জানান, তিনি ঢাকায় ফিরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করে সুরাহা করবেন। রাত ৮ টা ১০ মিনিটে প্রেস সচিব ও তার সফরসঙ্গীরা প্রেসক্লাব থেকে বের হন।
এ সময় প্রেসক্লাব ও সংলগ্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাব চত্তরে ব্রিফিংয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগ না হলে কেএমপি সহ নগরীর ৮ থানা ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর খানজাহান আলী রোড গ্লাক্সোর মোড়ে কেএমপি হেড কোয়ার্টার ঘেরাও, সড়ক অবরোধ ও রাস্তায় টায়ার জ¦ালিয়ে বিক্ষোভ করে। এরপর বিকেল ৫টার দিকে মিছিল নিয়ে খুলনা প্রেসক্লাবের উদ্দেশ্য রওনা হয়।