বাংলারজমিন
পরকীয়া জেনে যাওয়ায় স্বামীকে হত্যা, স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে লাপাত্তা স্ত্রী
রাজশাহী প্রতিনিধি
(২ দিন আগে) ১১ জুন ২০২৫, বুধবার, ৫:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে পরকীয়া জেনে যাওয়ায় বন্ধুদের সহযোগিতায় স্বামীকে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে স্ত্রী লাপাত্তা হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পরিবার এসব অভিযোগ করেন। নিহতের নাম সজিব হোসেন (২৫)। তিনি জেলার পবা উপজেলার বেজোড়া এলাকার মো. ফিরোজ ইসলামের ছেলে। পেশায় কাঠের নকশামিস্ত্রী ছিলেন সজিব। সংবাদ সম্মেলনে তার মা মুনজুরা বেগম, ভাই হাসিবুল ইসলাম, চাচা মো. বাদশা ও প্রতিবেশী মো. মফিজ উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তের নাম মোছা. রিয়া খাতুন। তিনি পবার বাজিতপুর এলাকার রিয়াজ আলীর মেয়ে। ৯ বছর আগে সজিবের সাথে তার বিয়ে হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে সজিবের ভাই হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী রিয়া এলাকার শওকতের ছেলে মিনহাজের সাথে পরকীয়া করত। সেজন্য পারিবারিক জীবনে প্রায়ই তাদের কলহ লেগে থাকত।
বিষয়টি আমার ভাই জেনে যাওয়ায় গত ৮ মার্চ রাতে তার স্ত্রী রিয়া, মিনহাজ, রাফিউল ইসলাম রাফু, শরিফসহ আরও ৪/৫ জন পরিকল্পনা করে আমার ভাইকে হত্যা করে লাশ আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর পুলিশকে ম্যানেজ করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। হাসিবুল বলেন, আমার ভাইয়ের শরীরে জখম ছিল, বাম পায়ে দুই জায়গায় ও ডান পায়ে এক জায়গায় দাগ ছিল। তার শরীরে হাতুড়ির ও ইনজেকশনের দাগ ছিল বগলে। ঘাড় মটকিয়ে ভেঙে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। কিন্তু কর্নহার থানার এসআই নিতাই ফাঁকা জায়গায় সই নিয়ে পরে আমাদের বলে, এটা আত্মহত্যা। আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারেন না, এটি হত্যাকাণ্ড। থানা পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত না করে প্রভাবিত হয়ে আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা নেয়নি, গ্রেপ্তারও হয়নি খুনিরা। রিয়া টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়েছে।
অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। উল্টো আমাদের নামে থানায় জিডি করেছে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে হাসিবুল বলেন, সজিব হত্যার ঘটনায় খুনিদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, খুনিদের ফাঁসি চাই। সংবাদ সম্মেলনে সজিবের মা মুনজুরা বেগমও কান্নায় ভেঙে পড়েন। অশ্রুসিক্ত হয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলেটাকে কষ্ট দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিয়া খাতুনের সাথে তার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন তিনি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ঘটনাটির তদন্ত কর্মকর্তা কর্নহার থানার এসআই নিতাই কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। তাই ইউডি মামলা হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও আত্মহত্যা লেখা আছে। আমরাও তদন্ত করছি। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।