বাংলারজমিন
পুঠিয়ায় বিএনপিতে তোলপাড়
দুপুরে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, বিকালেই প্রধান বক্তা
পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবারশৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দুপুরে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত হয়েও বিকেলে দলীয় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স'ানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নেতা-কর্মীরা বলছেন, বহিষ্কৃত নেতাকে প্রধান বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে জায়গা দিয়ে জেলা বিএনপির নেতাদের অপমান করা হয়েছে এবং দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নেতাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
জানা যায়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গতকাল বুধবার (১১ জুন) পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে জেলা বিএনপি। একই দিন বিকেলে তিনি উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুনদের অন্তর্ভুক্তি ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। আর ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ২০০৮ ও ২০১৮ সনের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রাপ্ত ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল।
আরও জানা যায়, আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার একজন প্রধান শিক্ষককে স্কুলে যেতে না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া তাঁর ইন্ধনে বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে গত সোমবার দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগও উঠেছে। এ কারণে গতকাল আনোয়ারুল ও বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কার হয়েও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, কলমের পাওয়ার আছে, আমাকে বহিষ্কার করেছে। বহিষ্কারের পরও অনেক বড় প্রোগ্রাম করেছি। জনগণ যেখানে চাইবে, আমি সেখানেই আছি। আমি জনগণের সঙ্গে আছি।
ওই অনুষ্ঠানের অতিথি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল জানান, আনোয়রুলকে বহিষ্কারের বিষয়টি তিনি জানতেন না। তাই দলীয় কর্মসূচিতে নেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এটা তো বিয়ের দাওয়াত ছিল না যে তিনি চলে গেলেন। এটা রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে তিনি গিয়ে ঠিক করেননি। কারণ, তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় সাংগঠনিক ব্যবস'া নেওয়া হয়েছে। যারা প্রোগ্রাম করেছে, তারাও জানে। তাদের বোঝা উচিত ছিল, এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন' বহিষ্কৃত নেতাকে সঙ্গে নিয়ে প্রোগ্রাম করে তারা পার্টির সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছে। রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার বলেন, গতকাল বিকেলের বিএনপির অনুষ্ঠানের বিষয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম আমাদের অবগত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মাকে বহিষ্কার করা হয়েছে- বিষয়টি তিনি জানতেন না।