বাংলারজমিন
রংপুরে জামায়াত নেতা আজহারুল
বিচারের নামে জামায়াত নেতাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে
১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবারমানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাসপ্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, শকুনেরা এখনো হাত পেতে আছে দেশটা দখলের জন্য। তারা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে বিচারের নামে যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের পূর্ণাঙ্গ রায় বের হলে দেখতে পাবো তাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিচারের নামে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে দেশে আইনের শাসন থাকবে না। গতকাল দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জ ওএ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কারামুক্তি ও তারাগঞ্জ আগমন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আগে আদালত চলতো দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে। এখন সেই আদালত মুক্ত হয়েছে। তাই আমি আমার পক্ষে রায় পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার তো রায় হয়ে গিয়েছিল, ফাঁসি কার্যকর হবে। আল্লাহর রহমত আজ আমি মুক্ত, যেই বিচারকরা আমাকে সাজা দিয়েছেন তারা আজ কোথায়। তিনি বলেন, যে অপরাধে আমাকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছিল, আল্লাহর কসম আমি সেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমি আফসোস করি, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ গঠন করে সাক্ষী দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিচারপতিদের তো বিবেক থাকা দরকার। তারা বিবেক বিক্রি করেছিল আরেক জায়গায়। এই বিবেকহীন বিচারপতিরা যতদিন দেশে থাকবে, ততদিন দেশের মানুষ ন্যায়বিচার পাবে না।
তিনি আরও বলেন, মতিউর রহমান নিজামী, মাওলানা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা সবাইকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমাদের নেতা মীর কাশেম দেশের বাহিরে ছিলেন। অনেকে তাকে দেশে ফিরতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে দেশে ফিরেছিলেন। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। অথচ অমুকের বেটি দেশ ছেড়ে পালায় না বলেছিল। তার কর্তৃত্ব আজ চুরমার করে দিয়েছে আল্লাহ। যারা দেশ ছেড়ে পালায় তাদের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ না।
নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার বলেছেন এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচন দিক। মানুষ ১৫ বছর ভোট দিতে পারে নাই। এজন্য অনেকের মাঝে ভোটের প্রতি বিতৃষ্ণা আছে। আমি অনুরোধ করবো এবার ভোট বিপ্লব ঘটাতে হবে। আমরা যদি যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে ভুল করি তাহলে বিপদে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৯ সালে নির্বাচন করেছি। আপনারা চাননি বলে আমি এমপি হতে পারিনি। জামায়াতে ইসলামী জোর করে ভোট সেন্টার দখল, ভোটারদের টেনে নিয়ে গিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করতে চায় না। আগামী নির্বাচনে আমি বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। আমি কথা দিচ্ছি যদি আমি এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে হারামের কোনো টাকা আমার পেটে যাবে না। বিগত সময়েও আমি কোনো হারামের টাকা খাইনি। আমার সম্পদ নেই, তবু আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন। বিগত দিনের মতো ভবিষ্যতেও আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই
তারাগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর এসএম আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাহবুব হোসেন বেলাল, রংপুর মহানগর জামায়াতের আমীর এটিএম আজম খান, মিঠাপুকুর জামায়াতের আমীর গোলাম রব্বানীসহ অন্যরা। এরপর বিকালে এটিএম আজহারুল ইসলাম বদরগঞ্জের শাহাপুর মাঠে শোকরানা সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।