প্রথম পাতা
এ বিজয় আমেরিকার মুখে শক্তিশালী চপেটাঘাত
মানবজমিন ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার
ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশ্যে ভিডিও বার্তা দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। যুদ্ধে জয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে খামেনি বলেন, আমাদের বিজয় আমেরিকার মুখে কঠিন চপেটাঘাত। ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জয়ে আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাই। ইরানের জনগণের ঐক্যের প্রশংসা করেন খামেনি। বলেন, ৯ কোটি জনসংখ্যার একটি জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে। ইরান দেখিয়েছে প্রয়োজনে এই জাতির পক্ষ থেকে একটি কণ্ঠস্বর শোনা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করে খামেনি বলেন, এখন ইরানিদের আমেরিকান আধিপত্যের বিরুদ্ধে জয় উদ্যাপনের সময়। যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। কেননা, তারা বুঝতে পেরেছে যদি তারা না আসে তাহলে ইহুদিবাদীরা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন এক সময় জাতির উদ্দেশ্যে ভিডিও বার্তা দিলেন তিনি যখন তাকে নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোতে তার নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে নানা কথা চাউর হতে থাকে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে তার ভিডিও বার্তা রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের হুঁশিয়ারি দেন খামেনি। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও ইরানে হামলা চালানোর সাহস দেখায় তাহলে মার্কিন ঘাঁটিতে আবারও পাল্টা হামলা চালানো হবে। খামেনি আরও বলেন, বিষয় হলো, এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে ইরানের অ্যাক্সেস রয়েছে। যখন প্রয়োজন হবে ইরান তখনই এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটি ছোট কোনো ঘটনা নয়। এটি বড় ঘটনা। যদি ভবিষ্যতে কোনো হামলা হয় তাহলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে। এই যুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই অর্জন করতে পারেনি বলেও উল্লেখ করেন খামেনি। খামেনি বলেন, যা ঘটেছে তা অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এটা স্পষ্ট যে, তাকে এটা বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে। খামেনি আরও বলেন, যারা শুনেছেন তারা বলতে পারবেন যে, আমেরিকা সত্যকে বিকৃত করে অতিরিক্ত তথ্য দিচ্ছে। এ ছাড়া কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলাকে খাটো করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন খামেনি। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভিডিও বার্তায় খামেনি আরও বলেন, ইরানের শব্দভাণ্ডারে আত্মসমর্পণ নামক কোনো শব্দ নেই। তিনি বলেন, ট্রাম্প ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের কথা বলেছিলেন, তবে ইরানের মতো বৃহৎ দেশ এবং জাতির জন্য আত্মসমর্পণের আহ্বান অপমানের। তিনি আরও বলেন যে, ডনাল্ড ট্রাম্প দুর্ঘটনাক্রমে একটি সত্য প্রকাশ করেছেন, তা হলো আমেরিকানরা শুরু থেকেই ইরানবিরোধী। মার্কিন বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঘিরে ছিল না বলেও উল্লেখ করেছেন খামেনি। বলেছেন, ইরানকে আত্মসমর্পণ করানোই ছিল তাদের লক্ষ্য। তারা একদিন মানবাধিকার, অন্যদিন নারীর অধিকার এবং সর্বশেষ পারমাণবিক কর্মসূচিকে ইস্যু বানিয়েছে। এসবের পেছনে একটাই উদ্দেশ্য, সেটা হলো যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান আত্মসমর্পণ করুক।