অনলাইন
সহযোগীদের খবর
‘মব ভায়োলেন্স’: সরকার বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না
অনলাইন ডেস্ক
(৫ ঘন্টা আগে) ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘মব ভায়োলেন্স’: সরকার বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় আবারও আলোচনায় ‘মব ভায়োলেন্স’। রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে গত রোববার একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। জুতা দিয়ে নূরুল হুদাকে আঘাত ও ডিম নিক্ষেপের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলবদ্ধভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। ঘটনার পর সরকারকে বিবৃতি দিতে দেখা গেছে।
নূরুল হুদার ঘটনার পরও বিবৃতি দিয়েছে সরকার। গত রোববার রাতে সরকারের বিবৃতিতে ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ ও তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থী ও ফৌজদারি অপরাধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না।
ইংরেজি ‘মব’ শব্দের অর্থ ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা’। এ উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটালে তাকে মব ভায়োলেন্স বলা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি চাইলেই কি আরেকজনকে ধরে নিয়ে পুলিশে দিতে পারেন, শারীরিক বা মানসিকভাবে হেনস্তা করতে পারেন, লাঞ্ছিত করতে পারেন, কাউকে মারধর করতে পারেন কিংবা হুমকি দিতে পারেন? উত্তর হচ্ছে, পারেন না।
বিচারব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সমাজে-রাষ্ট্রে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা। বাংলাদেশে আইন আছে, আদালত আছে। সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।’
দেশের বিদ্যমান বিচারব্যবস্থায় কোনো নাগরিক যদি কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অন্যায় আচরণের শিকার হন, এর প্রতিকারের জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। বিচার করার একমাত্র এখতিয়ার আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদালতের।
ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কে গ্রেপ্তার করতে পারবেন, কে পারবেন না, সেটি বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ রয়েছে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী, পুলিশ ছাড়াও বেসরকারি ব্যক্তি আমলযোগ্য (গুরুতর) অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কেবল যখন কোনো ব্যক্তি এমন অপরাধ সংঘটিত করেন, যে অপরাধ জামিনযোগ্য নয়, সেই অপরাধ ওই ব্যক্তির সামনে সংঘটিত হয়, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন।
উচ্চ আদালতের একটি নজির [পিএলডি ১৯৫৩, লাহোর ২০৭ (ডিবি)] অনুযায়ী, একজন বেসরকারি ব্যক্তি কেবল অপরাধী বলে ঘোষিত কোনো ব্যক্তিকে অথবা তাঁর সামনে সংঘটিত জামিন অযোগ্য আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন।
আইনজীবীরা বলছেন, আটক করার পর সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে হবে। তাঁকে হেনস্তা, লাঞ্ছিত করার কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধান, ফৌজদারি কার্যবিধিসহ অন্যান্য আইনের বিধান অনুযায়ী কাউকে আটক করার নামে হেনস্তা করা, জুতার মালা পরানো কিংবা শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা অপরাধ।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী অবশ্য এ-ও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে দিনের ভোট রাতে করা, খুন করা, গুম করা, রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য গায়েবি মামলা দেওয়া, জুলাই-আগস্টে নির্বিচার মানুষকে হত্যা করার ঘটনায় জনগণ বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কেউ কেউ ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগীদের হাতের কাছে পাওয়ার পর অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকেও বারবার বলা হচ্ছে, আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। বিচার করার একমাত্র এখতিয়ার আদালতের।’
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ১০ মাসেও মব ভায়োলেন্স ঠেকাতে না পারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) হিসাবে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম সাত মাসে দেশে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৯ জন নিহত ও ৭৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে তোফাজ্জল হোসেন (৩২) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। পরে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। তারপরও মব বন্ধ হয়নি। ২৯ এপ্রিল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে পোশাক ছিঁড়ে পুলিশে সোপর্দ করেন একদল লোক। এর আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৪ মার্চ ছিনতাইকারী তকমা দিয়ে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর করেন একদল ব্যক্তি।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষকে জোর করে পদত্যাগ করানো, মানুষের বাসায় দল বেধে হেনস্তা ও মালামাল নিয়ে যাওয়া, ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেয়েদের ফুটবল খেলা বন্ধ করে দেওয়া, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হেনস্তাসহ নানা ঘটনা ঘটেছে।
সরকার অবশ্য বারবার মব ভায়োলেন্স বন্ধ করার কথা বলছে। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাঁকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’
মামলা হলেই যে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না, সে বিষয়েও সরকারের স্পষ্ট অবস্থান আছে। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, সরকার সবাইকে আশ্বস্ত করতে চায়, মামলা হওয়ার অর্থ যত্রতত্র গ্রেপ্তার নয়। এসব মামলার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একদল ব্যক্তি মামলার আসামিকে ধরে হেনস্তা করছেন। তারপর পুলিশে দিচ্ছেন। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে কোনো তদন্ত ছাড়াই আসামিকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনা ও চাপের মুখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
সাম্প্রতিক সময়ে মব তৈরির কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, পুলিশ শক্ত অবস্থান নেয় না। আবার দু-একটি ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো কোনো কর্মকর্তাকে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায়।
যেমন গত মে মাসে ধানমন্ডিতে এক ব্যবসায়ীর বাসার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক নেতার (পরে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) নেতৃত্বে মব তৈরি করা হয়। তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের ওপর চাপ দেন। যদিও ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা চাপের মুখেও ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেননি; বরং মব সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের থানায় নিয়ে যান। পরে তাঁকে পুরস্কৃত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করা ও ডিম ছুড়ে মারার সময় সেখানে পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে। মবের হাত থেকে আসামিকে রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সোমবার সকালে গাজীপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ওনার (নূরুল হুদা) ওপর হামলা করা হয়েছে। এটার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে দেখব, কারা জড়িত। এর সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর সঙ্গে (সাবেক সিইসি নূরুল হুদা) যেটা হয়েছে, মানে গলায় এটা-সেটা পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তা করা নিয়ে ফেসবুকেও সমালোচনা হচ্ছে। হেনস্তার নিন্দা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানও। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব নুরুল হুদা মব ভায়োলেন্সের শিকার হয়েছেন। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ তিনি আরও লেখেন, ‘হেনস্তাকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণ অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।’
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘কথিত আন্দোলন আর মবের মহড়া আমরা এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করব। রাষ্ট্রকে অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা হলে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।’
যদিও মব দমনে সরকারের জোরালো, দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, মব কবে নিয়ন্ত্রিত হবে, নাকি মবের রাজত্ব চলতেই থাকবে।
‘সরকার বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না’
২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করে রোববার ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করে বিএনপি। নূরুল হুদার সময় ২০১৮ সালে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল, সেটি রাতের ভোট নামে পরিচিত। মামলায় আদালতে তাঁর বিচার হবে। কিন্তু তাঁকে হেনস্তা করা বেআইনি।
যাঁরা মবের ঘটনায় জড়িত, তাঁদের শনাক্ত করা কঠিন কিছু নয়। নূরুল হুদার ঘটনায় ভিডিওতে তাঁদের দেখা গেছে। গতকাল বিকেলে এই বিশ্লেষণ লেখা পর্যন্ত তাঁদের কাউকে পুলিশ আটক করেনি। পুলিশ গতকাল রাতে জানিয়েছে, ঘটনাটিতে মামলা হয়নি।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরানোর ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। মধ্যযুগে এ ধরনের ঘটনা ঘটত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের সামনে কীভাবে একজন ব্যক্তির গলায় জুতার মালা পরানো হলো? পুলিশের ভূমিকা সেখানে কী ছিল? এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি?
এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আরও বলেন, আগে সালিসের নামে কাউকে জুতার মালা পরানোর ঘটনা দেখা যেত। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালত কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, কারও সঙ্গে এ ধরনের আচরণ সংবিধান পরিপন্থী। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকার কেবল বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না। এভাবে যাঁরা হেনস্তা করে যাচ্ছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় মবের ঘটনা বেড়েই চলেছে। সারা হোসেন মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিত, তাহলে এত বেশি ঘটনা ঘটত না।
যুগান্তর
‘জোট গঠনে নানা হিসাব, বিভক্ত ইসলামি দল’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে তৎপরতা বেড়েছে ইসলামি দলগুলোর। নির্বাচনি সমঝোতা বা জোট গঠন নিয়ে তারা নানা হিসাবনিকাশ কষছে। তবে এ নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দলগুলো। এখন পর্যন্ত তিনটি পৃথক জোট বা নির্বাচনি সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। একটি অংশ ব্যালটে ইসলামপন্থি দলগুলোকে একসঙ্গে চায়। এ নিয়ে পর্দার আড়ালে চলছে নানা তৎপরতা।
রোববার বা সোমবার ৫টি ইসলামি দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পৃথকভাবে জোট করার বিষয়ে কথা চলছে ইসলাপন্থি অন্য ৪টি দলের। আবার ইসলামি দলগুলোকে এক ছাতার নিচে চায় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত নেতারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে সবকিছুই এখনো আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে আছে। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হলে তা দৃশ্যমান হবে। ইসলামপন্থি দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত মজলিস-এ পাঁচটি দল ঐক্যের কাছাকাছি। এসব দলের লিয়াজোঁ কমিটি রয়েছে। কাল বুধবার তাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের কারণে তা স্থগিত করা হয়। বৈঠকটি আগামী রোববার বা সোমবার হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বৈঠকে একক প্রার্থী ঠিক করার কৌশল নির্ধারণ করা হতে পারে। এছাড়া আরও যেসব দল বাইরে আছে, তাদের সঙ্গেও ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। উদ্দেশ্য জোটকে বড় করা। এছাড়া ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাকের পার্টি-এ চার দল মিলে একটি জোট করার পরিকল্পনা করছে। দলগুলোর নেতারা আরও সমমনা দলকে তাদের সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন জবাব ইরানের’। খবরে বলা হয়, কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানায়, ইরাক ও কাতারের সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান। সংবাদ সংস্থা তাসনিম মতে, কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ‘বিশারাত ফাতেহ’ এবং ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ’ কোড নামে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। এদিকে কাতারে মার্কিন আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছে। জবাবে ইরান বলেছে, এই হামলা ভ্রাতৃপ্রতিম কাতারের বিরুদ্ধে নয়।
কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার কথা নিশ্চিত করেছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কোরও (আইআরজিসি)। এই ঘাঁটিতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরানের সামরিক বাহিনী।
সমকাল
‘ডেঙ্গু: হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ’-এটি দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। এসব রোগীর বড় অংশ আসছে ঢাকার বাইরে থেকে। ঢাকার বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৮৫ জন চিকিৎসাধীন। বাড়তি রোগীর সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে ৩৯২ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছর ৮ হাজার ১৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে জুনের ২৩ দিনে সেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৮০৫ জন। মে মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৭৭৩ জন। সে হিসাবে আগের মাসের তুলনায় জুনের ২৩ দিনেই রোগী হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। এদিকে জানুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে জুনের প্রথম ২৩ দিনে ১১ জনের মৃত্যু হয়।
জুনের ৩ হাজার ৮০৫ রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৭১ শতাংশ রোগী মিলেছে বরিশাল বিভাগে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরে ১৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ শতাংশ এবং ঢাকা মহানগরের বাইরে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ রোগী পাওয়া গেছে। বাকি ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ অন্য বিভাগে।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘মবের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার তাগিদ’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে মব সৃষ্টি করে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারাও মবের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন। নূরুল হুদাকে হেনস্থাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও। হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোরালো দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে ঐ ঘটনায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হেনস্থাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, দোষীদের পেলে আমাদের জানাবেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিবেন।
গতকাল সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ওনার ওপর হামলা করা হয়েছে। এটার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে দেখা হবে এই ঘটনায় কারা জড়িত। এর সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকেন, তবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
নয়া দিগন্ত
‘৫০ আসনে শরিকদের ছাড় দেবে বিএনপি’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী নির্বাচনে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের সর্বোচ্চ অর্ধশত আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। কোন দলকে কতটি আসন দেয়া যায়, তা নিয়ে এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। দলটি এক্ষেত্রে ‘বিজয়ী হতে সক্ষম’ এবং ‘গ্রহণযোগ্যতা’ রয়েছে, শরীকদের মধ্যে এমন প্রার্থীদের গুরুত্ব দেবে। ঢালাওভাবে কারো হাতে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক তুলে দিয়ে আসন হারাতে চায় না বিএনপি। জানা গেছে, নবগঠিত দল এনসিপিকেও বিএনপি নির্বাচনে জোটে টানতে পারে। এমনটি হলে এ দলটির শীর্ষ নেতাদেরও বেশ কয়েকটি আসনে ছাড় দেবে তারা।
লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে ফলপ্রসূ বৈঠকের পর রাজনীতি ধীরে ধীরে নির্বাচনমুখী হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন দল রাজনীতির মাঠে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছে। চলছে প্রচার-প্রচারণা। জানা গেছে, বিএনপিও তাদের নির্বাচনী জোট গঠন বা জোটের রূপরেখা কেমন হবে, সেটি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। বিএনপির জোটসঙ্গী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও নিজেদের মতো করে চিন্তাভাবনা করছেন। বিএনপি তাদেরকে কত আসন ছাড় দিবে, কে কোথায় নির্বাচন করবেন, তা নিয়ে তারা এক ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। জোটের শরিক দলগুলো এখনই বিএনপির কাছ থেকে নির্বাচনী জোট গঠনের খুব স্পষ্ট বার্তা আশা করছে। একইসাথে এটি নিয়ে আলোচনাও শুরু করতে চায় তারা।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দল ও শরীকদের মাঝে চূড়ান্তকরণের কাজ এখনো শুরু না করলেও নির্বাচনী জোট নিয়ে ভাবছে বিএনপি। দলটি আগামীতে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে পারে। আগামী দু-এক মাসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ জোটে ছিল কিন্তু আগামীতে এককভাবে নির্বাচন করবে, যারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা বাদে অন্যদের নির্বাচনী জোটে টানার চেষ্টা করবে দলটি। এ ছাড়া যুগপতের বাইরে থাকা অন্যান্য দলকেও গুরুত্ব দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে। এনসিপি আগ্রহ প্রকাশ করলে তাদেরকেও নির্বাচনী জোটে নিতে পারে বিএনপি। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা মিত্রদের সাথে নিয়ে নির্বাচন করবে এবং তাদেরকে সরকারেও রাখবে।
আজকের পত্রিকা
দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর ‘বিদেশিদের নজর নির্বাচনের দিকে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডন বৈঠকের পর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশও বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। তাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নজরও নির্বাচনকেন্দ্রিক। তাঁরা সরকারের উপদেষ্টা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে জানার-বোঝার চেষ্টা করছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। সরকার আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বললেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানায়। নির্বাচনের সময় নিয়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ্য হয়।
পরে লন্ডনে ১৩ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে শর্ত সাপেক্ষে আগামী বছর পবিত্র রমজান মাসের আগে (ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ) জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা জানানো হয়। এর পর থেকে আলোচনা হয়ে উঠেছে নির্বাচনকেন্দ্রিক। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ তাদের ঢাকার মিশনের মাধ্যমে পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছে। বিদেশি কূটনীতিকেরা আগামী নির্বাচনের সময়, ভোট এবং ওই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের ধরন ও নীতি জানতে- বুঝতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। কিছু দেশ ও সংস্থা শুধু স্থানীয় মিশনের ওপর পুরোপুরি নির্ভর না করে পরিস্থিতি আগাম ও ঠিকঠাক বুঝতে আগে ঢাকায় কাজ করে যাওয়া ব্যক্তিদের পাঠাচ্ছে।
দেশ রূপান্তর
‘সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে সংকট বাড়বে তেল-গ্যাসের’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইরান। বিশ্ব জুড়ে তেল-গ্যাস সরবরাহের জন্য এই নৌরুটটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে জ্বালানির বাজার। যার প্রভাব পড়বে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এরই মধ্যে ইরানের হুমকির পর তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে। গতকাল সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮১ দশমিক ৪০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে দাম ১২০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট গবেষণা সংস্থাগুলো।
ইরান ও ওমানের মধ্যে অবস্থিত একটা চ্যানেল বা খাল হলো হরমুজ প্রণালি। এর প্রবেশ এবং প্রস্থানপথ প্রায় ৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত। মধ্যবর্তী স্থানে এর সবচেয়ে সংকীর্ণ অংশ প্রায় ৪০ কিলোমিটার প্রশস্ত যেখান দিয়ে পৃথিবীর প্রায় ২০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও এলপিজি পারাপার হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করা অনেকটা পারমাণবিক অস্ত্র রাখার মতোই। একে ‘প্রতিরোধ ক্ষমতা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি বন্ধ হলে আরও গুরুতর প্রভাব হিসেবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রথম পাতার খরব ‘IMF approves $1.3b in loans’ অর্থাৎ ‘১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন আইএমএফের’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্য ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ড। ফলে চলতি সপ্তাহেই এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আইএমএফ’র ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটি আইএমএফ’র প্রথম অর্থ ছাড়। চতুর্থ কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়ার কথা ছিল। তবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার শর্ত পূরণ করতে না পারায় বিলম্বিত হয়।
কয়েক মাস ধরে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর দু’টি কিস্তি একইসঙ্গে ছাড় দিতে সম্মত হলো আইএমএফ।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খরব ‘বেপরোয়া মব সন্ত্রাসে উৎকণ্ঠা’। খবরে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ মব সৃষ্টির মাধ্যমে হেনস্তা করার পর এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সরকার ও সরকারের বাইরে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ার পরপরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক ব্যক্তিত্ব, মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।
রাতেই অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিৃবতি দিয়ে বলা হয়, ‘মব’ সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সবাইকে চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গতকাল সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গাজীপুর এক অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন, মব জাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশের ভূমিকা তদন্ত করা হবে।
গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরায় সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি সমবেত হয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করে এবং পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ওইদিন রাতেই কানাডা প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক সওগাত আলী সাগর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে প্রশ্ন তুলেন, ‘কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে আইনানুগভাবে তার বিচার হবে। কিন্তু মব এট্টোসিটির নামে এই জংলিপনা কেন?’