ঢাকা, ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট : ভারত বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং গুপ্তচরবৃত্তির অন্যতম অপরাধী

মানবজমিন ডিজিটাল

(৭ ঘন্টা আগে) ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪:৫৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:০৭ অপরাহ্ন

mzamin

কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার একটি নতুন রিপোর্টে ভারতকে বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং গুপ্তচরবৃত্তির অন্যতম অপরাধীদের তালিকায় রাখা হয়েছে। এদিকে কানাডা এবং ভারত এই সপ্তাহের জি-৭ বৈঠকে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তার মধ্যেই প্রকাশ পেলো কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (CSIS)-এর রিপোর্ট। নতুন এই বার্ষিক পাবলিক রিপোর্টে ভারত সরকারের সাথে ২০২৩ সালে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্রকে খালিস্তান আন্দোলনের বিরুদ্ধে ভারতের দমন প্রচেষ্টা এবং উত্তর আমেরিকার ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করার স্পষ্ট অভিপ্রায় বলে অভিহিত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, কানাডাকে ভারত সরকারের বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেবল জাতিগত, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেই নয় বরং কানাডার রাজনৈতিক ক্ষেত্রকেও সজাগ থাকতে হবে। 

মঙ্গলবার আলবার্টার কানানাস্কিসে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ঘোষণা করেন যে, উভয় দেশেই হাইকমিশনারদের পুনর্বহাল করা হবে। 

২০২৩ সালে নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের পর কানাডা এবং ভারত উভয়ই কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছিল। যদিও নয়াদিল্লি এর সঙ্গে কোনোরকম জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। যখন সাংবাদিকরা নতুন CSIS রিপোর্টের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন তখন, কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রী গ্যারি আনন্দসাঙ্গারী অটোয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই, ভারত সরকারের সাথে আমাদের কঠিন আলোচনা হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। এটা একেবারে স্পষ্ট যে সরকার হিসেবে, আমরা কানাডায় বিদেশিদের যেকোনো হস্তক্ষেপের নিন্দা জানাই। আপনারা জানেন যে, RCMP তার চলমান তদন্ত সম্পন্ন করেছে।’

সাবেক CSIS গোয়েন্দা কর্মকর্তা ড্যান স্ট্যান্টন CTV নিউজকে বলেন, ‘আমি মনে করি এক পর্যায়ে আমাদের আবার সংলাপে ফিরে যেতে হবে। আমাদের কূটনীতিকদের ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং বিপরীত ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। আমি মনে করি না যে, জি-৭ এই আলোচনার জন্য উপযুক্ত স্থান ছিল।’

স্ট্যান্টন আশা করেন যে, কানাডিয়ানরা বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পর্কে CSIS যে সতর্কবার্তা দিয়েছে তাতে মনোযোগ দেবেন। সাবেক CSIS গোয়েন্দা কর্মকর্তার কথায়, ‘আমি মনে করি সরকার অনিচ্ছাকৃতভাবে যে বার্তা পাঠিয়েছে তা বেশ বিভ্রান্তিকর। একদিকে, আমরা আন্তর্জাতিক দমনকে গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি। অন্যদিকে, আমরা মানুষকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তাদের লাল গালিচায় অভ্যর্থনা জানাচ্ছি এবং এমন ভাব দেখাচ্ছি যেন সবকিছু ঠিকঠাক আছে।’

কানাডার বিশ্ব শিখ সংস্থার বলপ্রীত সিং বলেন, ‘সংলাপ অবশ্যই দরকার, তবে এটি নীতিগত হতে হবে।’

তার মতে, নতুন হাইকমিশনার নিয়োগের ঘোষণা অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করে। সিং বলেন, ‘যতক্ষণ না জবাবদিহিতা এবং কানাডিয়ান আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে মিলিত হয়ে তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি না পাওয়া যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি মনে করি যে কোনও সংলাপ প্রয়োজনীয়।’

জাস্টিন ট্রুডোর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোডি থমাস বলেছেন, ‘নিজ্জার হত্যাকাণ্ডকে ভারত সরকার যতক্ষণ না স্বীকৃতি দিচ্ছে, ততক্ষণ ‘অবিশ্বাস’ বিদ্যমান থাকবে। আমি মনে করি আস্থার স্তর পুনর্নির্মাণে বছরের পর বছর সময় লাগবে, তবে এটি কোনো একটা জায়গা থেকে শুরু করতে হবে।’

তিনি জি-৭ দ্বিপাক্ষিক বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন। থমাস মনে করেন, ‘কানাডায় ভারত যে ক্ষতি করেছে তা বুঝতে পারবে, এই প্রত্যাশা থাকাটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।’

সিএসআইএসের প্রতিবেদনে চীন, রাশিয়া, ইরান এবং পাকিস্তানকেও  বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং গুপ্তচরবৃত্তির প্রধান অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সূত্র : সিটিভি নিউজ

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status