ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রথম পাতা

তরীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

স্টাফ রিপোর্টার
১১ জুন ২০২৫, বুধবার
mzamin

ব্যাংকার ও সাবেক টেলিভিশন সংবাদ পাঠিকা ছাফিনা আহমেদ তরীর (৩০) মৃত্যু রহস্য কাটছেই না। নিজ বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধারের পর কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে এই প্রশ্নের সমাধান যেন কিছুতেই মিলছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তসংশ্লিষ্টরা এখনো এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। শুধুমাত্র তরীর মায়ের দেয়া অভিযোগ নিয়ে কাজ করছেন। পরিবারের সদস্যরাও তরী আত্মহত্যা করতে পারে বলে ভাবছেন না। তাদের ধারণা এই মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তরীর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটি বলা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে তার মৃত্যুর সম্ভাব্য কিছু ক্লু খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এসব ক্লু নিয়ে কাজ করছেন পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি টিম। এ ছাড়া এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ফরেনসিক বিভাগ কবে দিচ্ছে সেই অপেক্ষায়ও থাকতে হচ্ছে স্বজন ও তদন্তসংশ্লিষ্টদের। 

পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে এক সময় চ্যানেল ২৪ ও আরটিভিতে সংবাদ পাঠ করতেন তরী। তবে কিছুদিন ধরে তিনি পুরোপুরি ব্যাংকের চাকরিতে মনোযোগ দিয়েছিলেন। তরীর বাবা-মা দু’জন দীর্ঘদিন ধরে আলাদা থাকেন। তার বাবা তিনটি বিয়ে করেছেন। তারমধ্যে তরীর মা বড়। বাবা অন্য স্ত্রীর সঙ্গে আলাদা থাকলেও মাসে কিছু খরচ তরীদের দিতেন। কিন্তু পরিবারের বড় মেয়ে হওয়াতে তরীর ওপরও কিছুটা পরিবারের চাপ ছিল। মা ও এক বোনকে নিয়ে নিউ ইস্কাটনের ২১ নম্বর বাসার বি-৬ ফ্ল্যাটে থাকতেন। ঈদের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তরী স্বাভাবিকভাবে বাসায় ফিরেন। রাতে তিনি তার রুমেই ঘুমান। কিন্তু পরেরদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত তার সাড়া শব্দ না পেয়ে তার মা গিয়ে দেখেন তরীর নাকে মুখে ফেনা ও সে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তাকে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তার পরিবার পুলিশকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। মুগদা হাসপাতাল থেকে পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্ত করে সোমবার। 

সূত্রগুলো বলছে, পারিবারিক কারণে ছোটবেলা থেকে তরী মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন। ব্যক্তিগত ও পরিবারের খরচ, দুই বোনের লেখাপড়াসহ সবকিছু নিয়ে চিন্তায় থাকতেন। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি অ্যালকোহলসহ অন্যান্য মাদকদ্রকব্য সেবন শুরু করেন। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ঘটনার রাতে অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে তরীর মৃত্যু হতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি বিষ জাতীয় কিছু খেয়েছেন কিনা সেটিও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। 
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু বলেন, আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। কিছু ক্লু নিয়ে কাজ করছি। এই মৃত্যুর পেছনে কি কারণ থাকতে পারে সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া তার বিষয়ে অন্যান্য তথ্যও খুঁজে বের করছি। আমরা জানতে পেরেছি ২০১৭ সালে এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। এ ছাড়া তার সঙ্গে আর কোনো ছেলের সম্পর্ক ছিল কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি তরী প্রচুর অ্যালকোহল সেবন করতেন। নিজ বাসায়ও তিনি অ্যালকোহল নিতেন। অতিরিক্ত অ্যালকোহলের কারণেও মানুষের মৃত্যু হয়।  

পাঠকের মতামত

অ্যালকোহল বা যে কোনো নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা ইসলামে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করলে এই নারীর আজ এই পরিণতি হতো না। অতএব সময় থাকতে সবাই ইসলামে ফিরে আসুন।

মন্তব্যকারী
১১ জুন ২০২৫, বুধবার, ১২:১৩ অপরাহ্ন

বাবা মায়ের বিচ্ছেদ ঠিক এভাবে সন্তানের জীবনের পথ পরিক্রমণ দুরূহ হয়ে উঠে !

Naaz Islam
১১ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status