দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ

নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আগাম নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকরা। সামরিক আইন জারির চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর পার্লামেন্ট অভিশংসনের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অপসারণ করে।  এর জেরে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে যে অস্থিরতা চলছে, তার অবসান ঘটাতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকেরা। ভোটে যেই নির্বাচিত হন, তাকে দেশ পরিচালনায় কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্টকে একদিকে সামরিক শাসনের প্রচেষ্টায় গভীরভাবে বিচ্ছিন্ন ও আঘাতপ্রাপ্ত সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, অন্যদিকে সামাল দিতে হবে রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিকে।

স্থানীয় সময় আজ সকাল ছয়টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, রাত আটটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এবার ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজারের বেশি ভোটারের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আগাম ভোট দিয়েছেন।

দেশটির নির্বাচন কমিশনের বরাতে রয়টার্স জানায়, আজ স্থানীয় সময় সকাল ১১টা পর্যন্ত ৮১ লাখ নাগরিক ভোট দিয়েছেন, যা মোট ভোটারের ১৮ শতাংশের একটু বেশি। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।নির্বাচন পূর্ব জরিপগুলোতে বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী লি জে মিয়ং জনসমর্থনে এগিয়ে আছেন বলে দেখা গেছে। তার পরেই আছেন ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির প্রার্থী কিম মুন সু, তিনি ক্ষমতা হারানো ইউনের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।

প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী উদারপন্থী ডেমোক্রেটিক পার্টির লি জে-মিয়ং এবং রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির কিম মুন-সু—উভয়েই দেশে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাদের মতে, নতুন একটি গণতান্ত্রিক দেশ ও শিল্প শক্তিতে রূপান্তরের সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক মডেল গড়ে উঠেছিল, তা এখন আর দেশের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। রাত আটটায় ভোট গ্রহণ শেষে তিনটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালিত বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ করা হবে। আর ব্যালট প্রথমে মেশিনে বাছাই ও গণনা করা হবে, এরপর নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কর্মকর্তারা নিজেদের হাতে তিনবার তা যাচাই করবেন। সব মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কে বসছেন দেশটির ক্ষমতার মসনদে? কোন দলের হাতে যাচ্ছে গোটা দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতা? - সে অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। 

ভোটারদের অনেকেই বিবিসিকে জানিয়েছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটিয়ে স্থিতিশীলতা চান তারা।

সূত্র : বিবিসি