ঢাকা, ১ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

জেলে পল্লীতে নিরব কান্না

হাসান পিন্টু, লালমোহন (ভোলা) থেকে

(১ বছর আগে) ১৬ আগস্ট ২০২২, মঙ্গলবার, ১:২৮ অপরাহ্ন

mzamin

একদিকে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। অন্যদিকে নদীতে মিলছে না কাক্সিক্ষত ইলিশ। এনিয়ে দার-দেনায় জড়িয়ে পড়ছে ভোলার লালমোহন উপজেলার জেলেরা। যার ফলে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে উপজেলার জেলে পল্লীগুলোতে। এ যেন জেলেদের নীরব কান্না! উপজেলা মৎস্য অফিসের হিসেবে লালমোহনে মোট নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে ২৩১৭৮ জন। তবে এর প্রকৃত সংখ্যা আরও অধিক।
উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের বাত্তিরখাল এলাকার জেলে শহিজল হক বলেন, নদীতে তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। সাগরে কিছু ইলিশ থাকলেও তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সাগরে গিয়ে যে ইলিশ পাওয়া যায় তাতে প্রতিবার ফিরে দেখা যায় লাভের চাইতে লোকসানের পরিমাণই বেশি। কাক্সিক্ষত ইলিশ না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্দশায় রয়েছি। ৪ টি এনজিওতে ঋণ রয়েছে। মাস শেষে ঠিকমত এনজিওর কিস্তি দিতে পারছি না।

বাত্তিরখাল এলাকার একটি মাছ ধরা ট্রলারের মাঝি মো. শাহেআলম বলেন, নদী বা সাগরে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে ৭ দিনের জন্য একটি ট্রলারে অন্তত ১৫-১৬ জন জেলে বের হন।

বিজ্ঞাপন
এই সাতদিনের জন্য ট্রলারে খরচের পরিমাণ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। তবে মাছ শিকার শেষে তীরে ফিরে দেখা যায় ৫০ হাজার টাকার মাছও পাওয়া যায়নি। এজন্য অনেক জেলে এখন নদীতে যেতে চাচ্ছে না।

উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করা জেলে মো. ওয়াসিম জানান, বর্তমানে তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। তার ওপরে যে হারে জ¦ালানী তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে নদী থেকে ফিরে দেখা যায় লাভের চাইতে লোকসান বেশি। এ অবস্থায় জেলে পেশায় এখন টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। মনে হচ্ছে ঋণের দায়ে গ্রাম ছেড়ে পালাতে হবে। তাই আমাদের দাবী জেলেদের জন্য সরকারি যে বরাদ্দ রয়েছে, তা যেন আরও বৃদ্ধি করা হয়। এবং সুদবিহীন সরকারিভাবে যেন ঋণের ব্যবস্থা করা হয়।

উপজেলার নাজিরপুর মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো. মনির হাওলাদার জানান, নদীতে মাছ কম থাকার কারণে জেলেরা আমাদের থেকে যে টাকা নিয়েছে তাও ঠিকমত শোধ করতে পারছে না। এতে করে যেমন জেলেদের সমস্যা হচ্ছে, তেমনি আমাদেরও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলতে সমস্যা হচ্ছে। রীতিমত সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।

নদীতে মাছ কম পাওয়ার বিষয়ে উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মো. তানভির আহমেদ বলেন, নদীর মোহনা অঞ্চলে পলি জমার কারণে নদীতে গভীরতা কমে গেছে। যার জন্য নদীতে স্রোতও কমেছে। যার ফলে বর্তমানে যে পরিমান মাছ নদীতে আসার কথা তা আসতে পারছে না। যার জন্যই নদীতে মাছ স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। নদীর এসব স্থান যদি ড্রেজিং করা হয় তাহলেই নদীতে আগের মত মাছ পাওয়া যাবে।

মেরিন ফিশারিজের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, তবুও আশা করছি সেপ্টেম্বরের প্রথম দিক থেকে নদীতে ইলিশের সংখ্যা আরও বাড়বে। তখন হয়তো জেলেরা তাদের কাক্সিক্ষত ইলিশ পাবে।

 

 

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

ভিসা নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী/ ছেলের ভিসা বাতিল করলে করবে

এমপি বাহারের আবেদনে সাড়া মেলেনি/ ঘরের বউকে ঘরে তুলতে বললেন আদালত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status