ঢাকা, ২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সহযোগীদের খবর

শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, নেই পরিকল্পিত সমাধান

অনলাইন ডেস্ক

(১ সপ্তাহ আগে) ২১ মে ২০২৫, বুধবার, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:৩৫ অপরাহ্ন

mzamin

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, নেই পরিকল্পিত সমাধান’। খবরে বলা হয়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একের পর এক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। কোথাও উপাচার্য অপসারণ, কোথাও নাম পরিবর্তনের দাবি, আবার কোথাও আবাসন-সংকটের মতো বিষয় নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন থামে তো আরেকটিতে শুরু হয়। বেশ কিছু দিন ধরে অন্তত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনাস্থাসহ ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম, তৈরি হচ্ছে প্রশাসনিক জটিলতাও। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার এমন সংকট নিরসনে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধীরগতি দেখাচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কেবল কোনো ঘটনা ঘটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ১১টি কমিশন গঠন করেছে। অথচ শিক্ষা খাত নিয়ে সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়নি। শিক্ষাবিদদের পরামর্শ, কোনো ঘটনা ঘটলেই কেবল প্রতিক্রিয়া নয়, সামগ্রিকভাবে শিক্ষা নিয়ে পরিকল্পনা করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। গত মার্চে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের সঙ্গে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, সে জন্য টিএসসি-কেন্দ্রিক কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে।

উচ্চশিক্ষায় ধাক্কা

বর্তমানে দেশে ৫১টি সরকারি ও ৪টি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চালু আছে। গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগ দেওয়া প্রায় সব কটি স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ শীর্ষ পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেন। এ কারণে প্রথমে এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করাই ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। পরে ধীরে ধীরে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন উপাচার্য দেয়।

উপাচার্য নিয়োগের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসতে শুরু করে। তবে এরই মধ্যে আবারও শুরু হয় অস্থিরতা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যসহ শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে সরকারকে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দেয় সরকার। এরপর ১ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ওই সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার অভিযোগে শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। কর্মবিরতির পর এখন প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকেও বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। এসব কারণে তিন মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে প্রকৌশল শিক্ষার এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে ৭ হাজার।

নিয়োগের কয়েক মাসের মাথায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শীর্ষ তিনটি পদে থাকা অধ্যাপকদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৩ মে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে সরিয়ে দেয় সরকার। এখন সেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলমকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। একজন শিক্ষককে পুনর্বহাল এবং রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ২৭ এপ্রিল থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে উপাচার্য অপসারণেও দাবি ওঠে। এর ফলে কয়েক দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জেরে আন্দোলনে নেমেছে সংগঠনটি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেছে সংগঠনটি।

আবাসন-সংকটের সমাধানসহ (৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্তির দাবিসহ) কয়েকটি দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টানা তিন দিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ মে সরকার দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

দুই দশক আগে কলেজ থেকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ছাত্রদের জন্য এখনো কোনো আবাসিক হল তৈরি হয়নি। ছাত্রীদের জন্য শুধু একটি আবাসিক হল থাকলেও সেটিও চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।

সরকারের একজন নীতিনির্ধারণ প্রথম আলোকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার পর অনেক সময় চলে গেলেও শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি অবহেলা করা হয়েছে। এ কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আছে।

এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসেও দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা; কিন্তু বাস্তবতা হলো সমস্যার সমাধান করা হয়নি।

অবশ্য কমবেশি আবাসন-সংকট আছে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই। ২০২২ সালের তথ্য নিয়ে করা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের অর্ধশত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ-মাদ্রাসা ছাড়া) অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ শতাংশের আবাসিক সুবিধা নেই। বাকি ৪০ শতাংশের এই সুবিধা আছে।

নাম পরিবর্তন নিয়ে চার মাস ধরে অচলাবস্থা

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আন্দোলন করছেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। ২০১৬ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’। অন্তর্বর্তী সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাসে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করেছে। যদিও প্রথমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের পর থেকেই ক্ষুব্ধ হন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা প্রথমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দাবি আদায়ে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, ‘রেল ব্লকেড’, ‘শাটডাউন’সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এর মধ্যে আশ্বাসের ভিত্তিতে কখনো কখনো কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও এখনো দাবি পূরণ হয়নি। তাঁরা এখন চারটি নাম প্রস্তাব করে তার মধ্য থেকে যেকোনো একটি চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত চারটি নাম হলো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি।

এই দাবিতে সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনেও তারা কর্মসূচি পালন করেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মো. ফখরুল হাসান ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ওঠার আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে।

অনেকটা অবহেলা ও গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন ইউজিসির কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। এ কারণে প্রায় চার মাস ধরে একধরনের অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় পৌনে ৫০০ শিক্ষার্থী।

গত জানুয়ারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। একই দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রশাসনিক ভবন অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছিল।

পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে আন্দোলন হলে দ্রুতই দাবি পূরণ হচ্ছে; কিন্তু তার আগে সংকটগুলো চিহ্নিত করে তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

সাত কলেজ নিয়েও আছে সংকট

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির তত্ত্বাবধানে সমন্বিত কাঠামোর অধীন চলবে ঢাকার সরকারি সাত কলেজের কার্যক্রম। অন্তর্বর্তী এই ব্যবস্থায় প্রশাসক নিয়োগ না দেওয়ার কারণে প্রায় দুই মাস ধরে কাজটি আটকে ছিল। এ নিয়ে গত শনিবার আবারও আন্দোলনের হুমকি দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এ রকম পরিস্থিতিতে ঢাকা কলেজের অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসকে প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ লক্ষ্যে তাঁকে আগামী দুই বছরের জন্য ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে গত রোববারই প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

অভিযোগ উঠেছে, এই সিদ্ধান্ত অনেক আগেই হয়েছিল; কিন্তু প্রশাসক পদে মিরপুর বাঙলা কলেজের একজন শিক্ষকের চেষ্টা ছিল। মূলত এ কারণেই বিষয়টি আটকে ছিল।

ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজের মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ।

অবশ্য সাত কলেজকে নিয়ে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি, সাত কলেজ থেকে তিতুমীরকে আলাদা করে স্বতন্ত্র কাঠামো গঠনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

এই কলেজগুলো একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তখন থেকে নানা সমস্যা চলছিল।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতির কোটা বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল ‘শাটডাউন’ সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ। গত এপ্রিল থেকেই এসব আন্দোলন চলছে। এর মধ্যে ২৯ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চলে। অবশ্য এখন শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

সমাধান কী

এর আগে গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এইচএসসির কয়েকটি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এ ছাড়াও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে অপমান-অপদস্থ করার ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতার বিষয়টি সামনে এসেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারিক মনজুর প্রথম আলোকে বলেন, দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে হবে কারণ ও যুক্তি দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়, এমন আন্দোলন আমরা দেখতে চাই না। এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সংক্ষুব্ধ অংশের কথা শুনতে হবে। আন্দোলনকারীদেরও উচিত ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি জানানো। শুরুতেই আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলনকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক দাবিদাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আন্তরিকতার সঙ্গে নজর দেওয়ার জন্য বলতে পারে। যেসব দাবি সরাসরি সরকারের কাছে, সেগুলোর যৌক্তিকতা যাচাই করার জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিতে পারে।

যুগান্তর

‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আসন সীমানায় বড় পরিবর্তনের চিন্তা’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ জোরশোরে এগিয়ে আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর সীমানা পুনর্নির্ধারণসংক্রান্ত আইন সম্প্রতি সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ওই অধ্যাদেশ জারির পরে এ কাজে গতি ফিরেছে। আগামী নির্বাচনে ৩০০টি আসনই বহাল থাকবে এবং বিদ্যমান আইন অনুসরণ করে সীমানা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে ইসি। রাজনৈতিক ঐকমত্যের সিদ্ধান্ত না আসায় এই মুহূর্তে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। তবে সীমানা পরিবর্তনের দাবিতে ইসিতে জমা হওয়া আবেদন, সর্বশেষ প্রকাশিত জনশুমারি এবং প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (১৯ মে) পর্যন্ত ৬৬টি আসনে ৪১৬টি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের বেশিরভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। রয়েছেন দলটির বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ-সদস্য ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি। তাদের অন্তত ৯০ ভাগই ২০০১ সালের সীমানায় ফেরার দাবি জানিয়েছেন। ইসির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, জমা হওয়া ‘যৌক্তিক আবেদন’ বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ওই কারণে এবার অনেক আসনের সীমানায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। শহর এলাকার আসন কমে যেতে পারে। বাড়তে পারে গ্রামের আসন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, সীমানা পরিবর্তন চেয়ে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে পিরোজপুর-২ আসনে। এই আসনে আবেদন পড়েছে অন্তত ১০৩টি। আর কুমিল্লা-১০ আসনে জমা হয়েছে অন্তত ৯২টি। ঢাকা-৭ আসনে আবেদন পড়েছে ৩৬টি এবং ঢাকা-১, ২ ও ৩ আসনে পড়েছে ২৩টি। মানিকগঞ্জে একটি আসন বাড়ানোর দাবিতে আবেদন পড়েছে ৩৮টি। আর চাঁদপুরে একটি আসন বাড়ানোর জন্য ৯টি আবেদন জমা হয়েছে। সব আবেদনই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

কালের কণ্ঠ

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘সরকারকে চাপে রাখবে বিএনপি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো এবং ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবি—এই দুই ইস্যুতে সরকারকে চেপে ধরার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। এর মাধ্যমে দলটি তাদের রাজনৈতিক শক্তি দেখানোর পাশাপাশি সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলনও জোরদার করতে চায়। তবে এখনই কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হোক—সেটাও চায় না দলের উচ্চ মহল।

ইশরাক ও সাম্য ইস্যুতে আন্দোলন জোরদার করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বুধবার থেকে এই দুই কর্মসূচিতে জনসমাগম আরো বাড়াবে দলটি। গত সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এই দুই ইস্যু, সংসদ নির্বাচন ও সাম্প্রতিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। রাত সাড়ে ৮টায় বৈঠকটি শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে বিএনপি নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের ৯ মাসেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষিত না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা মনে করেন, সরকারের মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী চক্র নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করছে। ফলে নানা ঘটনায় পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে। বিএনপি নেতারা জানান, নির্বাচনের দাবিতে হয়তো সরাসরি কোনো কর্মসূচি আসবে না।

সমকাল

‘সারাদেশে সরকারি ১৪ হাসপাতালে বন্ধ আইসিইউ সেবা’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন চান্দু মিয়া। জটিলতা বাড়ায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে এই হাসপাতালে আইসিইউ সেবা চালু না থাকায় সাধারণ ওয়ার্ডে ঝুঁকি নিয়ে চলছিল তাঁর চিকিৎসা।

এটি গত রোববারের ঘটনা। গতকাল মঙ্গলবারও আইসিইউ সেবা চালু হয়নি। এমন পরিস্থিতি শুধু সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়; লোকবল না থাকায় সোহরাওয়ার্দীসহ দেশের বড় ১৪টি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে গত চার মাসে প্রায় ১৪ হাজার রোগী প্রাণরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রতিদিন অন্তত ৫০ জনের এমন জরুরি সেবা প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেবা মেলে না। এর মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে আইসিইউ সেবা নেন। দরিদ্র রোগীরা টাকার অভাবে এ সেবা নিতে পারেন না।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, জনবল সংকটের কারণে চার মাস ধরে এই জরুরি সেবা বন্ধ আছে। জনবল চেয়ে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি।

ইত্তেফাক

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘রাজস্ব বাড়াতে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় কমছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের আকার ঠিক করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য করতেই আকার কমানো হচ্ছে। প্রতি অর্থবছরে জুন মাসের কোনো বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার রেওয়াজ থাকলেও এবার এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। নতুন বাজেট ঘোষণা করা হবে আগামী ২ জুন সোমবার। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট ঘোষণা করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রাজনৈতিক সরকারের অর্থমন্ত্রীরা সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন।

জাতীয় সংসদ না থাকায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী বাজেট উপস্থাপন করবেন টেলিভিশনের পর্দায়। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এ বাজেট ঘোষণা করা হবে। ভ্যাট ও শুল্ক তাত্ক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যাবে। তবে আসন্ন বাজেটে কর বাড়ানোর চেয়ে করদাতাদের স্বস্তি দেওয়ার দিকে নজর বেশি থাকবে। তবে বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজস্ব বাড়বে, আবার কিছু ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য কর কাঠামো প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

নূ্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা হচ্ছে : আগামী বাজেটে ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। ফলে সিটি করপোরেশন, পৌর এলাকা, গ্রাম এলাকার করদাতাদের ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। বর্তমানে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের ৪ হাজার টাকা ও সিটি করপোরেশনের বাইরে পৌর এলাকা ও গ্রামাঞ্চলের করদাতাদের কর ৩ হাজার টাকা বিদ্যমান রয়েছে। আগামী বাজেটে বাড়ানো হচ্ছে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা। আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। অপরিবর্তিত থাকছে করহার।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘রোডম্যাপ না দিলে রাজপথ: জুন-জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের জন্য আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি। এর মধ্যে যদি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দেয় তাহলে রাজপথে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। গত সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা, মেয়র হিসেবে ইশরাককে দায়িত্ব না দেওয়া, চট্টগ্রাম বন্দর ও সামরিক করিডর নিয়ে আলোচনা হয়। বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য সরকারকে জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এরপর রাজপথ ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে বিএনপি দুই কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে রয়েছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল- এ তিন সংগঠনের সারা দেশে তারুণ্য সমাবেশ ও বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ চলবে। এ ছাড়া আগামী ২৫ মে থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন কর্মসূচি শুরু হবে। এসব কর্মসূচি নিয়ে চলবে। এরপর জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে কোরবানির ঈদ রয়েছে।

স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্য বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরশনে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশ করলেও তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার গড়িমসি করছে। বিশেষ করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের ভূমিকা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সূত্র আরও জানায়, যুগপৎ আন্দোলনের ঐক্য আরও সূদৃঢ় করতে পদক্ষেপ নেবে স্থায়ী কমিটি। কারণ ইতোমধ্যে দু-তিনটি বিষয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। এটা আর সামনের দিকে এগোতে দিতে চায় না বিএনপির হাইকমান্ড।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘ভেড়ে না বড় জাহাজ, চট্টগ্রাম বন্দর কলম্বো-সিঙ্গাপুর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ’। খবরে বলা হয়, অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল পলিপ্রবণ। নিয়মিত ড্রেজিং করলে বন্দর চ্যানেলে জোয়ারের সময় সর্বোচ্চ সাড়ে নয় মিটার গভীরতা পাওয়া যায়। ভাটার সময় গভীরতা নেমে আসে ছয়-সাত মিটারে। এ নাব্য সীমাবদ্ধতায় বন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এ সংকট ছাড়াও কাস্টমসে জটিলতা এবং দেশের অর্থনৈতিক হাবগুলোর সঙ্গে দুর্বল সংযোগ চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মান থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে তারা বলছেন, বন্দর পরিচালনায় যত দক্ষ প্রতিষ্ঠানই নিযুক্ত করা হোক না কেন, তারা বন্দরের কার্যক্ষমতা খুব একটা বাড়াতে পারবে না।

সিঙ্গাপুর বন্দরে ভিড়তে সক্ষম জাহাজের ড্রাফট বা গভীরতা (জাহাজের যে অংশ পানির নিচে থাকে) ১৬ মিটার পর্যন্ত। শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরের সর্বোচ্চ অনুমোদিত ড্রাফট বা গভীরতা ১৮ মিটার। ভিয়েতনামের সায়গন বন্দরে সাড়ে ১১ মিটার পর্যন্ত। অন্যদিকে দেশটির কাই মেপ বন্দর বর্তমানে বিশ্বের বৃহৎ কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাযোগ্য একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, যেখানে ১৬ থেকে ১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে। আর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ গভীরতা সাড়ে নয় মিটার এবং যা কেবল জোয়ারের সময়ই পাওয়া যায়।

বর্তমান বিশ্বে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয় বড় আকারের জাহাজ, যেগুলোর প্রতিটি ১০ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত একক কনটেইনার পরিবহনে সক্ষম। এ ধরনের জাহাজ চলাচলের জন্য ১২ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত গভীরতা দরকার হয়। চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের গভীরতা কম হওয়ায় এ ধরনের বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। বাংলাদেশগামী বড় জাহাজগুলো তাই প্রথমে সিঙ্গাপুর বা কলম্বোর মতো বন্দরে নোঙর করে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে পণ্য স্থানান্তর করা হয়, যেগুলোর ধারণক্ষমতা এক থেকে দুই হাজার একক কনটেইনার। আর এ প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

আজকের পত্রিকা

‘সংস্কারের সময়ে সংযমী বাজেট’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, অর্থনৈতিক চাপ, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক সহায়তার কঠোর শর্ত এবং রাজস্ব ঘাটতির বাস্তবতায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ব্যতিক্রমী হতে যাচ্ছে। ভোটের আগে উচ্চাভিলাষী ব্যয়ের বদলে এবার জোর দেওয়া হচ্ছে সংযম, কাঠামোগত সংস্কার এবং জনকল্যাণে কার্যকর বরাদ্দে। জনগণের জীবনমান উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, রাজস্ব শৃঙ্খলা ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে জোর দেওয়া হচ্ছে বাজেটে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগামী বাজেট হবে একটি ‘দায়িত্বশীল, নির্বাচন-পূর্ব বাস্তববাদী বাজেট’। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই বাজেট হবে বাস্তবভিত্তিক, বাস্তবায়নযোগ্য এবং সুশাসন ও বৈষম্য কমাতে সহায়ক।’

সর্বশেষ খসড়া অনুযায়ী, আগামী বাজেটের আকার নির্ধারিত হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ব্যয় সংকোচনের মূল কারণ—আইএমএফের শর্ত পূরণ, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দেওয়া এবং রাজস্ব ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ।

দেশ রূপান্তর

দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর আমলাদের ‘পারমাণবিক’ প্রমোদভ্রমণ। প্রতিবেদনে বলা হয়, পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি তো দূরের কথা, ন্যূনতম ধারণাও নেই যাদের তারা প্রায়ই প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও মতবিনিময় সভায় অংশ নিতে বিদেশে যান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এমন কাজ হরহামেশা করে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব কর্মসূচিতে যাদের অংশ নেওয়া জরুরি সেই পরমাণু বিজ্ঞানীদের অনেককেই তারা বাধা দেন এবং নানাভাবে হয়রানি করেন। পারমাণবিক প্রযুক্তির জটিলতা ও স্পর্শকাতরতা তারা আমলেই নেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নিরাপদ সম্প্রসারণে পরমাণু বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতিনির্ধারণ এবং এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে জ্ঞানবিনিময়ের জন্যই আন্তর্জাতিকভাবে ওইসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়ে থাকে। যারা পারমাণবিক প্রযুক্তি নিয়ে চর্চা ও গবেষণা করেন তারাই এগুলোতে অংশ নিয়ে থাকেন। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। এ কারণে দেশের পরমাণু শক্তির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং অর্থের নয়ছয় হচ্ছে। অন্যদিকে যারা সত্যিই এ খাতে কাজ করতে চান তারা বঞ্চিত ও হতাশ হচ্ছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশে পরমাণু বিষয়ক প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মতবিনিময় সভা প্রভৃতি কর্মসূচিতে অংশ নেন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, কোরিয়া প্রভৃতি দেশ রয়েছে।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status