অনলাইন
উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের
স্টাফ রিপোর্টার
(১ সপ্তাহ আগে) ২১ মে ২০২৫, বুধবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

ইশরাক হোসেন, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। বুধবার সকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ আহ্বান জানান তিনি।
ওই স্ট্যাটাসে ইশরাক লিখেন, ‘গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে, আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।’
তিন আরও লিখেন, ‘‘আপনাদেরই নাহিদ ইসলাম (জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক) যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, সেটাই অনুসরণ করুন। উনি চাইলে হয়তো আরও কিছুদিন মন্ত্রিত্ব করে তারপর এনসিপি’তে (জাতীয় নাগরিক পার্টি) যেতে পারতেন। একটা সময় ছিলো সার্জিস আলম হাসনাত ও আবদুল্লাহরা জোরালোভাবে দাবি করলে ওনারাও হয়তো মন্ত্রিত্ব নিতে পারতেন। কিন্তু তারা রাজনীতি করবেন বলে সেই কর্মপন্থা বেছে নিয়েছেন। হয়তো একদিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে পূর্ণাঙ্গভাবে মন্ত্রীর দায়িত্ব, ক্ষমতা ও সম্মান আবার পাবেন। আপনারা পদত্যাগ করলে বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতার ইমেজই বৃদ্ধি পাবে। এখনও মনে করি সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দলীয় ও সাংগঠনিক কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে দেশ ও জনগণকে আপনারা আরও ভালো কিছু দিতে পারবেন। আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নেই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই।’’
ইশরাক হোসেন আরও লিখেন, ‘এখন নিশ্চয়ই বলবেন বা ভাববেন ক্ষমতার লোভে অবৈধ মেয়র হওয়ার জন্যে দিনের পর দিন আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়ে জনভোগান্তি তৈরি করে নিজেকে সাধু বানিয়ে আমাদের নীতিবাক্য শোনাচ্ছেন তাই না? আমি নিজেও কি কম সমালোচনার শিকার হয়েছি এটি করতে গিয়ে? কিন্তু আমার আর কোনও উপায় ছিলো না। আপনাদেরকে যে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিলো এবং আজ অবধি আমাকে বাঁধা দেয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে এটা মিনিমাম রাজনৈতিকবোধ সম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলবো এটা ছিলো ওনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া। আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কী করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে।’
বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেন, ‘আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই। আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?’
উল্লেখ্য, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭শে মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭শে এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা।
পাঠকের মতামত
অন্তবর্তীকালিন সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতেই হবে তারা রাজনৈতিক দলও গঠন করবে আবার উপদেষ্টা পদে থেকে দপ্তরে বসে সেই দলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে সেটা তো দেশের জনগণ মেনে নিবে না
This is not a revolutionary government rather an interim government .
সরকারের নিরোপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য তাদের পদত্যাগ অত্যন্ত জরুরী। তাছাড়া প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকে রাজনৈতিক দল পরিচালনা করা হলে সেই রাজনৈতিক দল ভবিষ্যতে টিকবে কি না, সন্দেহ আছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব। তারা যদি সরে যায় এই বৈধতার ভিত্তি কতটুকু থাকবে। আর ইতিহাসের নিয়ম হচ্ছে যাদের নেতৃত্বে বিপ্লব হয় পুরো সরকারই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে কিন্তু বাংলাদেশে দুই একজন বিপ্লবী প্রতিনিধি তাদের সহ্য হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে তারা কোন দুঃখে পদত্যাগ করবে?
ইন্টেরিমের নিরপেক্ষতার জন্য এই দুই জনের পদত্যাগ জরুরী।