শেষের পাতা
সাম্য হত্যা
জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১৭ মে ২০২৫, শনিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল আসামির অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। গতকাল রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে তারা থানা ঘেরাও করেন।
দুপুর ১২টার দিকে ‘বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্রসমাজ’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেয়াদের অধিকাংশই শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। সাম্য এই বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা নিহত সাম্যের অধ্যয়নকৃত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে এসে জড়ো হন। সেখান থেকে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত মিছিল নিয়ে সমাবেশ করেন। মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘খুনি কেন বাইরে, প্রশাসন কি করে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, শাহবাগ থানা জবাব চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মুন্সী বলেন, এটি একটি নির্দলীয় ব্যানার। সাম্য ভাইয়ের লাশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল টালবাহানা শুরু করেছে। তাদের মুখ্য দাবি বিভিন্নজনের পদত্যাগ। কিন্তু আমাদের প্রধান দাবি সাম্য হত্যার বিচার। সাম্য হত্যার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে যে ছুরিকাঘাত করেছিল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা এখানে হামলা করতে আসিনি, কাউকে পদত্যাগের দাবি জানাতে আসিনি। আমরা প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি নিয়ে এসেছি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাকি দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার না করতে পারলে আমরা শাহবাগ থানা ঘেরাও কর্মসূচি দেবো।
সাম্যের সহপাঠী তৌফিক-উল ইসলাম বলেন, সাম্য হত্যার প্রধান আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করেছে তারা জড়িত থাকলেও প্রধান আসামি না। বাকি আসামিদের কেন ধরা হচ্ছে না, আমাদের কাছে তার জবাবদিহি করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে এই অহিংস আন্দোলন অন্য রূপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল শাহবাগ থানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে যায়। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন- একই বিভাগের শিক্ষক ড. মু. আব্দুস সালাম, ড. অসিম দাস ও ড. মু. সিরাজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য মঙ্গলবার রাত ১২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালীমন্দির সংলগ্ন স্থানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়। সাম্য স্যার এফ রহমান হলের ছাত্রদল নেতা ছিলেন। এদিকে, এক ভিডিও বার্তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) প্রফেসর ড. সায়মা হক বিদিশা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্য হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে, উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ এবং রমনা পার্কের আদলে উদ্যানকে গড়ে তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে উদ্যানের সকল অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের জন্য তদারক কমিটি গঠন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।