দেশ বিদেশ
বেসামাল রাজশাহীর নিত্যপণ্যের বাজার
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে
১৪ আগস্ট ২০২২, রবিবার
জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে বেসামাল হয়ে পড়েছে রাজশাহীর নিত্যপণ্যের বাজার। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। সবজি বাজারের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে পরিচিত থাকলেও উত্তরের মানুষ ডিম-মুরগি, সয়াবিনের মতো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে শঙ্কার ভেতরে আছেন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে, সয়াবিন প্রতি লিটারে বেড়ছে ২০-২৫ টাকা। ডিমের হালিতে দাম ৬ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকায়। বাড়তি পিয়াজ ও রসুনের দামও। শনিবার সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার, নিউমার্কেট, শালবাগান সবজি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সবজি বিক্রেতা বশির শেখ, শফিকুল ইসলাম জানান, কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে কাঁচামরিচের দাম ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক’দিন আগেও ২৫০ টাকা দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে।
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা কয়েকদিন আগে ছিল ১৫০ টাকা। আর সোনালি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। যা দু’দিন আগে কেজি প্রতি ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এই দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন সাহেববাজারের মুরগি দোকানদার মোবারক হোসেন। এদিকে বাড়তে শুরু করেছে পিয়াজের দামও। ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পিয়াজ ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রসুন কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকায়। আদা কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। সাহেববাজারের ফাহিম ডিম ভাণ্ডারের মালিক মাসুদ রানা বলেন, ডিমের দামে খামারিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। খাবারের দাম বেশি থাকলে লাভ কিছুটা কম হয়। লাল ডিম পাইকারিতে হালি ৪৪ টাকা আর সাদা ডিম ৪০ টাকা। হাঁসের ডিম ৪৮ টাকা। নগরীর শালবাগান সবজি বাজারে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিম-মুরগি, রসুন-পেয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। পরিবার নিয়ে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকা দায় হয়ে গেছে।
কারণ নিত্যপণ্যের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের বেতন বাড়ছে না। নগরীর উপকেণ্ঠ পবা উপজেলার পারিলা এলাকার লেয়ার খামারি আব্দুল মজিদ বলেন, গত দু’বছর ধরে পাঁচ-ছয় দফায় পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়েছে। আমরা লোকসানে শেষ হয়ে গেছি। গত মাসেও খাদ্যের দাম বেড়েছে। আগে ১৯শ’ টাকায় যে খাদ্য কিনেছি সেই খাদ্য এখন ৩২শ’ ৫০ টাকা। তবে, ডিমের দাম বাড়ার কারণে লাভ হচ্ছে। মিথ্যে বলবো না- ১ হাজার ডিমে এখন দেড়-দু হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খামারে লাল একশ’ ডিমের পাইকারি রেট ১ হাজার ২০ টাকা। সাদা ডিম সাড়ে ৯শ’ টাকা একশ’ ডিমের দাম। বাজারে এর চেয়ে কিছু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মানভেদে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি ২৮ বালাম ৫৫-৬০ টাকা, মিনিকেট মানভেদে ৬৫-৭০ টাকা, বাসমতি ৭০-৮০ টাকা ও স্বর্ণা মোটা ৪৬-৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তাছাড়া ভারত থেকেও চাল আমদানি বন্ধ, সরকার যদি চাল এল.সি করে তবে দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এদিকে চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের ভেতরে আসবে এমনটা ভাবতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছেন, এই ক’য়েকদিনের ভেতরে যে দাম বেড়েছে তা মজুত পণ্য থেকেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা বাজারে আসলে প্রতিটি পণ্যই ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
মন্তব্য করুন
দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]