অনলাইন
বইপড়া কর্মসূচিতে কৃতিত্বের জন্য বরিশাল মহানগরের ২ হাজার ৪১১ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোন
স্টাফ রিপোর্টার
(১০ ঘন্টা আগে) ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ৩:৫৯ অপরাহ্ন

শুক্রবার বরিশাল নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আয়োজিত গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবে ৩৬টি স্কুলের ২ হাজার ৪১১ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মো. আসাদুজ্জামান, অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও সাবেক ট্রাস্টি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, মোঃ সোহরাব হোসেন, (যুগ্ম সচিব), অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক), বরিশাল, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, আঞ্চলিক উপপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, মোঃ হারুনুর রশীদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল, গাব্রিয়েল গাইন, প্রধান শিক্ষক, ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সানুয়ার হোসেন, সার্কেল হেড , বরিশাল ডিভিশন, গ্রামীণফোন লিমিটেড ও শামীম আল মামুন, পরিচালক, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই পুরস্কার বিতরণ উৎসব শুরু হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে পর্বে অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাবেক ট্রাস্ট্রি খন্দকার মো. আসাদুজ্জামান পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বই পড়লে মন ভালো থাকে, উৎফুল্ল থাকে, মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। যে বই আমাদের স্বপ্ন যোগায়, সেই বই আমাদের পড়া উচিত। তোমরা বই পড়াকে দায়িত্ব মনে না করে, আনন্দ মনে করবে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে সারাদেশব্যাপী তোমাদের আনন্দ দেবার জন্যই এই বইপড়া আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও যুগ্ম সচিব মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, তোমার একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রসহ অন্যান্য ভাল বইগুলো পড়বে। আগামীর বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য বইপড়া খুবই দরকার বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক উপপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, মানুষকে সকল সৃষ্টির চেয়ে আলাদা বা শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে তার জ্ঞানের জন্য কিন্তু বই না পড়লে জ্ঞান সমৃদ্ধ হয় না। তাই বই পড়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে পারি।
বরিশালের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হারুনুর রশীদ পুরস্কারপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করেন এবং অভিনন্দন জানান। তিনি এই অবদান পুরোপুরি শিক্ষার্থীদের দেন এবং তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই বই পড়া কর্মসূচিকে চালিয়ে নেওয়ার জন্য আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে ধন্যবাদ দেন এবং অনুরোধ করেন বরিশালের ৭৫০ টি স্কুলের সকল বিদ্যালয়ে যেন এই কর্মসূচি চালু করা হয়।
ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাব্রিয়েল গাইন পুরস্কারপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, যারা আজ এখানে উপস্থিত সেই শিক্ষার্থীরা অন্য সব শিক্ষার্থী থেকে আলাদা কারণ তারা বই পড়ছে এবং বই পড়ার জন্য পুরস্কার পাচ্ছে। এজন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রসহ আগত সকল অতিথিকে ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন।

গ্রামীণফোনের বরিশালের সার্কেল হেড সানুয়ার হোসেন বলেন, তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের মধ্যে যেন মানবিক ও মানসিক উৎকর্ষতার বিকাশ ঘটে, এজন্য গত দুই দশক ধরে এই মহতী উদ্যোগের পাশে আছে গ্রামীণফোন। বই পড়া কর্মসূচিতে আজকের বিজয়ী শিক্ষার্থীদের জানাই অভিবাদন। তরুণদের জ্ঞানের বিকাশ এবং মানসিক উৎকর্ষতার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। তাই আলোকিত মানুষ গড়ার অংশ হিসেবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র যে বই পড়া কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন একটি উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমরাও গর্বিত।"
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন স্বাগত বক্তব্যে বছরজুড়ে বইপড়া কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনায় সহায়তা করার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জানান। দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসব আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। আগামী বছরগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহবান জানান তিনি।
দিনব্যাপী এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবে বরিশাল মহানগরীর ৩৬টি স্কুলের পুরস্কার বিজয়ী ২ হাজার ৪১১ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৩৬টি স্কুলের ২ হাজার ৪১১ জন সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবে এবং ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্কুলের শিক্ষক/সংগঠক পুরস্কার গ্রহণ করবেন। মোট ৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২২১২ ছাত্রী ও ৭৬১ জন ছাত্রসহ মোট ২ হাজার ৯৭৩ জন শিক্ষার্থী পুরস্কার গ্রহণ করবে। তাদের মধ্যে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ১২৪৭ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ১১৬৬ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৪৮৪ জন এবং সেরাপাঠক পুরস্কার পেয়েছে ৭৬ জন।
দিনব্যাপী উৎসবের এ বিশাল আয়োজন ও পুরস্কারের বই স্পন্সর করছে গ্রামীণফোন লিমিটেড।