ঢাকা, ১৪ মে ২০২৫, বুধবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

বৃটেনে নতুন অভিবাসন নীতি

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধাক্কা

আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
১৪ মে ২০২৫, বুধবার

বৃটেনের পরিবর্তিত নতুন অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে ইউরোপের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর হচ্ছে দেশটির সরকার। লেবার সরকারের নয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বিদেশি শিক্ষার্থীদের গুনতে হবে ২০ থেকে ৪১ হাজার পাউন্ড। দেশটির ইতিহাসে এবারই প্রথমবার নন ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এত কঠোর নিয়ম করছেন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর ৬ শতাংশ কর আরোপের ঘোষণা দিয়েছে তার প্রশাসন। শর্ত অনুযায়ী দক্ষ চাকরি না পেলে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হবে স্নাতকদের। অভিবাসন রোধের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই নীতি নির্ধারণ করা হচ্ছে। নতুন আইনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর মাত্র ১৮ মাস বৃটেনে থাকার সুযোগ পাবে। যা আগে ছিল ২ বছর। ১৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ইউনিভার্সিটিজ ইউকে-এর প্রাথমিক অনুমান অনুসারে নতুন শুল্কের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ শিল্পের আর্থিক স্থায়িত্বকে বিপন্ন করবে। কারণ বিদেশি শিক্ষার্থীদের আয় চিকিৎসা ও দন্তচিকিৎসার মতো দেশীয় শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চমূল্যের কোর্সগুলোতে ভর্তুকি দেবে।
তবে সরকার বলেছে, শুল্কের মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায় পুনরায় বিনিয়োগ করা হবে যাতে বৃটিশ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে উৎসাহিত করা যায়, যা দেশীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বর্তমানে অভিবাসনের কারণে যে শূন্যস্থান  তৈরি হয়েছে তা পূরণের জন্য সরকারের বৃহত্তর অভিযানের অংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কনীতির ফলে প্রতি বছর ১২ হাজার  স্নাতক ভিসার আবেদন কম পড়বে। স্বরাষ্ট্র দপ্তর নিম্ন-হারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির পরিসংখ্যানের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যদিও ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সময়ে জাতীয়ভাবে শীর্ষ ১০০-তে স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসা ৭ শতাংশ  হ্রাস পেয়েছে। 
ইউনিভার্সিটিজ ইউকে-এর প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, ভেটেরিনারি মেডিসিনের মতো একটি কোর্সের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রতি প্রায় ২০ হাজার পাউন্ড খরচ হয়, যার প্রায় অর্ধেকই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আয় থেকে জোগাড় করা হয়। আমরা চাই, সরকার আমাদের ব্যাখ্যা করুক- কীভাবে বৃটেনের শিক্ষার্থীদের উচ্চমূল্যের বিষয়গুলো পড়ার সুযোগ সহজ করা হবে। তিনি বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা ফি, অপর্যাপ্ত গবেষণা তহবিলের বিষয়টি উল্লেখ করেন। অতিরিক্ত বড় ধরনের কর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহায্য করবে না বলে মত দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আমরা চাই সরকার আবার চিন্তা করুক। আমরা ইতিমধ্যেই বাজেটের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আমাদের ওপর আবার কর আরোপ করলে কোনো লাভ হবে না। আমরা চাই সরকার আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই খাতকে সাহায্য করার জন্য গঠনমূলক প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসুক, যেন সবকিছু আরও খারাপ না হয়।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status