বাংলারজমিন
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবারনারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলার আসামিদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ডের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহতদের পরিবারের স্বজনরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান এবং বিচার বিভাগের কাছে হত্যাকারীদের বিচারের আবেদন জানান।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আমরা স্বজন হারিয়েছি ১১ বছর পার হয়ে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট খুনিদের ফাঁসি দেননি। বিচার বিভাগ ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের কাছে আমাদের একটাই দাবিÑ অন্তত আমাদের সাতটা পরিবারের চিন্তা করে বিচার কার্যক্রম শেষ করা হোক। নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সামছুন নাহার নূপুর বলেন, স্বামী হত্যার সময় আমার মেয়ে গর্ভে ছিল। এখন আমার মেয়ের বয়স ১১। অথচ এখন পর্যন্ত মেয়ে তার বাবা হত্যার বিচার পায়নি। উচ্চ আদালতে মামলা ঝুলে রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লা স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে তৎকালীন র্যাব-১১ এর একটি টিম অপহরণ করে। অপহরণের দু’দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনা থেকে হাত-পা বাঁধা এবং শরীরে ইটভর্তি বস্তা বাধা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন ফতুল্লা থানায়। পরে আদালত আসামিদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ই জানুয়ারি রায় প্রদান করেন। ৩৫ আসামির মধ্যে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ২২শে আগস্ট হাইকোর্ট ৭ খুনের অন্যতম আসামি সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এমএম রানা সহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখে। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। তারমধ্যে অনেক আসামি পলাতক রয়েছে।