ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

জুলাই অভ্যুত্থান

সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধনে আহতরা

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

কেউ ক্রাচে ভর দিয়ে, কেউ অন্যের কাঁধে হাত  রেখে, আবার কেউবা হুইলচেয়ারে করে এসেছেন সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য আয়োজিত মানববন্ধনে। জুলাই আন্দোলনে আহত যোদ্ধারা এভাবেই জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনবার্সন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনে রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন। পাশের চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও অংশ নেন এতে।

গতকাল সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে মানববন্ধন। এতে আহত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা এক ব্যানারে একত্রিত হন। 
এ সময় আহতরা বলেন, গুলিতে আহত হয়ে মাসের পর মাস পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঠিকমতো চিকিৎসা পাওয়া যায় না এখানে। নামমাত্র ডাক্তার আসেন রাউন্ড দেন চারিদিকে, দিয়ে চলে যান। সুচিকিৎসার অভাবে সুস্থ হতে পারছেন না বেশির ভাগ আহতরা। সুচিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আগামী শনিবার থেকে প্রতিদিন পঙ্গু হাসপাতালে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা বলেন, দিন যত যাচ্ছে ’২৪-এর আন্দোলনে আমরা যারা আহত হয়েছিলাম, তারা তত বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা না হবে, ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

দেশে বিপ্লবের পর আহত বিপ্লবীদের মূল্যায়ন না করে কাদেরকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে-প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, ৮-৯ মাস পরে এসে কেন সুচিকিৎসার দাবিতে আমাদের মাঠে নামতে হবে। আমাদের কেন ৯ মাস পরে এসে হাত-পা কাটার কথা বলছেন ডাক্তাররা। এতদিন কী করছেন তারা। পঙ্গু হাসপাতালে সুচিকিৎসা সম্ভব না হলে আমাদেরকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক এবং খুব দ্রুততার সঙ্গে আমাদের যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন; তাদেরকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক। 

গাজীপুর আনসার একাডেমিতে গুলিবিদ্ধ হন মুফতি ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, গত ১৫ই ডিসেম্বর আমি এখানে ভর্তি হয়েছি। এর আগে আমি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আগের হাসপাতালে আমার পায়ে ও মেরুদণ্ডের কোনো গুলি বের করা হয়নি। পঙ্গুতে আসছিলাম গুলি বের করার জন্য, উন্নত চিকিৎসার জন্য। এখানে বলছে দেশের বাইরে যেতে হবে। জুলাই ফাউন্ডেশন আর্থিক সহায়তার জন্য যে ক্যাটাগরি করতেছে।  সেখানেও আমরা বৈষম্যের শিকার। এখানে আমাদের খোঁজ নিতে তেমন কেউ আসেন না। এখানকার ডাক্তাররা আমাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারছেন না। ডাক্তাররা ৯ মাস পরে এসে আমাদের এক ভাইর পা কাটার জন্য বলতেছেন। তারা এই ৯ মাস তাহলে কী করলেন। 

আহত জাহিদ বলেন, যারা বেশি চিল্লাচিল্লি করেন। তাদের এসে বলে তোমাদের কী লাগবে বলো। তোমাদের যে কয়েকজন চিল্লায় তাদের নিয়ে আলাদা রুমে আলোচনা হবে। 

মো. মোবারক হোসেন বলেন, এভাবে দিনের পর দিন আমাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত না করে কেন আমাদের এখানে রাখা হচ্ছে। আমাদের যাদের সুচিকিৎসা দরকার তাদের দ্রুততার সঙ্গে বিদেশে পাঠানো হোক। যেভাবে চিকিৎসা দিলে আমরা আহতরা দ্রুত সুস্থ হবো। সেভাবে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। এভাবে চিকিৎসার নামে নৈরাজ্য কমানো হোক।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায় এবং দফা এক দাবি এক, সুচিকিৎসা সুচিকিৎসা।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status