খেলা
ঢাকা লীগে ফিক্সিং! সিসিডিএম’র জিরো টলারেন্স
ইশতিয়াক পারভেজ
১১ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ফিক্সিং বিতর্কে লেগেছে ভয়াবহ কলঙ্কের দাগ। এবারই সবচেয়ে বেশি প্রকাশ্যে এসেছে ক্রিকেটারদের স্পট ফিক্সিংয়ের বিষয়টি। এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ (ডিপিএল) আসরটিও হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। ডিপিএলে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ব্যাটারের অদ্ভুত আউট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দুই ব্যাটার রাহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরের প্রশ্নবিদ্ধ আউটের পর তদন্তে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (এসিইউ)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিসিবি। আর ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) ডিপিএলে এমন ফিক্সিং বিতর্কে জিরো টলারেন্স নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে সিসিডিএম-এর ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান দৈনিক মানবজমিনকে জানিয়েছেন তারা কোন রকম ছাড় দিতে রাজি নয়। তিনি বলেন, ‘দেখন বিষয়টি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। এরই মধ্যে বিসিবি’র অ্যান্টি করাপশন টিম কাজ শুরু করেছে। আমরা জানিয়ে দিয়েছি দোষীদের কোনভাবেই যেন ছাড় দেয়া না হয়। এই ক্রিকেটাররা দোষী হলে তাদের পিছনেও কেউ আছে কিনা সেটিও বের করতে হবে।’
গতকাল দুপুরে অভিযুক্ত দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে বিসিবি’র অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট এর কর্মকর্তারা তদন্ত কাজ শুরু করেছে। সেই সময় দেখা যায়, দুই ক্রিকেটার মাঠে যেভাবে আউট হয়েছেন তারা অভিয়ন করে দেখাচ্ছেন। এমন তদন্ত কাজ নিয়েও তৈরি হয় আলোচনা-সমালোচনা। মাসুদুজ্জামান জানিয়েছেন তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। তারা অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট এর সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাও করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেখেন সিসিডিএমের কাজ হচ্ছে ঢাকা লীগ আয়োজন। এর জন্য যা যা করার তা আমরা করেছি। আমরা বিসিবি’র একটি কমিটি। এখানে সবকিছু বিসিবি মনিটর করে। যদি আম্পায়ারিংয়ে কিছু হয় সেখানে আম্পায়ার্স কমিটি কাজ করে। যেহেতু ফিক্সিংয়ের অভিযোগ এসেছে তা্ অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট দেখছে। আমাদের কথা হচ্ছে এমন ধরনের ক্রিকেট আমরা নিকট অতীতে ঢাকা লীগে দেখিনি। যে কারণে এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় আমরা সেই ব্যবস্থাই নিবো। সিসিডিএমের যেখানে যেখানে সাহায্য করা প্রয়োজন তাই করবে।’
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতেই তদন্তের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিসিবি’র দুই ক্রিকেটারের আপ্রোচ ও আউটের ধরন নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় এসিইউ নিজেরাই তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে। বিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, ‘বিসিবি তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে চায় যে, তারা ক্রিকেটের অখণ্ডতা এবং সর্বোচ্চ নৈতিক মান বজায় রাখবে। বোর্ডের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসারে, খেলার চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন কোনও দুর্নীতি বা অসদাচরণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিসিবি’র দুর্নীতি দমন ইউনিট তদন্ত শুরু করেছে। বোর্ড তার আওতাধীন সকল ক্রিকেট কর্মকাণ্ডে ন্যায্যতা এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার শাইনপুকুর ও গুলশান ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে। প্রথমে রাহিম আহমেদের আউট বিস্মিত করেছে সবাইকে। ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বল ক্রিজ ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন শাইনপুকুরের ব্যাটার। বল অনেক বাইরে থাকলেও তিনি বলের কাছেও যাওয়ার চেষ্টা করেননি। বলের নাগাল না পেয়েও ডিফেন্সের ভঙ্গি করেন তিনি। ক্রিজে ফেরার কোন তাড়না তার মধ্যে দেখা যায়নি। এছাড়াও পার্টটেক্স ক্রিকেট ক্লাবের ক্রিকটাররা পাওয়া পারিশ্রমিক না পেয়ে অভিযোগ করেছে বিসিবি ও সিসিডিএম বরাবর। এ নিয়ে সিসিডিএমের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্রিকেটাররা অভিযোগ করেছে এটি আমি শুনলাম। এখন তদন্ত করা হবে। ক্লাব কিংবা ক্রিকেটার যারাই দায়ী থাকুক আমরা শাস্তির আওতায় আনবো। মাঠের খেলাকে আমরা স্বচ্ছ রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। অস্বীকার করবো না যে কিছু ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আমরা ছাড় দিচ্ছি না সেটি হলো বড় বিষয়।’
পাঠকের মতামত
আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।