খেলা
শাইনপুকুরের দুই ব্যাটারের আউট নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস
স্পোর্টস রিপোর্টার
১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
একই ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ব্যাটার রহীম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদিন সাব্বিরের আউট হওয়ার ধরন নিয়ে তোলপাড়। ৪২ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৬ রান, হাতে এক উইকেট। মিনহাজুলকে এগিয়ে আসতে দেখে বাইরে বল করেন গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের নাঈম ইসলাম। এগিয়ে এসে ব্যাটে লাগাতে পারেননি মিনহাজুল, বল ধরলেও প্রথম দফায় স্টাম্পে লাগাতে পারেননি উইকেটরক্ষক আলিফ হাসান। প্রথম দফায় ব্যাট দাগের ভিতরে ফেললেও, অজানা কারণে সেটি বের করে নেন মিনহাজুল!। সেখান থেকেই অবিশ্বাস আর সন্দেহ ছড়ায়।
গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ১০ম রাউন্ডে গুলশানের বিপক্ষে ৫ রানে হারে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। মিরপুরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব শাহরিয়ারের ৩৮ ও জাওয়াদ আবরারের ৩৭ রানে ভর করে ১৭৮ রানে অলআউট হয় গুলশান। জবাবে, ১৭৩ রানে থামে শাইনপুকুরের ইনিংস। তবে ম্যাচের ফল ছাপিয়ে মিনহাজুল ও রহিমের আউটকে ঘিরেই বিতর্ক হচ্ছে। মিনহাজুল আবেদিন সাব্বিরের সামনে সুযোগ ছিল ব্যাট ক্রিজে দিয়ে স্ট্যাম্পিং আটকানোর। সেজন্য পর্যাপ্ত সময়ও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অনেকটা ধীরগতিতে ব্যাট পেছনে নেন সাব্বির। তাতে তার স্ট্যাম্পিং আটকানো সম্ভব হয়নি। খালি চোখে যে কারও সন্দেহ হতে পারে, মিনহাজুল কি নিজেই আউট হতে যাচ্ছিলেন কিনা!। এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব হন ধারাভাষ্যকাররাও। মাজহারউদ্দিন অমি বলেন, ‘ব্যাটারকে সামনে আসতে দেখেই কিন্তু ওয়াইড করেছিলেন। আমি আসলে এখনও বুঝতে পারছি না ব্যাটার কেন ব্যাট ক্রিজে নিলেন না, এখনও নিচ্ছেন না। দিস ইজ শকিং, আই হ্যাভ নেভার সিন এনিথিং লাইক দ্যাট বিফোর।’ আর গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে খেলা শামসুর রহমান শুভ এই ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সিরিয়াসলি শেইম।’ এর আগে ইনিংসের ৩৬তম ওভারে সন্দেহজনকভাবে আউট হন রহিম আহমেদ। গুলশানের বাঁহাতি স্পিনার নিহাদুজ্জামানের বল এগিয়ে এসে খেলতে যান তিনি। কিন্তু নিহাদ বল দূরে করতেই ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেন রহিম। তবে তার ব্যাট বলের ধারেকাছেও ছিল না, আর তিনি চেষ্টাও করেননি। খালি চোখে মনে হয়েছে, ইচ্ছা করে আউট হয়ে যেন অভিনয় করছেন!
দুটো আউট নিয়েই ক্রিকেট পাড়ায় সমালোচনা চলছে। সাবেক এক ক্রিকেটার দৈনিক মানবজমিনকে বলেন ‘এমন আউট তো পাড়ার ক্রিকেটেও কেউ হয় না। দুজনই তো আউট হতে চেয়েছে বলেই মনে হয়েছে খালি চোখে! এটার সিরিয়াস তদন্ত করা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে ডিপিএলের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল মানবজমিনকে বলেন, ‘সবাই যেমন এটা টিভিতে বা ভিডিওতে দেখেছে আমরাও এভাবেই দেখেছি। স্টাম্পিংয়ের সময় ব্যাটার যেখানে ছিল সেখানেই বসে থাকছে, ঢোকেনি। তবে এগুলোসহ ম্যাচের সব ডিপেন্ড করে ম্যাচ রেফারির রিপোর্টের ওপর। আমি আম্পায়ার্স ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করেছি যে আজ (গতকাল) স্পষ্ট এমন একটা ঘটনা ঘটেছে, তো এটার ব্যাপারে তারা কি বলছে ম্যাচ রেফারি আর দুই আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলবে। এটা কি উইকেটে লেগেছে ভেবে আর আগায়নি নাকি বোঝেনি, নাকি ইচ্ছা করে করেছে সেটা দেখতে হবে। এটা পুরোপুরি আম্পায়ারের ব্যাপার, ওনারা রিপোর্ট করবে। যদি কোনো এলিগেশন আনার ব্যাপার থাকে তাহলে বিসিবি’র অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের (আকু) ব্যাপার আছে যে আকু ওটা কি রিপোর্ট করবে...।’ শুধু আউট দুটি নয়, এদিন শাইনপুকুরের ব্যাটিং অর্ডার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আগের পাঁচ ম্যাচে বেশিরভাগ সময় ৮ কিংবা ৯ নম্বরে ব্যাটিং করা শরিফুল ইসলাম সৈকতকে গতকাল নামানো হয় ১১ নম্বর ব্যাটার হিসেবে। যার আউট নিয়ে সন্দেহ, সেই উইকেটরক্ষক ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির প্রায় প্রতি ম্যাচেই ৫ কিংবা ৬ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন এবারের ডিপিএলে। কিন্তু গতকাল তিনি ব্যাটিংয়ে নামেন ৯ নম্বরে।