শেষের পাতা
অ্যান্টিক মেটাল কয়েন বিক্রির নামে প্রতারণা
স্টাফ রিপোর্টার
২২ মার্চ ২০২৫, শনিবারবিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারসহ অভিনব কৌশলে প্রতারণাকারী ‘ম্যাগনেটিক কয়েন’ বা ধাতব মুদ্রা প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অ্যান্টিক মেটাল কয়েন নামক ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে কয়েন কিনতে উদ্বুদ্ধ করতো চক্রটি। জাপান ও ইউএসএর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই কয়েনের প্রচুর চাহিদা বলেও প্রতারকরা বিশ্বাস অর্জনের জন্য জানাতো। এভাবে একজন ব্যক্তির কাছ থেকেই প্রতারণার মাধ্যমে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। গ্রেপ্তাররা হলেন- ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) ও আবুল কালাম আজাদ (৪৬)। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১০ মিনিট থেকে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর আদাবর থানা এলাকার প্রিন্স বাজার, শেখেরটেক, সূচনা কমিউনিটি সেন্টার ও কৃষি মার্কেটসহ অন্যান্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তর করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ একটি ৫০ লাখ টাকার ব্যাংক চেক, নগদ ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গতকাল ডিএমপি‘র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান বলেন, আট মাস আগে জনৈক মিজানুর রহমানের ভাড়াটিয়ার মেয়ে মিজানুর রহমানের বনানীস্থ অফিসে আসামি ইফতেখার আহম্মেদের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন। সেখানে মিজানুর রহমানকে ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করে প্রলোভন দেখিয়ে কয়েন কিনতে বলেন ইফতেখার। এই ব্যবসা সম্পর্কে নিজের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, জাপান এবং ইউএসএর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই কয়েনের প্রচুর চাহিদার কথাও জানান। এ-ও জানান যে, তারা অতি উচ্চ মূল্যে কয়েনগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে দিতে পারবেন। এমন সব প্রলোভন দেখিয়ে গত বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর গুলশানের একটি হোটেলে ইফতেখার আহম্মেদ এবং বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম এবং মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি মিজানুর রহমানকে ডেকে নেন। তারা ধাতব কয়েনগুলোর প্রতিটির বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার হবে বলে তাকে ধারণা দেন।
ডিসি ইবনে মিজান বলেন, তারা তাদের নিজস্ব ভুয়া কেমিস্ট মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশির মাধ্যমে অ্যান্টিক মেটাল কয়েনগুলোর সঠিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভুক্তভোগীকে একটি রিপোর্ট দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৭শে অক্টোবর আদাবর থানাধীন জাপান গার্ডেন সিটির নিকটস্থ একটি ভবনে মিজানুর রহমান তাদের কাছে অ্যান্টিক মেটাল কয়েন কেনার জন্য অগ্রিম ৪৫ লাখ টাকা দেন। পরবর্তীসময়ে মিজানুর রহমান বিভিন্ন সময়ে অ্যান্টিক মেটাল কয়েন কেনার জন্য চক্রের চাহিদা মোতাবেক আরও ৭৫ লাখ টাকা নগদ এবং ৫০ লাখ টাকার একটি চেকসহ মোট ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা দেন। পরে তিনি যাচাই-বাছাই করে জানতে পারেন, ধাতব মুদ্রাগুলো ভুয়া এবং তিনি অভিনব প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ডিএমপি’র আদাবর থানায় মামলা করেন। তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদাবর থানার একটি অভিযানিক দল আদাবর থানার বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ উদ্ধার করে।
পাঠকের মতামত
এইসব মূর্খদের জন্য কোনো সমবেদনা নাই। অতিশয় লোভী। ইংরেজিতে প্রবাদ আছে, "A fool and his money are soon parted. "