শেষের পাতা
বিয়ের আশ্বাসে যৌনকর্মের সাজা সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড
স্টাফ রিপোর্টার
২১ মার্চ ২০২৫, শুক্রবারধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত করার লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। খসড়া অনুযায়ী বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবৈধ যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণের সংজ্ঞা থেকে বাদ দিয়ে আইনে আলাদা সেকশনে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হবে সাত বছরের কারাদণ্ড। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আইনের খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বলেন, কেবিনেটে আজকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের আইন উপদেষ্টা গত সপ্তাহে বিস্তারিত বলেছেন। উনার ব্রিফিংয়ের পরে আমরা অনেকগুলো উইমেন গ্রুপের মতামত নিয়েছি। তাদের মতামতগুলোকে অ্যাকমডেট করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে। তার আলোকে আজকে প্রায় ঘণ্টাখানেক এই ল’টা ডিবেট হয়েছিল, তারপর এ অ্যামেন্ডেন্টটা পাস হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া খসড়া অনুযায়ী, প্রেমের সম্পর্ক থাকার সময় বিয়ের প্রতিশ্রুতি বা প্রতারণার মাধ্যমে কারও সঙ্গে যৌনকর্ম করলে তা আর ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে না। এ ধরনের প্রতারণাকে আলাদা অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে সাত বছর কারাদণ্ড। শফিকুল আলম বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যে রেইপ কেসগুলো, সেই জায়গাটায়ও নতুন করে অনেকগুলো মেজার নেয়া হয়েছে। আগের ল’য়ে নতুন একটা সেকশন নিয়ে এসে সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছর করা হয়েছে এবং সেটার ক্ষেত্রে আরও যারা সেইফগার্ড নেয়া যায়, সেগুলোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কেবিনেট অবশেষে এটা আজকে পাস করেছেন। এদিকে প্রস্তাবিত আইনে বলাৎকারেরও নতুন সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। শফিকুল বলেন, এ মামলাগুলোর (বিচার) ডিলে হওয়ার পেছনে ডিএনএ টেস্টের একটা বড় ভূমিকা ছিল। সে জায়গাগুলো কীভাবে এড্রেস করা যায়, সেগুলোর মেজার নেয়া হয়েছে। আমরা নতুন দুইটা ডিএনএ ল্যাবও করতে যাচ্ছি।
এ ছাড়াও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অধ্যাদেশের সংশোধনী অনুমোদন পেয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রাক্কলিত মূল্যের ১০ পার্সেন্টের কম হলে টেন্ডার প্রস্তাব বাতিলের যে বিধান তা বাতিল করা হয়েছে। পূর্বের কাজের মূল্যায়নের জন্য যে ম্যাট্রিক্স ছিল, যেটা থাকার কারণে একই প্রতিষ্ঠান বার বার কাজ পেতো, তা বদলে নতুন সক্ষমতা ম্যাট্রিক্স করা হবে। এতে করে সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হবে। বর্তমানে ৬৫ শতাংশ কাজের দরপত্র বা টেন্ডার অনলাইনে হচ্ছে। এটিকে শতভাগে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, পরিত্যক্ত বাড়ি বরাদ্দপ্রাপ্তরা পূর্বে নিজ নামে নামজারি করতে পারতেন না। সেই অসুবিধা দূর করতে আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। এদিকে চৈত্র সংক্রান্তিতে নির্বাহী আদেশে তিন পার্বত্য জেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাঁওতাল, গারো, খাসিয়া, জৈন্তাসহ সমতলের বাঙালি ছাড়া অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও এই ছুটির আওতায় থাকবে। অন্যদিকে জনসাধারণের সুবিধার্থে ৩রা এপ্রিল একদিন ঈদের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ফলে এবার ২৮শে মার্চ থেকে ৫ই এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয় দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পাঠকের মতামত
এই আইনের ধারাটি বিতর্কিত, বিয়ের আশ্বাস সাধারণত প্রতারণার মধ্যে পরে এ বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি।
সাজা কার হবে? একজনের নাকি উভয়ের?
যে নারী বিয়ের লোভে বা টাকার লোভে বিপদগামী হয় তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
এই আইনের অপব্যবহার হবে। সংশ্লিষ্টরা ধর্ষণের সংজ্ঞা জানেন কিনা সন্দেহ আছে।
এরকম ক্ষেত্রে উভয়ই অপরাধী। দুইজনকেই প্রকাশ্যে যিনার শাস্তি দিতে হবে।
এটা কি রকম আইন হলো? যৌন কর্ম দুজনেই করবে আর ৭ বছর সাজা দেয়া হবে পুরুষ কে!