প্রথম পাতা
তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্য গুরুতর
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ইসলামিক খিলাফত নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড যে মন্তব্য করেছেন সেটি ‘গুরুতর’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যে প্রতিক্রিয়া (তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যের) জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান ওটাই। ওনার (তুলসি গ্যাবার্ড) বক্তব্য গুরুতর। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলসি গ্যাবার্ড বলেছেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ক্যাথলিক ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্ভাগ্যজনক নিপীড়ন, হত্যা ও অন্যান্য নির্যাতন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের উদ্বেগের একটি প্রধান ক্ষেত্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আলোচনা মাত্র শুরু হচ্ছে, কিন্তু এটি উদ্বেগের মূল জায়গার একটি হয়ে রয়েছে। তার এমন বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সেই বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও দুঃখের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের করা মন্তব্য লক্ষ্য করেছি। তিনি অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও হত্যা এবং দেশে ইসলামী সন্ত্রাসীদের হুমকি রয়েছে, যার শিকড় একটি ইসলামী খিলাফতের শাসন ও পরিচালনার আদর্শ ও উদ্দেশ্যের মধ্যে নিহিত।
তার এই বক্তব্য বিভ্রান্তিকর ও ক্ষতিকর, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামকে আঘাত করে। বাংলাদেশ বরাবরই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ ইসলাম পালনের ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্য নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়নি। তারা একটি সম্পূর্ণ জাতিকে বিস্তৃত এবং অযৌক্তিকভাবে চিত্রিত করে। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও চরমপন্থার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তবে আইন প্রয়োগ, সামাজিক সংস্কার এবং অন্যান্য সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশকে ইসলামী খিলাফতের ধারণার সঙ্গে ভিত্তিহীনভাবে যুক্ত করা দেশটির অসংখ্য নাগরিক ও বিশ্বব্যাপী তাদের বন্ধু ও অংশীদারদের কঠোর পরিশ্রমকে খাটো করে। যারা শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে যেকোনো ধরনের ইসলামী খিলাফত ধারণার সঙ্গে দেশকে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে। প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক নেতা ও জনপরিচিত ব্যক্তিত্বদের এ সংবেদনশীল বিষয়গুলো সম্পর্কে বক্তব্য দেয়ার আগে প্রকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলা উচিত। তাদের এমন কোনো মন্তব্য করা উচিত নয় যা ক্ষতিকর ধারণাকে শক্তিশালী করে, ভয় উস্কে দেয় বা সামপ্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়। বিশ্বব্যাপী চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার যথাযথ তথ্য ও সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে যুক্ত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পাঠকের মতামত
ঠিকই বলেছে।
তুলসি দাদ ঠিকই বলেছেন। এদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টানদের উপর বিগত স্বৈরাচার সরকার ব্যাপকভাবে অত্যাচার চালিয়েছে।
She should visit Bangladesh and find out the actual peaseful situation. Being responsible, she should not listen to Indian narratives and pass such a irresponsible coment. In India Muslims are being tortured for decades, Mosques being demolished, what happened to facts?
তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্য যদি গুরুতর হয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে আপনাদের উচিত ছিল আরও কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো। কড়া প্রতিবাদ না করা আরও গুরুতর মিঃ তৌহিদ হোসেন।
Tulsi Gabard is a paid agent.