প্রথম পাতা
ভারতের মন্তব্য অযাচিত
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সংখ্যালঘু সমপ্রদায় নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালের করা মন্তব্য অযাচিত ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন।
রণধীর জয়সোয়ালের করা মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়সমূহ নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, এ বিষয়সমূহ একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এ ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন। বাংলাদেশ সব দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি যে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
সীমান্তে হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের বিজিবি-বিএসএফ’র মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সাম্প্রতিক যতগুলো এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জোরালোভাবে প্রতিবাদ করেছে। আমরা প্রতিবাদ করছি, আলোচনা করছি। আমাদের হাতে যা আছে তার সবগুলো ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে চালানো অপপ্রচারের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতীয় অপপ্রচার যা দেখছি সেগুলোর বেশির ভাগ হচ্ছে বেসরকারিভাবে। বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ তাদের নিজেদের মতো করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই ধরনের অপপ্রচার সঠিকভাবে মোকাবিলা করা খুব একটা সহজ ব্যাপার না। কিন্তু এই বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার মধ্যে আছে। কীভাবে ভালোভাবে রেসপন্স করা যায় সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিত আলোচনা করছে।
চলতি মাসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, ২৬শে মার্চ প্রধান উপদেষ্টার চীনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা। ২৭শে মার্চ তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার কনফারেন্সে উদ্বোধনের ব্যানারে অংশ নিবেন বলে আমরা জেনেছি। বিকালে চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এরপরের দিন চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ২৯শে মার্চ সকালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। এদিন রাতেই তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন।
সমপ্রতি প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য দেশের জন্য বিপজ্জনক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেয়ার পর আমাদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ থাকে না। শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক পত্রের জবাব দিয়েছে কি না এবং না দিয়ে থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে রফিকুল আলম বলেন, এটার বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টা সমপ্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জবাব দিয়েছেন। তারপরও আমরা বলছি, আমরা ভারতের কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাবলিকলি একটা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
সমপ্রতি বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক নিয়ে মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, গত ৬-৭ই মার্চ কলকাতায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গঙ্গার পানিবণ্টনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কারিগরি পর্যায়ের সভায় মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্যার পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, সীমান্ত নদীগুলোকে কেন্দ্র করে দুই দেশের পরিকল্পনার বিষয়টি এবং আরও অনেক বিষয়। তিনি বলেন, কিছু বিষয়ের আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্তে না আসতে পারার কারণে বৈঠকের পর কোনো মিনিটসে সই করা হয়নি। তবে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। কোনো সভায় দু’পক্ষ এক বা একাধিক বিষয়ে একমত না হলে মিনিটস স্বাক্ষর নাও হতে পারে। অতীতেও বিভিন্ন সভায় এ রকম ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষ পরে কূটনৈতিক মাধ্যমে মতৈক্যের ভিত্তিতে এটি স্বাক্ষর করার প্রচেষ্টা নেবে।
পাঠকের মতামত
এ ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।---সরকারি পদে থেকে বাংলাদেশের সাথে পার্শ্ববর্তী দেশের অংশ জুড়ে দিয়ে ম্যাপ প্রকাশ করা, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের দিয়ে চার দিনের ভিতরে কলকাতা দখল করার হুমকি দেওয়া এগুলো বাস্তবতার কি প্রতিফলন ছিল?নিজের মুখ আগে আয়নায় দেখুন!
Boycott India and it's dalal
Please try to learn diplomatic norms of behavior when you talk about other neighbour. Our experience is you never learn. Stop interfering our way of running our Nation
Good Job! Well Done!! Bravo!!!