খেলা
পিএসজি’র বিপক্ষে বিদায়ী ম্যাচকে ক্যারিয়ারের সেরা বলছেন স্লট
স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবারএবার বীরত্বের গল্প লিখলেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। চ্যাম্পিয়নস লীগে প্রথম লেগে অতিমানবীয় হয়ে ওঠেন লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন বেকার। মঙ্গলবার শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে দেয়াল হয়ে উঠলেন দোন্নারুম্মা। অ্যানফিল্ডে শুরুতেই এগিয়ে যায় প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। লিভারপুল আধিপত্য বিস্তার করলেও চীনের প্রাচীর হয়ে রইলেন ইতালিয়ান গোলকিপার। খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানেও দু’টি সেভ করে জয়ের নায়ক দোন্নারুম্মাই। ৪-১ গোলে টাইব্রেকারে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটল পিএসজি। অলরেড বস আর্নে স্লটের মতে, তার দীর্ঘমেয়াদি কোচিং ক্যারিয়ারে এটিই সেরা ম্যাচ। শেষ ষোলোর প্রথম লেগে নিজেদের ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের পরও জয় থেকে বঞ্চিত থাকে পিএসজি। ১-০ গোলে হারের পর ফিরতি লেগেও অসাধারণ ফুটবল খেললো প্যারিস। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগের নকআউটে সবশেষে ৬ ম্যাচের প্রথম লেগ হারলেও দ্বিতীয় লেগে জিতে পরের ধাপে গেল পিএসজি। আগের দুবার ২০২০ -এ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও গতবছর বার্সেলোনার বিপক্ষে। অন্যদিকে অ্যাওয়ে ম্যাচে প্রথম লেগ জিতেও ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ হেরে এই প্রথম ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে বিদায় নিল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে এদিন ১৯টি শটের মধ্যে কেবল ৩টি লক্ষ্যে রাখতে পারে স্বাগতিকরা। বিপরীতে ২১টির মধ্যে ৮টি শটই লক্ষ্যে থাকে সফরকারীদের। ঘরের মাঠে শুরুতে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে লিভারপুল। প্রথম ছয় মিনিটের মধ্যেই দারুণ দু’টি সুযোগ তৈরি করেন মোহাম্মদ সালাহ। দশ মিনিটের মধ্যে আরও চারটি সুযোগ তৈরি করে লিভারপুল। তবে কোনো শটই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি অলরেডরা। চাপ সামলে নিয়ে ধীরে ধীরে আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে পিএসজি। দ্বাদশ মিনিটে কাঙ্ক্িষত গোলের দেখা পেয়ে যায় প্যারিসিয়ানরা। ব্র্যাডলি বার্কোলার দিকে বল বাড়িয়ে দ্রুত ডি বক্সের মধ্যে ঢুকে যান উসমান দেম্বেলে। ফিরতি পাস পেয়ে লিভারপুলের দুই ডিফেন্ডার ও গোলকিপার আলিসনের মাঝ দিয়ে বল বের করে ফেলেন দেম্বেলে। ফাঁকা জালেই হালকা ছোঁয়ায় জালে বল জড়ান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়নস লীগে ২০১৭’র সেপ্টেম্বরের পর দ্রুততম সময়ে গোল হজম করল লিভারপুল। অসাধারণ কিছু সেভ দেন দোন্নারুম্মা। বিরতির পর দু’দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও আর জাল খুঁজে পায়নি কেউই। নির্ধারিত সময়ের পর দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ সমতায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ১০৯তম মিনিটে দেম্বেলের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে দেন আলিসন। ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। ২০২০ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভাঙেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা।
জিয়ানলুইজি বুফনের উত্তরসূরি এবার ভাঙলেন ইংলিশ জায়ান্টদের হৃদয়। লিভারপুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শট নিতে যাওয়া দারউইন নুনিয়েজ ও কার্টিস জোনসের শট আটকে দেন ইতালিয়ান এই গোলকিপার। পিএসজির হয়ে শট নেন ভিতিনহা, গনসালো রামোস, দেম্বেলে ও দিসিয়ার দুয়ো। প্যারিসিয়ানদের চতুর্থ শটেই নিশ্চিত হয়ে যায় খেলার ফলাফল। ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস স্লট বলেন, ‘আমার অধীনে থাকা ম্যাচগুলোর মধ্যে এটিই জীবনের সেরা ম্যাচ। লিভারপুলের মতো এত সমৃদ্ধ ইতিহাস ম্যানেজার হিসেবে আমার আর নেই। তবে ম্যাচে দু’দলই অবিশ্বাস্য পর্যায়ের ছিল।’