অনলাইন
ছাত্রদের নতুন দল
সদস্য সচিব পদ নিয়ে টানাপোড়েন
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ সপ্তাহ আগে) ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আওয়াজ তুলে শুরুতেই বিভাজিত ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। শীর্ষ পদ নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্দরে চলছে অনাস্থার সুর। আহ্বায়ক পদ নিয়ে কোনো মতানৈক্য না থাকলেও সদস্য সচিব পদের দাবিদার একাধিক ব্যক্তি। যারা সবাই গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে হতাশ নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন, শুরুতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সংগঠন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। যা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অন্তরায় হবে। বিষয়টির সমাধানে আজ বৈঠকে বসছে নাগরিক কমিটি।
আগামাী ২৪শে ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল। শুরুতে আহ্বায়ক কমিটির গঠন করা হবে। কমিটিতে অহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক নম্বর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। যিনি বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। দলের দায়িত্ব নেয়ার আগে নাহিদ উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। নাহিদের বিষয়ে ঐকমত্য হলেও সদস্য সচিব পদ নিয়ে বিভক্ত ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। একটি অংশ চাইছে নতুন দলের সদস্য সচিব হবেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। যিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান সদস্য সচিব। আরেক অংশ চাইছে আন্দোলনের অন্যতম আরেক মুখ আলী আহসান জুনায়েদকে। তিনি বর্তমানে নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও এ পদের দাবিদার রয়েছেন আরও দুজন- তারা হলেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আখতার ও জুনায়েদের মধ্য থেকে কেউ এ পদে না আসতে পারলে এদের নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছে। আবার আখতার-জুনায়েদ দুজনের কাউকে চান না এমন একটি অংশও রয়েছে নাগরিক কমিটিতে। যারা নাসীরকে এ পদে দেখতে চান। এ ছাড়াও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের অনুসারীরা চান এ পদে মাহফুজের বড় ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহবুব আলম মাহিরকে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে বলেন, শুরুতে এমন অনাস্থার সংকট তৃণমূলে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। মানুষ আস্থা হারাবে নতুন দলের প্রতি। আমরা চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক। কিন্তু কেউ কেউ এ পদে একমাত্র নিজেই যোগ্য বলে ধরে নিচ্ছেন। যেটি ঠিক নয়। তিনি বলেন, ইনক্লুসিভ পলিটিক্স করতে এসে পদের জন্য গো ধরে বসে থাকা কোনো সংগঠনের জন্য সুখকর নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নেতা বলেন, একটি অংশ শীর্ষ চার পদের দুটিই চায়। কিন্তু আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না। আমরা শুরুতে সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চাই না।
অন্যদিকে আরেক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংগঠনে আমাদের বিশাল কন্ট্রিবিউশন রয়েছে। আমাদের অনুসারী অনেকে রয়েছেন। নির্বাচন দিলে আমাদের লোকই এ পদের জন্য নির্বাচিত হবেন। কিন্তু সেখানে নির্দিষ্ট কাউকে সরাসরি মনোনীত করার বিরোধী আমরা।
এদিকে গতরাত থেকে আখতার ও জুনায়েদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। কেউ লিখছেন আখতারকেই তারা নেতা মানেন আর কাউকে নয়। কেউ লিখছেন- আখতারকে মাইনাস করতে চায় কে? বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ লেখেন- আমার ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিতে আসা আখতার হোসেনের হাত ধরেই। এদেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি উনার ভালোবাসা সবসময় আমাদের মুগ্ধ করেছে। ঢাবি ক্যাম্পাসে একক নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সবসময় রুখে দাঁড়িয়েছেন। বারবার হামলার সম্মুখীন হয়েছেন, আহত হয়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু সঙ্গীদের একমুহূর্তের জন্যেও ছেড়ে যাননি। কোনো যদি-কিন্তু ছাড়া সচেতন নাগরিক হিসেবে আখতার হোসেনের পাশে আছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সানজানা আফিফা অদিতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্যে সংগঠনগুলোর প্রধান পদগুলোতে কাদের দায়িত্ব দেয়া হবে তা অবশ্যই ওই সংগঠনের সকলের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। অন্তত প্রথম দশজনের সিদ্ধান্ত মানুষের উপর ছেড়ে দিতে হবে। আগের মতোই যদি একজন দুইজনই সব সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সঙ্গে আমার যাত্রা দীর্ঘায়িত করবো না।
পাঠকের মতামত
নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারি দরে থাকলে দুই মাসের মাথায় এ দলের পরিনতি হবে ভিপি নুরের দলের মতো। কারন নাসিরুত্দিন অলরেডি একটি বড় দলের কাছে বিক্রি হয়ে আছে
নাসির উদ্দীন পাটোয়ারীই সদস্য সচিব পদের জন্য যোগ্য
আখতার হোসেনকেই উত্তম মনে করি।
আখতার হোসেনকেই উত্তম মনে করি।
অপরিপক্ক রাজনীতি সামনে হাটার সক্ষমতা নাই আবার অহংকারী মেজাজের কারণে পরিপক্ক রাজনীতি মেনে পিছনে যেতেও চায়না। মাঝখানে থেকে পায়ে পাড়ায়। এতে পরিপক্ক রাজনীতিবিদদের সুস্থ চিন্তার ব্যাঘাত ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ ও জাতি।
পদের লোভ আর গদির লোভে রাজনীতি করলে হাসিনা- খালেদার পরিনতি ভোগ করতে হবে....
নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা থাকলেই ভাল হত। আহবায়ক পদে অন্য কেউ দায়িত্ব গ্রহণ করত। নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা থাকলে সেটা সংগঠনের জন্যও ভাল হত।
আহতরা চিকিৎসা বঞ্চিত..নিহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতেও পাশে নেই কেউ! অথচ সেই আবেগকে পুঁজি করে আসছে তথাকথিত ছাত্রদের দল। আশ্চর্য!
এরা হলো দুষ্টু শাপ। দেখতে সুন্দর হলেও বিষধর। এদের অধিকাংশই রামদা, ক্ষুর আর চাইনিজ কুড়ালের হোতা...মুখে মুখোশ মানে মুখে মধুর কথা কিন্তু কাজে সব ফ্যাসিবাদির মতই...দখলদারি, চাদাবাজি, চেয়ার দখল, মব জাস্টিস সবকিছুতেই এদের রাজত্ব শুরু হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই ফ্যাসিবাদির তকমা লাগাবে মানে সেই রকম বাক-স্বাধীনতা চলছে এখন...
আকতার হোসেন যোগ্য
ওদের দেখছি নিজেদের মধ্যেই মিল নেই ! তাহিলে ওরা কিভাবে নেতৃত্ব দিবে ? নিজেদের মধ্যেই পদের জন্য লোভ কাজ করছে। ভবিষ্যতে কী হবে?
আখতার সাহেবের অবদান অনেক বেশি। তাকে সদস্য সচিব হিসেবে আল্লাহ তায়া’লা যেন খুব কবুল করেন।
আমার মতে যেহেতু ছাত্র শক্তি কোরাম থেকে নাহিদ আসছেনই। সেক্ষেত্রে এক্স শিবির, এক্স অধিকার পরিষদ আর ১৩ সংগঠন থেকে আলি জোনায়েদকে সদস্য সচিব করলেই ব্যালেন্স হয়৷ আকতারকে আহবায়ক আর নাহিফকে মূখ্য সংগঠক করলে সকলেই নিজেদের হিস্যা বুঝে পায়।
এখনি এই অবস্থা হলে ক্ষমতায় যাবার পর কী করবে ?
তাঁরা যদি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান, তাহলে নেতৃত্বের সকল পর্যায় থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করে তাদের মধ্যে গণভোট দিয়ে কে পদে যাবেন সেটা ঠিক করা উচিত। না হলে তাদের দল গঠনের উদ্যোগ গোড়াতেই দেশের প্রচলিত রাজনীতি থেকে যে আলাদা সেটা প্রমাণ হবে না।
হঠাৎ করে যে কোন একটি ইস্যু কে নিয়ে আন্দোলন করে সংগঠন করতে গেলে এটাই হওয়ার কথা,তাই এভাবে দল করে কিংস পার্টি করলে জনগণ তা গ্রহণ করবে না। নিজেরাই ঝগড়া করে ভেঙ্গে যাবে।
আমার মনে হয় বর্তমানে যে ছাত্র গুলো নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের করছেন তাদের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করতে হবে না হলে সামনের দিনগুলোতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে নিজেদের ভিতর
আলী আহসান জুনায়েদ কে সদস্য সচিব হিসেবে দেখতে চাই।
১০০% গণতন্ত্র কায়েমের স্বার্থে কাউন্সিল করে ভোট করা হোক।
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে এই পদে নিয়োগ দিলে সঠিক ও যুক্তিযুক্ত হবে।
ভেবে ছিলাম ছাত্রদের নতুন দলকে সমর্থন এবং ভোট দিব কিন্তু তাদের আচরন এমন কেন ?