ঢাকা, ১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

রিকশা দুর্ঘটনা

পঙ্গু হাসপাতালে দিনে আসছে ১১ জনের বেশি রোগী

মোহাম্মদ রায়হান
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবারmzamin

ফাইল ছবি

বাড়ছে রিকশা দুর্ঘটনা। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে গুরুতর দুর্ঘটনা বাড়ছে। ২০২৪ সালে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে রিকশা দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দিনে ১১ জনের বেশি রোগী আসছেন। এ হাসপাতালে কেবলমাত্র ২০২৪ সালে রিকশায় আহত হয়ে ৪২৭৭ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তার মধ্যে ৩১৯১ জন পুরুষ এবং ১০৮৬ জন নারী। হাসপাতালে আসা রোগীদের বেশির ভাগেরই আঘাত গুরুতর। হাত বা পা ভাঙা।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে রিকশায় আহত হয়ে ২৭১ আহত রোগী এসেছেন। যার মধ্যে ১৯৮ জন পুরুষ ও ৭৩ জন নারী। ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৩৪ জন আহত রোগী এসেছেন। যার মধ্যে ৩১০ জন পুরুষ ও ১২৪ জন নারী। মার্চে ৪৪৭ আহত রোগী এসেছেন, যার মধ্যে ৩৪৪ জন পুরুষ ও ১০৩ জন নারী। এপ্রিলে ৪২৬ জন রোগীর মধ্যে পুরুষ আহত হয়েছেন ৩১১ জন এবং নারী ১২৬ জন। মে মাসে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৩১০ জন পুরুষ ও ৬৮ জন  নারীসহ ৩৭৮ জন রোগী এসেছেন, জুন মাসে মোট আহত রোগী এসেছেন ৩৭৫ জন, যেখানে  ২৭৫ জন পুরুষ ও ১০০ জন ছিলেন নারী। জুলাই মাসে হাসপাতালে রিকশায় আহত হয়ে আসা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩০৮ জন। যেখানে ২৩৪ জন পুরুষ এবং ৭৪ জন নারী আহত হয়েছিলেন। আগস্টে একই বছর মোট ২৪২ জন রোগী আহত হন। আহতদের মধ্যে ১৯৬ জন পুরুষ ও ৪৬ জন নারী ছিলেন। তাছাড়া সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে আহত রোগী ও নারী-পুরুষের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে- ২৪৯ এ পুরুষ ১৭০, নারী ৬৯ জন, ৩৪০ জন পুরুষ ২৪৪ এবং নারী ৯৬ জন, ৩৫৯ জনে পুরুষ ২৭২ ও নারী ৮৭ জন, ৪৫৮ জনে পুরুষ ৩৩১ এবং নারী আহত হয়েছেন ১২৭ জন।   


তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রিকশায় আহত রোগীদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীর চেয়ে অনেক বেশি। অন্যদিকে আহতের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় বছরের শেষে রেকর্ডসংখ্যক রোগী এসেছেন হাসপাতালে। মোট ৪৫৮ জন রোগী এসেছেন ডিসেম্বরে। রিকশা দুর্ঘটনায় পঙ্গু হাসপাতালে ডিসেম্বর মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৫ জনের বেশি রোগী এসেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী এসেছেন ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং এপ্রিল মাসে। এপ্রিলসহ অন্য মাসগুলোতে গড়ে ১৪ জন বা তার বেশি রোগী এসেছিলেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। 

২০২২ সালের এক জরিপ বলছে শুধুমাত্র রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করছে। সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই বিপুলসংখ্যক রিকশার মধ্যে নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ২ লাখ ১২ হাজার ৯৯৭টি রিকশার। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২২ সালের আগের তিন বছরে ঢাকায় রিকশার সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখের মতো। অর্থাৎ, ২০১৯ সালের দিকে ঢাকায় রিকশার সংখ্যা ছিল ১১ লাখের মতো।    

দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার দুর্ঘটনা বেশি হয়। কারণ, এসব বাহন বিশ্বের অন্যতম ধীরগতির শহর ঢাকায় চলাচলের জন্য একেবারেই উপযুক্ত না। ব্যাটারি-রিকশা ঘণ্টায় গড়ে ৩০ কিলোমিটার বেগে চলে। এসব রিকশাচালকদের সড়ক সম্পর্কে জ্ঞান খুব কমই থাকে। বেপরোয়া গতি, গতি নিয়ন্ত্রণে ব্রেকের সমস্যা ইত্যাদি কারণে ব্যাটারচালিত রিকশায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। 

বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেন, প্যাডেলচালিত রিকশার চেয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় আহত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ, এগুলো উচ্চগতির জন্য উপযুক্ত না। প্যাডেলচালিত রিকশার চাইতে এসব রিকশার গতি বেশি থাকে। বেশি গতিতে দুর্ঘটনা ঘটলে আহত হওয়ারও ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া চালক যারা চালায় তারা ডানে বামে না তাকিয়েই চালায়। ব্রেক করে না ঠিকমতো, তাই দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেশি।

পাঠকের মতামত

তবুও ব্যাটারীচালিত রিক্সা চলবে।

তপু
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status