ঢাকা, ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

সয়াবিনের বাজারে লুকোচুরি

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার

পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে বাকি দুই সপ্তাহ। এর আগেই অস্থিরতা শুরু হয়েছে বাজারে। কিছু পণ্য স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে থাকলেও চাল ও তেল নিয়ে অস্থিরতা কাটছে না। বেড়েই চলেছে চালের দাম, অন্যদিকে সংকট দেখা দিয়েছে সয়াবিন তেলের। গতকাল রাজধানীর শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। 

চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে বিভিন্ন প্রকার চালের দাম। বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর বি আর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া শীতকালে পিঠা-পুলির আয়োজনে আতপ চালের চাহিদা থাকায় আতপ চালের দামও বেড়ে ৬০ টাকায় ঠেকেছে। চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মিল মালিকদের দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা। রায়েরবাগ এলাকার রাশেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাশেদ হোসেন বলেন, এখন আমনের মৌসুম, তাছাড়া ভারত থেকেও চাল আসছে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই মিলাররা দাম বাড়াচ্ছেন। 

এদিকে বাজারে বোতলজাত ভোজ্য তেলের সংকট কাটছেই না। বিভিন্ন পাইকারি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও ভ্যারাইটিজ দোকানে বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানদাররা বলছেন, কোম্পানিগুলো তেলের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য পণ্য যেমন: আটা, ময়দা, চিনি, মুড়ি এবং চাল নেয়ার শর্ত জুড়ে দেয়। তাই অনেক দোকানে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বোতলজাত ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৮৫০ এবং ১ লিটার ১৭৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা পামওয়েল প্রতি লিটার ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

গোবিন্দপুর ভাই ভাই ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক সোবহান বলেন, এক মাস ধরেই বাজারে তেলের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। কোম্পানিগুলো তেলের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য পণ্য নেয়ার শর্ত জুড়ে দেয়। যাদের পাইকারি দোকান তারা সেগুলো রাখতে পারে, আমাদের দোকানে তো সব পণ্য চলে না, তাই তেল দোকানে রাখতে পারি না। সরকারের উচিত এটার তদারকি করা।
ওদিকে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া মাংসের দাম আবারো আগের দামে ফিরেছে। শনির আখড়া বাজারের মোশাররফ মাংস বিতানের মোশাররফ মিঞা জানায়, চাহিদা থাকায় গত দু’দিন প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করেছি ৭৫০ টাকা থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। যা এক দিনের ব্যবধানে ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা কমে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। তিনি জানান, শবেবরাতে আমল করে ক্রেতারা বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাই আজকে পূর্বের রয়ে যাওয়া মাংসই বিক্রি করছেন তিনি। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম শবেবরাত উপলক্ষে এক লাফে বেড়ে ২১০ টাকায় ঠেকে। তবে গতকাল এই মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। আর সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছের দামও কিছুটা কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি পাঙাশ ১৭০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৪৬০ টাকা, শিং ৩২০ থেকে ৪০০ শত টাকা, চিংড়ি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৩০০ টাকা, পোয়া ২৬০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, টাকি ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
রমজানকে সামনে রেখে দোকানগুলোতে ছোলা ও খেজুরের বিক্রি বেড়েছে। সরকার খেজুরের ভ্যাট কমালেও পণ্যটির দাম অনেক বেশি রাখা হচ্ছে। পাইকারি বাজারে জাইদি খেজুর ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। এ ছাড়া বাংলা খেজুর প্রতি কেজি ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ছোলা ১১০ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, মসুরের ডাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সবজির বাজারে এখনো স্বস্তি রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শালগম ১২ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা, টমেটো কেজি প্রতি ২০ টাকা, আলু ২০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৪০ টাকা, দেশি শসা ৫০ ও খিরা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাউয়ের পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, দেশি নতুন রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ এবং আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status