খেলা
ছক্কার রেকর্ড তানজীদের সামনে শুধু গেইল
স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বল, চিটাগং কিংসের পেসার শরিফুল ইসলাম করলেন শর্ট লেন্থ ডেলিভারি। প্রিয় পুল শটে মিড উইকেট দিয়ে বলকে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেললেন ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনার তানজীদ তামিম। এই ছক্কাতেই বিপিএলের নির্দিষ্ট এক আসরে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড নিজের নামে লিখিয়ে নেন জাতীয় দলের এই ওপেনার।
ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে এবারের বিপিএলটা দুর্দান্ত কাটছে তানজীদ হাসান তামিমের। দল ভালো না করলেও ব্যাট হাতে তিনি রান করছেন ধারাবাহিকভাবে। ১০ ম্যাচে ৪২০ রান করা এই ওপেনারই আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। গতকাল চিটাগং কিংসের বিপক্ষে তিনি খেলেন ৫৪ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৯০ রানের অপরাজিত ইনিংস।
মাঠে নামার আগে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ ছক্কায় বাংলাদেশীদের রেকর্ড থেকে দুই ছক্কা দূরে ছিলেন তামিম। ঢাকার রান তাড়ায় তৃতীয় ওভারে সৈয়দ খালেদ আহমেদকে ছক্কা মেরে এক ধাপ এগিয়ে যান তিনি, পরে শরিফুল ইসলামকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে ছুঁয়ে ফেলেন হৃদয়কে। এতদিন এই রেকর্ড ছিল শুধুই হৃদয়ের। গত বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে ১৪ ম্যাচে ২৪টি ছক্কা মেরেছিলেন হৃদয়। এক বিপিএলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছক্কার কীর্তি ছিল সেটিই।
যে ওভারে হৃদয়কে ছুঁয়েছেন, সেই ওভারেই টপকেছেন তামিম। অনূর্ধ্ব’১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের এক সতীর্থ শরিফুল ইসলামকে ছক্কা মেরেই আরেক সতীর্থ হৃদয়কে ছাড়ান তামিম। এরপর ক্রমশ নিজের রেকর্ডকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির দুই ওভারে দুটি ছক্কায় গতকাল তামিমের ফিফটি পূর্ণ হয় ২৮ বলে। এরপর পাকিস্তানি হুসাইন তালাতকে ছক্কা মেরে ম্যাচে আধ ডজন ছক্কা পূরণ হয় তার। ম্যাচের শেষ দিকে খালেদ আহমেদকে হাঁকান ম্যাচে নিজের সপ্তম ছক্কা। সবমিলিয়ে এবারের বিপিএলে ১০ ম্যাচে তামিমের ছক্কা হলো ২৯টি।
বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড ক্রিস গেইলের। ২০১৭ আসরে ১১ ম্যাচে ৪৭টি ছক্কা মেরেছিলেন ‘ইউনিভার্স বস।’ গ্রুপ পর্বে ঢাকার আর ম্যাচ বাকি ২টি, আর যদি অসম্ভকে সম্ভব করে তারা ফাইনালও খেলে তাহলে ম্যাচ থাকতে পারে সর্বোচ্চ ৫টি। গেইলকে
ছুতে সেক্ষেত্রে তামিমের প্রয়োজন ১৮টি আর টপকাতে ১৯টি। কাজটা অনেক বেশি কঠিনই বটে। তামিম অবশ্য সেদিকে নজরও রাখতে চান না। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি কখনও এগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। জাস্ট আমাদের সামনে দুইটা ম্যাচ আছে। দুইটা ম্যাচ কিভাবে ভালোভাবে শেষ করতে পারবো সেটাই প্ল্যান থাকবে আমার। যদি হয়ে যায় , হয়ে যেতে পারে কিন্তু আমি নরম্যাল যে প্ল্যানে খেলি সেই প্ল্যানেই খেলার চেষ্টা করবো।’ এত ছক্কা মারার রহস্যের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটার পিছনে কোনো রহস্য নেই। আমি ন্যাচারালি এমন খেলি। নিজের স্ট্রং জোন নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। জাস্ট নরম্যাল প্ল্যানেই খেলার চেষ্টা করি। কোনো রহস্য নেই এতে।’
সবমিলিয়ে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডে তামিম এখন দুই নম্বরে। ২০১৯ আসরে সিলে সিক্সার্সের হয়ে ১১ ম্যাচে ২৮ ছক্কা মারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান, একই আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচে একই দেশের আন্দ্রে রাসেলের ব্যাট থেকে এসেছিল ২৮ ছক্কা। দু’জনই আছেন যৌথভাবে ৩ নম্বরে।