শেষের পাতা
ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্টার
৯ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবারসাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে বাংলাদেশের। ক্রিকেট মাঠে যা বহু পুরনো। ক্রিকেটে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানে অন্য এক উত্তেজনা। আর সেই ম্যাচটি যদি হয় কোনো ফাইনাল, তবে উত্তেজনার পারদ চড়ে যায় অনেক উপরে। দুবাইয়ে গতকাল এমনি এক ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে আবারো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। গত বছর ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়ে প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জেতে বাংলাদেশের যুবারা। টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪৯.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে সংগ্রহ করে ১৯৮ রান। এই রানটাই ভারতের জন্য পাহাড়সম হয়ে যায় বাংলাদেশের পেসারদের দাপটে। ভারত ৩৫.২ ওভারে অলআউট হয় ১৩৯ রানে। যুব এশিয়া কাপে ৯ বার ফাইনাল খেলে এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে নিতে পারলো না ভারতীয়রা।
এদিন দ্বিতীয় ওভারে আয়ুশ মাত্রেকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন পেসার আল ফাহাদ। পঞ্চম ওভারে ক্রিকেটের নতুন বিস্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশীকে ফিরিয়ে ভারতকে বড় ধাক্কাই দেন বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধা। সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬ বলে ৬৭ রান করা ১৩ বছর বয়সী সূর্যবংশী শিহাব জেমসের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৭ বলে ৯ রান করে। ভারতীয়দের রানের হিসেবে ২০ রান যোগ হতেই আবার উল্লাসে মাতেন বাংলাদেশের যুবারা। এবার পেসার রিজান হাসানের শিকার আন্দ্রে সিদ্ধার্থ (২০)। সেখান থেকেই ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান কেপি কার্তিকেয়াকে নিয়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। তবে ২১তম ওভারে তিন বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের মুঠোয় তুলে দেন আরেক পেসার ইকবাল হোসেন ইমন। ইকবালের দারুণ দুটি বলে উইকেটকিপার ফরিদ হাসানের ক্যাচ হন কার্তিকেয়া (২১) ও নিখিল কুমার (০)। নিজের পরের ওভারে হরবংশ পাঙ্গুলিয়াকেও ফরিদের গ্লাভসে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন ইকবাল। তিন ওভার পর আল ফাহাদ আরেকটি উইকেট নিয়ে ভারতের স্কোরটাকে ৯২/৭ বানিয়ে দেন। তবে গলার কাঁটা হয়ে তখনো টিকে ছিলেন ভারতের অধিনায়ক আমান। বাংলাদেশ সেই কাঁটা উপড়ায় ৩২তম ওভারে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের অফ স্পিনে বোল্ড হন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক। ১১৫ রানে অষ্টম উইকেট হারানো ভারত এরপর শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন ইকবাল হোসেন ইমন ও আজিজুল হাকিম। ২ উইকেট দখল করেন আল ফাহাদ। ১টি করে উইকেট নেন মারুফ মৃধা ও রিজান হোসেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন। আসরে ১৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরাও হয়েছেন বাংলাদেশের এই পেসার।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলা বাংলাদেশের ব্যাটাররা ফাইনালে ক্রিজে থিতু হতে পারছিলেন না। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারও ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে। এদিন ম্যাচে সপ্তম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে করেন ১৬ বলে ১ রান। তিনে নামা অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমও হতাশ করেন। পুরো আসরে মুগ্ধতা ছড়ানো বাংলাদেশের এই ব্যাটার ফাইনালে করেন মাত্র ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি। ৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফেরেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান (৪৭) নিজেও। মিস করেন হাফসেঞ্চুরি। দলীয় ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করেন ৩০ রান।
Congratulations
আলহামদুলিল্লাহ্ সব খেলওয়ার ও সফরকারীরা দলের সব সদস্যদের প্রতি রইল অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।