ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ রজব ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

মাধবপুরে থেকেও ঢাকায় হত্যা মামলার আসামি

স্টাফ রিপোর্টার
২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবারmzamin

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের বাসিন্দা এখলাছুজ্জামান ভূঁইয়া (৪৯)। এসএসসি পাসের পর থেকেই তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছিলেন জগদীশপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি উপজেলা বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন বিএনপি’র রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। উপজেলা ও জেলা বিএনপিও তার কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ও তিনি ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন সময় তিনি এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ৫ই আগস্ট সরকার পতনের দিনও তার অবস্থান ছিল নিজ এলাকায়। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি এলাকায় বিজয় মিছিলেও অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে তাকে ৫ই আগস্টের একটি হত্যা ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতিরঝিল থানার একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। এলাকায় থেকেও তিনি ঢাকায় হত্যা মামলার আসামি এটা জানার পর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলেও তিনি বিভিন্ন মামলা-হামলার শিকার হয়ে বাড়িছাড়া ছিলেন। 

এখলাছুজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রদল থেকে শুরু করে এখন বিএনপি’র রাজনীতি করি। ডিগ্রি পাসের পর ঠিকাদারি ও সরবরাহকারী ব্যবসাও করি। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ব্যবসায়িকভাবে কোনো সুবিধা করতে পারিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা বিভিন্ন রকম মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতো। কিন্তু একটা আশায় ছিলাম। হয়তো একদিন এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন হবে। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। ঠিকই সরকার পতন হলো। অথচ আমাকে এখনো মিথ্যা মামলায় আসামি করা হলো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, নিজের অবস্থানে থেকে যতটুকু সাপোর্ট দেয়া প্রয়োজন দিয়েছি। আন্দোলনের সময় ঢাকাও যাইনি। সরকার পতনের দিনও এলাকায় থেকে বিজয় মিছিল করেছি। তিনি বলেন, জাকারিয়া চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি যিনি আমাদের এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তিনিই আমাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা মামলার আসামি করেছেন। তার সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক কিছু ঝামেলা চলছিল। ২০২২ সালেও আমাকে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তদন্ত করে পুলিশ এর কোনো সত্যতা পায়নি। তিনিই আমাকে পরিকল্পিতভাবে হাতিরঝিল থানার মামলায় নাম দিয়েছেন। অথচ তিনি নিজেও কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি। বিষয়টি আমার জন্য খুবই কষ্টদায়ক। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তাদের কিছু দুষ্কৃতকারী এরকম জঘন্য কাজ করে যাচ্ছে টাকা খরচ করে। দল যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তিনি ডিএমপি কমিশনার, হবিগঞ্জের সাবেক এসপি, অনেক মন্ত্রী, এমপি’র প্রভাব খাটিয়ে হয়রানি করেছেন। আমাকে হত্যা মামলার আসামি করার পর তিনি এলাকার অনেকের কাছে ফোন করে বলেছেন, আমাকে মামলার আসামি করেছেন। ফেসবুকেও হুমকি দিয়েছেন আমার নামে আরও মামলা হবে। তিনি বলেন, আমি গণহত্যা মামলার বিষয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছি। এ ছাড়া মাধবপুর উপজেলা ও জেলা বিএনপিও আমার নামে পজেটিভ প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে। এ ছাড়া আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলেছি। তবে এখুনি জামিন নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

হাতিরঝিল থানার মামলার এজাহার ঘেঁটে দেখা গেছে, এখলাছুজ্জামানকে যে মামলায় আসামি করা হয়েছে ওই মামলার নং ২১। মামলাটি রুজু করা হয়েছে ২৭শে অক্টোবর। আসামির সংখ্যা ১৯৫ জন। এখলাছুজ্জামানকে ১৬৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলায় বাদী হয়েছেন ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের মোজারুল নামের এক ব্যক্তি। ঘটনার স্থান দেখানো হয়েছে হাতিরঝিল থানাধীন বিটিভি ভবনের উল্টো পাশে মোল্লা টাওয়ারের সামনে। মামলার এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আসামি করা হয়েছে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Bangladesh Army

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status