ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ রজব ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

কারা কর্তৃপক্ষের ভুলে মুক্তি পেয়ে লাপাত্তা দুই ফাঁসির আসামি

স্টাফ রিপোর্টার কুমিল্লা থেকে
১ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের ভুলে লক্ষ্মীপুরের একটি ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সানাউল্লাহ ও মো. আবদুর রহিম নামে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মুক্তি লাভ করে আত্মগোপনে চলে গেছে। গত ১২ই নভেম্বর এ ঘটনা ঘটলেও পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ নিয়ে কারাগারসহ সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় চলছে।

তবে একই মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি মো. হারুন ও আবুল কাশেম ওরফে কাশেম মাঝি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে। মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়া ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দণ্ডাদেশ ও মুক্তির আদেশ দেয়া লক্ষ্মীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানায় ২০১৪ সালের ২৯শে ডিসেম্বর সানাউল্লাহ, আবদুর রহিম, মো. হারুন, আবুল কাশেম ওরফে কাশেম মাঝিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় ২০১৭ সালের ২৯শে মার্চ লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ওই ৪ আসামির ফাঁসির আদেশ হয়। সকল আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের রায় কার্যকরের জন্য সানাউল্লাহ এবং রহিমকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এদের মধ্যে সানাউল্লাহ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরবসু গ্রামের মনা ব্যাপারীর ছেলে এবং আবদুর রহিম নোয়াখালী জেলার সুধারাম উপজেলার আন্ডারচর গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে। আর বাকি ২ আসামি মো. হারুন ও আবুল কাশেম ওরফে কাশেম মাঝিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে পাঠানো হয়। এরই মাঝে আপিলে আসামিপক্ষ খালাস চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করে। আদালত ৪ আসামিকে খালাস দেন। এতে তাদের খালাস আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেলাল আহমেদও উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আদালত ওই আসামিদের মুক্তির আদেশের বিরুদ্ধে ৮ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।

সূত্র জানায়, এ আদেশের কপি উচ্চ আদালত থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার ও দণ্ডাদেশ দেয়া লক্ষ্মীপুরের ওই আদালতেও প্রেরণ করা হয়। এদিকে লক্ষ্মীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক চলতি বছরের গত ৬ই নভেম্বর আসামিদের খালাসের আদেশ দেন। কিন্তু এ সময় উচ্চ আদালতের ৮ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ ছিল।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতের আদেশের ৬ দিন পর গত ১২ই নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষ তাদের মুক্তির ব্যাপারে আদালতের চূড়ান্ত খালাস আদেশটি পান। ওইদিন কারাগারের ডেপুটি জেলার তৌহিদুল ইসলাম লক্ষ্মীপুরের সংশ্লিষ্ট কোর্টের বেঞ্চ সহকারী জহুরুল আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে আসামিদের মুক্তির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত হন।
এমতাবস্থায় উচ্চ আদালতের ৮ সপ্তাহের স্থিতাবস্থা চলমান থাকা অবস্থায় ১২ নভেম্বর দুই আসামি সানাউল্লাহ ও আবদুর রহিমকে কুমিল্লা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পেয়েই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। তবে উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা চিঠি কেন আমলে নেয়া হয়নি এর উত্তর মিলেনি কারও কাছ থেকে।

এদিকে দুই আসামির মুক্তির বিষয়টি জানাজানি হলে কারাগারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তোলপাড় শুরু হয়।
অপরদিকে একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কারাগারে থাকা দুই আসামি মো. হারুন ও আবুল কাশেম প্রকাশ কাশেম মাঝির উচ্চ আদালতে স্থিতাবস্থার কারণে মুক্তি মিলেনি।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আব্দুল্লাহিল আল-আমিন সাংবাদিকদের বলেন, লক্ষ্মীপুর আদালতের নির্দেশে দুই আসামিকে মুক্তি দেয়া হয়। তারা ওই আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের স্থগিতাদেশের বিষয়টি আমার ‘নলেজে’ ছিল না।
চট্টগ্রাম কারা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতান বলেন, ‘বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ অবগত আছে। এ বিষয়ে কার ভুল ছিল বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Bangladesh Army

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status