প্রথম পাতা
উচ্চ দামে স্থির তেল-আলু-পিয়াজ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৩০ নভেম্বর ২০২৪, শনিবাররাজধানীর বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও উচ্চ দামে স্থির রয়েছে ভোজ্য তেল, আলু ও পিয়াজ। তবে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। অন্যদিকে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। মাছের দামও চড়া। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে বোতলজাত ভোজ্য তেলের সরবরাহে কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বেশির ভাগ দোকানে দেখা যায়নি। পাঁচ লিটারের বোতল থাকলেও বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দরে অর্থাৎ ৮১৮ টাকায়। তবে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। যে কারণে গত সপ্তাহে বেশি থাকলেও এখন পাম অয়েলের দাম লিটারে ১০ টাকার মতো কমেছে। প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকার আশপাশ। খোলা সয়াবিনের লিটার কিনতে খরচ হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৬৭ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। যেসব কোম্পানির তেল পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোও চাহিদার তুলনায় কম। বিশেষত এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ খুবই কম।ওদিকে
পিয়াজ ও আলুর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো দেশি ভালো মানের পিয়াজের কেজি ১১৫ থেকে ১২০, দেশি হাইব্রিডের কেজি ১১০ থেকে ১১৫ এবং ভারতীয় পিয়াজের কেজি ৯৮ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি নতুন আলু মানভেদে ৯০ থেকে ১১০ এবং পুরনো আলুর কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে বিক্রি হওয়া নতুন আলু ভারত থেকে আমদানি করা। স্থানীয় আলু ক্ষেত থেকে ওঠার আগ পর্যন্ত দাম কমার সুযোগ কম।
কাঁচা বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। বেড়েছে সরবরাহ। তবে সে তুলনায় দামে প্রভাব পড়েনি। গত সপ্তাহের তুলনায় কয়েকটি সবজির দাম বাড়লেও অধিকাংশ দামই অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের ঝাল কিছুটা কম থাকলেও এখন তা আরও বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। প্রতি কেজি গোল বেগুন ৭০ থেকে ১০০, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০, মানভেদে শিম ৫০ থেকে ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০, করলা ৭০ থেকে ৯০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০, উচ্ছে (ছোট জাত) ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউয়ের পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা ও শালগম ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পিয়াজের কলি ৮০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম তেমনটা বাড়েনি। কিছুটা কমেছে। কিন্তু শীতকালীন সব সবজি বাজারের এলেও সবজির দাম তুলনামূলক বেশি।
সবজি বিক্রেতা সফিউল আলম বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজি আছে। শীতকালীন সবজিতে বাজার ভরে গেছে। তবে শীতকালীন সবজি আসায় দাম কমার কথা। কিন্তু চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সবজি না আসায় দাম বাড়ছে।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিম-মুরগির দাম। আগের মতোই ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগি বিক্রেতা সিরাজুল বলেন, কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, মূলত তখন থেকেই মুরগির দাম বেড়েছে।
ফার্মের ডিমের ডজন বড় বাজারে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও মহল্লার দোকানিরা রাখছেন ১৫০ টাকা।
বাজারে নতুন আমন ধানের চাল আসায় দাম কেজিপ্রতি কমেছে ৩ থেকে ৪ টাকা। প্রতি কেজি মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫০ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। বাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় বিআর-২৮ ও পায়জাম জাতীয় চাল। এ ধরনের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬২ টাকায়। এ মানের চালের দর গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে কমেছে সর্বোচ্চ ৩ টাকা। এ ছাড়া ৩ টাকার মতো কমে মিনিকেট বা চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। চাল বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমনের নতুন চাল আসছে। এ কারণে দামও কমছে।
আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন দরিদ্র। দ্রব্যমূল্যে ইস্যুটি তাই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রব্যমূল্য সহনীয় করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এটাই বাংলাদেশ।।।।।