ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

জটিলতা এড়াতে ফিস্টুলার দ্রুত চিকিৎসা

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

মলদ্বারের ভেতরের সঙ্গে বাইরের নালি তৈরি হওয়াকে ফিস্টুলা বলে। মলদ্বারে ফোঁড়া হওয়া রোগীদের শতকরা ৫০ ভাগের ফিস্টুলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া মলদ্বারের যক্ষ্মা, বৃহদন্ত্রের প্রদাহ এবং মলদ্বারের ক্যান্সার থেকে ফিস্টুলা হতে পারে।

লক্ষণ: সাধারণত মলদ্বারে ব্যথা, মলদ্বারের পাশে ফোলা এবং নিজে থেকে ফেটে গিয়ে পুঁজ-পানি ঝরা এগুলোই সাধারণ লক্ষণ। পুঁজ-পানি পড়লে ব্যথা কমে যায় এবং রোগী আরাম বোধ করেন। কিছুদিনের জন্য ভালোও হয়ে যান। কিন্তু রোগটি দুই তিন মাস সুপ্ত বা নির্জীব থেকে আবার দেখা দিতে পারে। অপারেশনের পর পুনরায় হওয়া ফিস্টুলা, মলদ্বারের যক্ষ্মা, বৃহদন্ত্রের প্রদাহ এবং মলদ্বারের ক্যান্সার থেকে হওয়া ফিস্টুলা সাধারণত জটিল হয়ে থাকে।

চিকিৎসা: বর্তমানে ফিস্টুলা চিকিৎসার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত অপারেশন পদ্ধতিগুলো হচ্ছে: ফিস্টুলোটোমি: ফিস্টুলেকটোমি, সিটন পদ্ধতি, ফিস্টুলা প্লাগ, ফিব্রিন গ্লু, ফ্ল্যাপ ব্যবহার, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার, স্টেমসেল ব্যবহার, মলদ্বারের মাংসপেশির মাঝখানের নালি বন্ধ করে দেয়া, এন্ডোস্কোপিক ফিস্টুলা সার্জারি। ফিস্টুলার চিকিৎসা সাধারণত অপারেশন। তাই ‘বিনা অপারেশনে চিকিৎসা’ নেয়া যাবে না। এই ভুলের কারণে আজীবনের জন্য অনেক রোগী মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হন। অনেকের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী বিকল্প মলের রাস্তা বানিয়ে দিতে হয়। ফিস্টুলা হলে বা রোগ শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা নিলে একেবারে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। দেরি হলে তা জটিল হতে থাকে এবং জটিল ফিস্টুলার অপারেশন করাতে হবে একাধিক বার।

প্রচলিত চিকিৎসা: অপারেশন ফিস্টুলার সর্বোত্তম চিকিৎসা পদ্ধতি। সারা বিশ্বে এই পদ্ধতিতেই চিকিৎসা করা হয়। খুব ছোট ও সহজ ফিস্টুলা হলে লেজার চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসা হতে পারে। এই পদ্ধতির ওপর কোনো গবেষণা নেই। একটু বড় বা জটিল ফিস্টুলার চিকিৎসা এ পদ্ধতিতে করলে আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত কোমরের নিচ থেকে অবশ করে অপারেশন করা হয়। দু-এক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। 

ফিস্টুলা অপারেশনের পর ঘা শুকাতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। জটিল ফিস্টুলার ক্ষেত্রে সিটন পদ্ধতিতে দুই তিন ধাপে অপারেশন করা হয়। প্রতিটি ধাপের মাঝে সাত থেকে দশ দিন বিরতি দেয়া হয়। এ সময় নিয়মিত ড্রেসিং করা প্রয়োজন। ড্রেসিং অপারেশনের পর পুনরায় ফিস্টুলা হওয়ার আশঙ্কা কমায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অপারেশনের পর ফিস্টুলা পুনরায় হওয়ার আশঙ্কা শতকরা ৩ থেকে ৭ ভাগ। জটিল ফিস্টুলার ক্ষেত্রে এ হার শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত। তবে অপারেশনের পরের যত্ন বা পরিচর্যার ওপর ফিস্টুলা অপারেশনের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ এবং কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা 
চেম্বার: ১৯ গ্রিন রোড, একে কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা
প্রয়োজনে-০১৭১২৯৬৫০০

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status