ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ রজব ১৪৪৬ হিঃ

মত-মতান্তর

মেইক বাংলাদেশ গ্রেট এগেইন

শায়ের খান
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবারmzamin

আরব দেশের একটা গল্প বলি। বহু আগে যখন আরবের মানুষের প্রধান বাহন ছিল উট, তখন একটা প্রথা চালু ছিল। ‘অতিথি’ বা ‘মুসাফির’ প্রথা। কোনো যাত্রীর যাত্রাপথে রাত নেমে এলে তিনি কোনো অচেনা বাসায় রাতটা কাটানোর ইচ্ছা ব্যক্ত করতে পারতেন। এতে সেই বাসার মালিকও ভীষণ খুশি হতেন। কারণ তাদের কালচারে অতিথি বা মুসাফিরের আগমন ছিল ভাগ্যের প্রতীক। মুসাফিররা ছিলেন সম্মানিত ব্যক্তি।    

তো এক রাতে এক আরবের বাসায় এক অচেনা অতিথি এলেন। বাসার মালিক অতিথিকে সানন্দে থাকতে দেন ও চমৎকার ডিনারে আপ্যায়ন করেন। সারা রাত আড্ডা দেন তারা। অতিথিকে তার জীবনের কোনো এক স্মরণীয় ঘটনা বলতে বলেন গৃহকর্তা। অতিথি ১০ বছর আগে এক বৃদ্ধকে তার খুন করার লোমহর্ষক কাহিনী রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা করেন। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেই গল্প শোনেন গৃহকর্তা। রাত পেরিয়ে ভোর হয়। ব্রেকফাস্ট শেষে অতিথিকে বিদায় দেয়ার সময় গৃহকর্তা বলেন, ‘শুনুন আপনি ১০ বছর আগে যাকে খুন করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন আমার পিতা। খুন হয়েছিলেন ১০ বছর আগে। আমি এই কয় বছর ধরে খুনীকে খুঁজছি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। আজ পেয়ে গেলাম। তবে আজ আপনি আমার অতিথি, তাই ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু এরপর আর কোনোদিন আমার সামনে পড়বেন না। পড়লে কিন্তু আমি আপনাকে খুন করে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিবো।’ অতিথি দুঃখ প্রকাশ করলেন। দু‘জনে হ্যান্ডশেক করে বিদায় নিলেন। গল্পটা বলার উদ্দেশ্য হলো- বীর আরবদের মূল্যবোধ একসময় কিংবদন্তি ছিল।  

এবার বাংলাদেশের মূল্যবোধের ঐতিহ্যে আসি। আমাদের সোনালী সময়ের গল্প শোনাই। ঢাকাইয়া গল্প।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন ঢাকা ছিল একেবারে ভিন্ন শহর। ছিমছাম সতেজ। দূষণ নেই, যানজট নেই। মানুষের মধ্যে সুখ সুখ ভাব। সারা ঢাকায় মানুষই ছিল লাখ বিশেক বা কিছু বেশি। এয়ারপোর্ট যেতে বনানী পেরিয়ে যে ঢাকা তোরণ, ঢাকা ছিল সে পর্যন্তই। উত্তরাকে ভাবা হতো দিল্লির কাছাকাছি। মিরপুরে আমরা যেতাম বছরে দু’বছরে একবার। বেড়াতে বা চিড়িয়াখানা দেখতে। ঢাকা ছিল ‘সিটি অফ রিকশা’। গাড়ি ছিল খুব কম। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, ডাক্তার আর হাতে গোনা এলিট ব্যবসায়ীদের গাড়ি ছিল। সরকারি আমলাদেরও সবার গাড়ি ছিল না। কিন্তু দুটো জিনিস ঢাকার মানুষের ছিল। ফুরফুরা সুখ আর টনটনে মূল্যবোধ। 
ঢাকার মাস্তানরা ছিল হিরো গোছের। রাজনৈতিক মাস্তান না, সেলফ মেইড মাস্তান। স্মার্ট। এরা নিজেদের শক্তি ও বুদ্ধিতে মাস্তানি করতো। এদেরও দুটো জিনিস ছিল। বাঘের সাহস আর মেয়েদের প্রতি সম্মান। ছোটবেলার একটা ঘটনা বলি।

আজিমপুরে আমাদের বাসা। পাড়ায় এক মাস্তান ছিল। ৬ ফুট লম্বা, বড় চুল, জিন্সের জ্যাকেটের বুক খোলা, গলায় সোনার চেইন। তখনকার মাস্তানদের কমন গেটআপ। একদিন দুপুরে শুনি গেটের বাইরে কি যেন ঝামেলা। আমাদের বাসাটা উঁচু দেয়াল ঘেরা খোলা জায়গাসহ একতলা বাড়ি। দৌড়ে গেট খুললাম। দেখি আমার কাজিন তিন্নি আপা ইডেন কলেজ থেকে রিকশায় ফিরেছে। ভাড়া ঠিক করে আসেনি, রিকশাওয়ালা ডাবল ভাড়া চাচ্ছে, বাজে বিহেভ করছে। তিন্নি আপা ঝামেলা এড়িয়ে ভাড়া মিটিয়ে গেট বন্ধ করে দিলেন। একটু পর গেটে আবার নক। সেই রিকশাওয়ালা। এবার তিন্নি আপাকে এক্সট্রা ভাড়াটা ফিরিয়ে দিয়ে বাজে বিহেভের জন্য মাফ চাচ্ছে। ঘটনা কি? ঘটনা সামান্য। পাড়ার ওই মাস্তান ভাই দূর থেকে দেখেছেন বিষয়টা। একজন ‘লেডিজ’-এর সঙ্গে কেন উঁচু গলায় কথা বললো, সেজন্য রিকশাওয়ালাকে পাঠিয়ে এই মাফ চাওয়ার ব্যবস্থা। তিন্নি আপা টাকা নিলেন না। রিকশাওয়ালাকে মাফ করে দিলেন।  

আমার ছোটকালের বান্ধবী সুমি ছিল আজিমপুরের আলোচিত সুন্দরী। মেজাজ ছিল চটচটা। ওর আব্বা সরকারের উঁচু পদে কাজ করতেন আর এক সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি  ছিলেন। সুমি আর আমি ফুটবলে মোহামেডান সমর্থক। কিশোরী সুমি একদিন আমাকে তার দুঃখের কথা বলে- ‘আব্বার সঙ্গে ভিআইপি গ্যালারিতে বসে যখন মোহামেডান গ্যালারির নাচানাচি দেখি, বুকটা ফাইট্টা যায়।’ ওর খুব ইচ্ছা মোহামেডান গ্যালারিতে মোহামেডান সমর্থকদের সঙ্গে বসে ফুটবল ম্যাচ দেখবে। তখন পাবলিক গ্যালারিতে মেয়েরা ফুটবল খেলা দেখতে যেতো না। ফুটবল গ্যালারি মানেই ছিল প্রতিপক্ষকে খিস্তি খেউড়, মারামারি, ইটপাটকেল, পুলিশের লাঠিচার্জ-টিয়ার গ্যাস এসব। কিন্তু কিশোর আমি গার্ডিয়ানসুলভ গম্ভীর সুরে সুমিকে বললাম, ‘নিয়ে যাবো।’
রোজার মাসে ঢাকা লীগের ম্যাচগুলো বিকালে হতো। সুমিকে নিয়ে গেলাম মোহামেডান-ওয়াপদা খেলা দেখতে। সঙ্গে কয়েকজন বন্ধু আর সুমির হাতে ধরা স্ট্যান্ডসহ একটা মোহামেডান ফ্ল্যাগ। গ্যালারিতে ঢোকা মাত্র পুরো গ্যালারি চুপ। এ সবার কাছে এক অবাক করা নতুন দৃশ্য। এ দৃশ্য তারা আগে কখনো দেখেনি। এক স্মার্ট গ্ল্যামারাস কিশোরী  মোহামেডানের পতাকা হাতে খোদ গ্যালারিতে। গুঞ্জনের মধ্যে শুধু শোনা গেল- ‘আইজকা হালায় দশ গোলে জিতুম’। কিন্তু মোহামেডান জিতলো না। সিজনের প্রথম পয়েন্ট হারালো আন্ডারডগ ওয়াপদার সঙ্গে ড্র করে। গ্যালারির গুঞ্জন থেকে আর্তনাদ এলো -‘হইলোনা হালায়, হইলোনা।’ আরেকজন মজা করে যেন বললো- ‘হইবো ক্যামতে ভাই? সাগোত্তম জানায় ইফতারির দাওয়াত দিছিলেন?’ আমরা যখন নামছি, পেছনের ভিড় থেমে থাকলো। আমরা নেমে যাওয়ার পর ভিড়টা নামলো। এটা আর কিছু না- ‘লেডিজ’-এর প্রতি ঢাকাইয়া সম্মান।

বক্সিং কিং মোহাম্মদ আলী এসেছেন বাংলাদেশে। সাজ সাজ রব ঢাকায়। ঢাকা স্টেডিয়ামে লড়বেন তিনি ১২ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি বক্সারের সঙ্গে। আম্মা আমাকে নিয়ে গেলেন স্টেডিয়ামে। তখন মহিলা ও শিশুদের জন্য ভিআইপি গ্যালারির সঙ্গে আলাদা একটা স্পেশাল গ্যালারি ছিল। এই গ্যালারিতে শিশুদের টিকিট লাগতো না। অর্থাৎ এক টিকিটে সন্তান ফ্রি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই গ্যালারিটা বানিয়েছিলেন। সম্ভবত উনার উদ্দেশ্য ছিল নারীদের সন্তানসহ নির্বিঘ্নে স্টেডিয়ামে আসা আর তাদের সন্তানদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত করা। জিয়া একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। আম্মা আর আমি নারী গ্যালারিতে বসলাম। 
কিং আলী নামছেন সবার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে করতে। আম্মা পিঠে থাপ্পড় দিয়ে বললেন , ‘যা, হ্যান্ডশেক কর।’  দৌড়ে গিয়ে হ্যান্ডশেক করলাম ব্ল্যাক সুপারম্যানের সঙ্গে। আম্মাকে এসে বললাম- ‘আম্মা, আলী কীভাবে ঘুসি মারে? হাত তো স্পঞ্জের মতো।’ আমার ধারণা ছিল মোহাম্মদ আলীর হাত হবে লোহার মতো ঠনঠনে। আম্মা হেসে বললেন, ‘ওর হাত নরম, ঘুসি শক্ত।’ পাশের মহিলা শুনে হা হা করে হেসে আম্মার সঙ্গে আলাপ জুড়ে দিলেন। 

অনুষ্ঠান শেষে রাত ১০টার দিকে স্টেডিয়ামের বাইরে আম্মা আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে স্কুটার বা রিকশার জন্য। প্রচুর মানুষ। একটা স্কুটার এলো। দাঁড়ানো লোকেরা হুড়োহুড়ি করলো না। আমাদের দেখিয়ে স্কুটারকে বললো- ‘আগে লেডিজ নিয়া যাও।’ আম্মা উনাদের বললো- ‘থ্যাংক্যু।’ আমরা স্কুটারে উঠে চলে এলাম। ‘লেডিজ’-এর প্রতি ঢাকাইয়া সম্মান।
এই তো সেদিন। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আগের বছর। রাত ১১টা। সেন্ট্রাল রোড দিয়ে রিকশায় আসছি। এক গ্রোসারি শপ দেখে নামলাম। সফট ড্রিংক্স নিবো। এক ভদ্রমহিলা কিছু কিনছেন। ভদ্র দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছি উনার পর অর্ডার দিবো বলে। হঠাৎ মহিলার ঘাড়ের উপর দিয়ে একটা হাত টাকা বাড়িয়ে দোকানীকে বলে - ‘মামা চাইরটা বেনসন দ্যান। ‘অ-ই’ বলে গর্জে ঘুরে দাঁড়ালাম। ঘুরেই দেখি ও একা না। বারো-তেরোজন। এই পরিস্থিতিতে কি করতে হয় আমি জানি। একই গর্জনে ঢাকাইয়া একসেন্টে বললাম- ‘দেখতাছেন না উনি নিতাছে? একজন লেডির কান্ধের উপরে হাত উঠায় দ্যান মিয়া, খেয়াল থাকে না? উনি নেওনের পর আমি নিমু, এরপর আপনেরা। লাইনে থাকেন।’ রাগ হলে আমি এই ভাষায় কথা বলি। ওরা আমার চোখে কিছু পড়ে নিলো। বললো- ‘সরি ভাইয়া।’ চলে যাওয়ার সময় লেডি আমাকে আস্তে করে বললেন- ‘থ্যাঙ্কু।’ আমি ডান হাত উঠালাম- ‘নো ওরিজ।’ ছোটকালে স্টেডিয়ামের সামনে অচেনা লোকদের আম্মাকে দেয়া সেই ‘থ্যাঙ্কু’র কথা মনে পড়লো।

সমাজে আচার-আচরণ-মূল্যবোধের ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আপনি দেখছেন। কখনো আশান্বিত আবার কখনো ভীত হচ্ছেন। ফেসবুক কাঁপাচ্ছেন। হবে না। বাস্তব জীবনেও আপনাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জাতে হবে যদি সমাজের মূল্যবোধ ফেরত পেতে চান। ডানে বাঁয়ে তাকাবেন না কে অন্যায় করছে।
আপনার ভেতরে একটা বাঘ আর একটা বেড়াল আছে। আপনি বাঘটাকে ভেতরে ঢুকিয়ে বেড়ালটাকে উপরে নিয়ে এসেছেন। উল্টাতে হবে। ছোটকালে একটা ইংলিশ মুভি দেখেছিলাম- টুডে ইট’স মি, টুমোরো ইউ। বাংলায় লেখা ছিল- ‘আজ আমার, কাল তোমার।’ এটাকে নামতার মতো পড়তে থাকেন- ‘আজ আমার, কাল তোমার। আজ  আমার, কাল তোমার। আজ আমার, কাল তোমার।’ দেখবেন নামতার চোটে আপনার বেড়াল ভেগে গেছে। বাঘটা উপরে উঠে এসেছে। গর্জন করে শহর কাঁপাচ্ছে। 
আপনি কি জীবন বাজি রাখা বাচ্চাদের শহর কাঁপানো দেখেননি জুলাই-আগস্টে? কিংবা ২০১৮-তে ‘নিরাপদ সড়ক’ চেয়ে প্রধান প্রধান সড়কে? এদের মধ্যে তৃষ্ণা জেগেছে আমাদের শৈশবের সেই সোনালী দেশকে ফিরে পাওয়ার।  টগবগে মস্তিষ্কে এখন এদের একটাই চিন্তা- মেইক বাংলাদেশ গ্রেট এগেইন। আমরাও ওদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলছি- ইয়েস। টুগেদার উই উইল মেইক বাংলাদেশ গ্রেট এগেইন। 

লেখক-নাট্যকার-ফিল্মমেকার

পাঠকের মতামত

দেশ আমার আপনার সবার। গাল ফুলিয়ে কি লাভ। আসুন না সবাই। চমৎকার একটা দেশ তৈরি করি। ২০২৪ ২৫ ২৬।।।।

Anwarul Azam
২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৮:৪৩ অপরাহ্ন

চমৎকার একটা লেখা। চমৎকার।

Anwarul Azam
২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৮:৩৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ আবার ফিরে পাক সোনালী অধ্যায়। আপনার লেখা পড়ে আশান্বিত হলাম ভাইয়া।

mehedi hasan
১৮ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১১:৩০ অপরাহ্ন

A real story.. Good for health.. Thanks a lot

Anwarul Azam
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১২:৩০ অপরাহ্ন

শায়ের খান কল্লোল - তো আপনিই? অনেক পড়েছি আপনার লেখা

হাবিব
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

সুন্দর এবং সত্য কথা লিখেছেন।

Sharif Khan
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

সহমত। উই উইল মেইক বাংলাদেশ গ্রেট এগেইন।ধন্যবাদ।

মোঃ ফয়জুল কবীর
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

অসাধারণ - জনাব শায়ের খান। শুধু ভয় স্বদেশ ট্রামে' র মত উদ্ভট উটের পিঠে চেপে না বসে........

জনতার আদালত
১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Bangladesh Army

মত-মতান্তর সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status