অনলাইন
স্মরণসভায় নাগরিকরা
সাবিহ উদ্দিন ‘সত্যিকারের দেশপ্রেমিক’ ছিলেন
স্টাফ রিপোর্টার
(১ মাস আগে) ২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৭:৪৪ অপরাহ্ন
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত সাবিহ উদ্দিন আহমেদকে ‘সত্যিকারের দেশপ্রেমিক’ ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন তার নিকটসহকর্মীসহ নানা পেশার নাগরিকরা। শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে প্রয়াত কূটনীতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এক স্মরণসভায় তারা এসব কথা বলেন। এ সময় সাবিহ উদ্দিনের বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরে তাকে স্মরণ করা হয় এবং জানানো তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবিহ উদ্দিন ছিলেন রিয়াল ন্যাশনালিস্ট। দেশ ও জনগণের প্রশ্নের কোনো কম্প্রমাইজ নেই। আন কম্প্রমাইজিং ছিলেন। এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমরা হারিয়েছি, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম সবুজ। সাবিহ অনন্য। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম, আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল- এই সমাজটাকে পরিবর্তন করবো, আমরা বদলে দেবো। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি সাবিহ চলে গেছেন সরকারি চাকরিতে, সরকারি চাকরিতে গেলেও কখনো সেই লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি।
তিনি বলেন, সাবিহ যেখানেই ছিল সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগণের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি আমার মনে পড়ে যে, যখন তিনি আমাদের ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন, তখন দেখেছি যে, তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
শেখ হাসিনার শাসনমালে সাবিহ উদ্দিন ওই সময়ে সরকারের রোষানলে নির্যাতিত হওয়ার কাহিনী তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ওই সময়ে তার ওপরে প্রচণ্ড আক্রমণও হয়েছিল, রিয়াজ রহমান সাহেবের গুলি লেগেছিল, সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িটা পুড়িয়ে দিয়েছিল। আর আরেকজনের যেন কে তার ওপরও আক্রমণ হয়েছিলো। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। বহুবারই বিভিন্ন গ্রেপ্তার হওয়ার মুহূর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে, সে ভিকটিম হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি। তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা যারা একসঙ্গে ছিলাম তাদের কাছে এটা বেদনার। সাবিহ’র ছবিটা এখানে দেখে আঁতকে উঠলাম।
একান্ত বন্ধু সাবিহ উদ্দিনকে স্মরণ করে ফখরুল বলেন, আমরা ভাইয়ের মতোই ছিলাম। অফুরন্ত প্রাণশক্তি ছিল তার। মনে হয়েছে টগবক করছে সবসময় জীবনী শক্তি নিয়ে। কোনো কিছুতে ভেঙে পড়ার লোক ছিল না, লড়াই করেছে শেষ পর্যন্ত।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ বলেন, সাবিহ শেষদিন পর্যন্ত দেশের কথাটি ভেবেছেন, দশের কথাটি ভেবেছেন। তার মধ্যে স্বার্থপরতা ছিল না। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপস তিনি করেননি। বাংলাদেশে খুব কম মানুষই পাবে যে, আপন স্বার্থ ভুলে দেশ ও জনগণের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা। তিনি সব সময়ে এটা লালন করেছেন। আমি বিশ্বাস করবো, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ জান্নাতবাসী হয়েছেন। জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্থান দিয়েছেন।
সভায় আরও স্মৃতিচারণ করেন প্রবীণ সম্পাদক শফিক রেহমান, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মাহফুজ এনাম, এবিএম শাহেদ আখতার, প্রয়াত সাবিহ উদ্দিন আহমেদর ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা। এ ছাড়া স্মরণসভায় প্রয়াত সাবিহ উদ্দিনের সহধর্মিণী রওনক আহমেদ, ছেলে সাইয়াব আহমেদ, বিএনপি মহাসচিবের সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমসহ নিকট স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।