অনলাইন
সিপিডি'র আলোচনা সভায় হোসেন জিল্লুর
অর্থনীতিতে অবিচারের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(২ বছর আগে) ২৪ জুলাই ২০২২, রবিবার, ৪:৪৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৫৪ অপরাহ্ন

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ব্যাষ্টিক অর্থনীতিতে অবিচারের একটা বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। সুস্পষ্ট অবিচারের চেহারায় নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা নানানভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার যে ধরনের অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে এগোচ্ছে তাতে যুব বেকারত্ব বাড়ছে। এ রকম অবস্থায় প্রশাসনের যদি সার্বিক উন্নতি না হয় তাহলে অবিচারের নতুন দিক সৃষ্টি হবে। রোববার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত 'সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: কতটা ঝুঁকিপূর্ণ' আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে লৌহ ত্রিভুজ গেড়ে বসেছে। এই লৌহ ত্রিভুজ হলো- একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শন, স্বার্থের দ্বন্দ্ব ভিত্তিক অর্থনৈতিক নীতি বা ব্যবস্থাপনা এবং সমাজের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে এক ধরনের অবিচার। হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতিতে সুস্পষ্ট অবিচারের চেহারা দেখা যাচ্ছে। নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা নানানভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যাহত হলে তার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থান ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে। এ ছাড়া হাউজিং খাতেও বেশ কিছু সমস্যা হয়েছে। সরকার যে ধরনের অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে এগোচ্ছে তাতে যুব বেকারত্ব বাড়ছে। এ রকম অবস্থায় প্রশাসনের যদি সার্বিক উন্নতি না হয় তাহলে অবিচারের নতুন দিক সৃষ্টি হবে। এ মুহূর্তে সংকট সামাল দিতে হবে। তবে ভবিষ্যৎ সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেয়া দরকার।
রাজনৈতিক অর্থনীতিতে লৌহ ত্রিভুজ গেড়ে বসেছে। সরকার একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শন নিয়ে এগোচ্ছে, স্বার্থের দ্বন্দ্ব ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে যেমন; কুইক রেন্টাল চালু করা, পরিবহন খাতে বিআরটিএকে কার্যকর হতে না দেয়া। অবিচারের খাটুনির বোঝা জনগণের উপরে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যহীনতার আলোচনার পাশাপাশি এই লৌহ ত্রিভুজ ভাঙ্গার আলোচনাও আনতে হবে। তা না হলে অর্থনৈতিক সংকট দূর হবে না।
সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ধানমন্ডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের অর্থনীতি মধ্যমেয়াদি সংকটে পড়েছে। সংকট থেকে উত্তরণ হবে ধীরে ধীরে। এজন্য মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। তিনি বিনিয়োগ বহুমুখী করা, বাণিজ্য বাড়ানো, গ্যাস কূপ খনন, কারখানায় লোডশেডিং কমানো, ব্যাংক ঋণ সহজ করা, রাজস্ব আদায় বাড়ানো, বাজারের কারসাজি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেন।
মির্জ্জা আজিজ বলেন, সংকট উত্তরণের জন্য সময় উপযোগী ব্যবস্থাপনা দরকার। অর্থনীতির বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার সুযোগ রয়েছে। এমন উদ্যোগ নিতে হবে যাতে বেশিরভাগ মানুষ উপকৃত হন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ খাদের কিনারে পড়ে গেছে এটা ভাবা ঠিক হবে না। তবে সংকট তৈরি হয়েছে। ইতিবাচক দিক হচ্ছে নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি অনুভব করেছেন এবং উদ্যোগও নিচ্ছেন।