শেষের পাতা
পররাষ্ট্র সচিবের সফর
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা
কূটনৈতিক রিপোর্টার
১৩ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ওয়াশিংটন সফররত পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। বৈঠক হয়েছে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়াসহ বাইডেন প্রশাসনের প্রভাবশালী অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে। সব বৈঠকেই পরিবর্তিত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা ও টেকসই সমাধান এবং শ্রম অধিকার নিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। শনিবার ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার পররাষ্ট্র সচিবের মঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সিরিজ বৈঠকগুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং মানবাধিকারের মূল উদ্বেগ নিরসনে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দৃঢ় ও ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার প্রতিফলন। বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর ও সম্প্রসারণ এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রম আইন সংস্কার ইত্যাদিতে যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার ওপর আলোকপাত করা হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে একইদিনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয় পররাষ্ট্র সচিবের। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গতিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গভীর করার উপায় এবং অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর সহযোগিতা এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। ওদিকে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ডের সঙ্গেও বৈঠক হয় পররাষ্ট্র সচিবের। সেখানেও তারা দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের আলোচনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম আইন ইত্যাদি স্থান পায়। সফরের শুরুতে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রপ্তানি বহুমুখীকরণে পারস্পরিক সহযোগিতা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত আরএমজির ডিএফকিউএফ প্রবেশাধিকার, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের নিবন্ধন সহজীকরণ ও নিবন্ধন ফি হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কো-অপারেশনে (ডিএফসি) প্রবেশাধিকার নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয় বলে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিবের সম্মানে মার্কিন স্টেট ডেপার্টমেন্ট একটি ভোজের আয়োজন করেছিল। যেখানে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডনাল্ড লু, ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মার্টা সি ইয়ুথ, ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক, ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মনিকা অ্যাগার জ্যাকবসেন এবং ডিরেক্টর আল্লা পি প্রমুখ অংশ নেন বলে জানানো হয়েছে। স্মরণ করা যায়, ওয়াশিংটন সফরের আগে পররাষ্ট্র সচিব নিউ ইয়র্ক সফর করেন। ৮ই সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর।