বাংলারজমিন
হবিগঞ্জে অন্ধ হাফেজকে হত্যার চেষ্টা, ২ মাসেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবারহবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার এক অন্ধ হাফেজকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দায়েরের দুই মাসের বেশি সময়েও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন জন্মান্ধ কোরআনে হাফেজ কয়েছ আহমেদ। গত ২৮শে জুলাই রাতে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার দু’দিন পর ৩০শে জুলাই লাখাই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভিক্টিম হাফেজ কয়েছ আহমেদ। কিন্তু এতদিনেও কোনো প্রতিবেদন জমা দেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত জাফর আহমেদের ছেলে অন্ধ হাফেজ কয়েছ আহমেদকে গত ২৮শে জুলাই রাতে একদল দুর্বৃত্ত বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে প্রাণে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা কয়েছ আহমেদের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় তার গোঙানির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এসে পড়লে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় ওই হাফেজকে প্রথমে লাখাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ৩০শে জুলাই লাখাই থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভিক্টিম হাফেজ। এর প্রেক্ষিতে লাখাই থানার উপ-পরিদর্শক আক্তারুজ্জামানকে দেয়া হয় তদন্তের দায়িত্ব। কিন্তু গত দুই মাসেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার বা অভিযোগের কোনো অগ্রগতি করতে পারেননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে চরম হতাশায় রয়েছেন মামলার বাদী ও তার পরিবার।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, অভিযোগের ব্যাপারে আমি প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর নিয়েছি। তবে আমি ছুটিতে থাকায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। শিগগিরই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ কয়েছ আহমেদ জানান, ঘটনার দিন আমাদের প্রতিপক্ষ মৃত আদর হোসেনের পুত্র আবুল ফয়েজের লোকজন আমার গোষ্ঠীর লোকজনকে মারধর করে। আমিও সেসময় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। এতে তারা আমার প্রতি মারাত্মক ক্ষিপ্ত ছিল। ওইদিন রাতেই আমি আমার ঘরের উঠানে দাঁড়িয়ে মোবাইলে এক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলার সময় একদল লোক আমার মুখ চেপে ধরে আমাকে তুলে নেয়। পরে আমার পরনের কাপড় আমার মুখে গুঁজে দিয়ে আমার গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাদের অত্যাচারে আমি একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে আমার প্রতিবেশীরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের নির্যাতনে আমার মুখে ও গলায় দাগ পড়ে যায়। এর দুইদিন পর একটু সুস্থ হলে আমি থানায় মামলা নিয়ে যাই। তারা অভিযোগ গ্রহণ করলেও এতদিনেও আমি কোনো প্রতিকার পাইনি। এ ঘটনার পর থেকে আমিও আমার পরিবার প্রাণের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। আমরা চরম ভীতি ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমি অসহায় মানুষ পুলিশ প্রশাসনের কাছে করজোড়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।