শেষের পাতা
সংস্কার কমিশনের দায়িত্বে ৬ বিশিষ্ট নাগরিক পরিবর্তনের প্রত্যাশা
স্টাফ রিপোর্টার
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সংস্কারের প্রাথমিক উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে কমিশন গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। তিনি জানিয়েছেন, চলতি মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ ১লা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে এবং পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
ছয় জন বিশিষ্ট নাগরিককে সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কারে ড. শাহদীন মালিক, নির্বাচন ব্যবস্থায় ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসনে সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশনে ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং জনপ্রশাসনে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে করা গুরুত্বপূর্ণ এই ছয় বিষয়ে করা কমিশনের কাছে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে সাধারণ মানুষ। দায়িত্ব পাওয়া বিশিষ্টজনরাও তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার কথা জানিয়েছেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। তবে দায়িত্ব সম্পর্কে এখনো কিছুই জানি না। সেক্ষেত্রে এখনই প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক মানবজমিনকে বলেন, জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া ভাষণে শুনলাম আমাকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পরই বুঝতে পারবো আমাকে কতো সময়ের মধ্যে কী ধরনের কাজ করতে হবে।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি মানবজমিনকে বলেন, অফিসিয়ালি আমি এখনো কিছু জানি না। আমি এখন গাজীপুর কাপাসিয়াতে আছি। সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি আমাকে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগে থাকা অবস্থায় যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছি একইভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবো। আরও বেশি এবং আমার সর্বোচ্চটা দিয়েই দায়িত্ব পালন করবো। সবার দোয়া চাই।
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যাবস্থা পূণঃ সংস্কারের জন্য শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পুলিশ কমিশনের প্রধানের নাম সফররাজ হোসেন, সরফরাজ নয়। তিনি ডাঃ ও নন, তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব এবং একজন সৎ ও মেধাবী আমলা।
১. জাতীয় সংসদ বহাল রেখে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের যে বিধান বর্তমান সংবিধানে আছে তা বাতিল করতে হবে। ২. মার্কিন কংগ্রেসের মত জাতীয় সংসদ কখনোই বিলুপ্ত হবে না-এই বিধান সংবিধানে যুক্ত করতে হবে। ৩. প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান ইত্যাদি পদগুলোতে প্রস্তাবিত ব্যক্তিবর্গের ব্যাপারে জাতীয় সংসদে শুনানী অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং এসব পদে নিয়োগের জন্য স্বচ্ছ আইন প্রণয়ন করতে হবে। ৪. সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের তিন চতুর্থাংশ সদস্যের অনুমোদনসহ গণভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. ৫০ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে জনসংখ্যা আড়াইগুণেরও বেশি হওয়ায় জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা অন্ততঃ ৫০০ করা যেতে পারে।
আল্লাহ আপনাদের সহায় হোন, আমরা আশাবাদী আপনারা জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন, আমরা বিভিন্ন সময় আপনাদের আলোচনা শুনেছি আপনারাও চেয়েছেন এমন একটা মহৎ কাজে আপনাদের অংশগ্রহণ থাকুক যেহেতু সুযোগ পেয়েছে আশা করব সুযোগের সদ্য ব্যবহার করবেন।
রাষ্ট্র সংস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তাদের প্রতি শুভকামনা রইলো। প্রত্যাশা থাকবে, বাঙালী জাতির আজীবন মনে রাখার মত কিছু আপনাদের হাত ধরেই হবে বলে আশা রাখি।
যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ। আশা করি তারা তাদের সব শক্তি দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সুন্দর একটা কাটামো তৈরি করে যাবেন। জাতি আজীবন তাদের শ্রদ্ধার সাথে মনে রাখবে।
আশা করি সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের মেধা এবং প্রজ্ঞার মাধ্যমে জনগণের আশা আকাঙ্খার অনুকূলে একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য সংস্কার জাতিকে উপহার দেবেন। তবে এখানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রত্যেকের সততার কোন বিকল্প নেই। দেশের স্বার্থে তাদের উপর অর্পিত এই গুরুদায়িত্ব তারা নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। পরম করুনাময় আল্লাহর আমাদের সবার সহায় হোন। আমিন।
বাংলাদেশে একটি উচ্চ সংসদ বা সিনেটের প্রয়োজন বিধায় আমি ইহা গঠনের নিম্নবরনিত একটি রুপরেখা প্রস্তাব করিলাম। ১)বাংলাদেশ উচ্চকক্ষ সংসদ বা সিনেট হতে পারে ২০০ সদস্যের। আগামি তিন মেয়াদ এই সিনেট হবে নিরদলিয়। ২) প্রথমে, .৬৪ জেলা থেকে ১২৮ জন সিনেটর সরাসরি ভোটে নিরবাচিত হবেন। ৩) বাকি ৭২ জন দেশের বিভিন্য শ্রেণী/পেশা থেকে, নির্বাচিত ১২৮ জন সিনেটর এর ভোটে মনোনিত হইবেন। মনোনীত ৭২ জন সিনেটর হতে পারেনঃ ১০% বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ১০% অবসরপ্রাপ্ত আমলা, ১০% অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, ৩০% বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি, ১০% প্রবাসী ১০% প্রাক্তন সংসদ সদস্য, ১০% শীর্ষ আয়কর দাতা ১০% মহিলা ৪) সমস্ত সিনেটরদের কমপক্ষে একটি স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। ৫) সংসদের এই উচ্চকক্ষের সাধারণ নির্বাচকদের কমপক্ষে এসএসসি পাস বা ন্যূনতম .৩৫ বছর বয়স হতে হবে এবং প্রত্যেক সরাসরি নির্বাচিত সিনেটরকে অবশ্যই ৫০% ভোটে নির্বাচিত হতে হবে ৬) প্রতি দুটি সাধারণ নির্বাচনের মাঝামাঝি এই সিনেট নির্বাচন সম্পন্ন হবে। উচ্চকক্ষ সিনেটের কাজ -------------------------------------------------- ----- ক) উচ্চকক্ষ সিনেটের গন সাধারণ পরিষদের সদস্যদের সাথে একত্রে মিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ক রবেন। খ) ছায়া সরকার গঠন । গ) সাধারণ পরিষদের যেকোনো সিদ্ধান্ত দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে বাতিল করার ক্ষমতা। ঘ) সাধারণ নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তী সরকার হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করবে।
উচ্চ আদালতে বিচারক হবার যোগ্যতা ও নিয়োগ বিধিমালা সব চাইতে জরুরি। অতি উচ্চ পারিশ্রমিকও সঙ্গত।
সব কমিশনের প্রধান সজ্জন ও নামী ব্যক্তিত্ব। কিন্তু পুলিশ কমিশনের প্রধান নিয়ে প্রশ্ন আছে। একজন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আওয়ামী ডাক্তার কেমন করে এ পদ পেলেন তা নিয়ে আমি বিস্মিত। মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টগ্রাম এর এ দুটো পরিচয় কি এতো বড়। সাংবাদিকদের এ নিয়ে অনুসন্ধানের অনুরোধ রইলো।