মত-মতান্তর
এক অদম্য মেধাবী ছাত্রের করুণ পরিণতির কথা
ড. মো. আতিকুর রহমান
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবারমেধাবী শিক্ষার্থী মো. রফিকুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পা দিয়েই তাক লাগিয়েছিলেন সকলকে। প্রথম বর্ষেই নিয়েছিলেন প্রথম স্থানটি। স্বপ্নও ছিল পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে হাল ধরবেন চাকরিতে। তবে আশায় হতাশার জন্ম। দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষার আগে তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে যেতে হয় জেলখানায়। সমপ্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ফলিত গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আতিকুর রহমান তার এক ফেসবুক পোস্টে এসব নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। তার লেখা ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো: “তোমরা হয়তো অনেকে জানো না বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র মো. রফিকুল ইসলামের কথা। সম্ভবত ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সে। ১ম বর্ষ পরীক্ষায় সে ১ম হয়েছে। ২য় বর্ষ পরীক্ষার আগে তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে বিভাগের আওয়ামী ক্যাডাররা ষড়যন্ত্র করে জেলখানায় পাঠিয়ে দিয়েছে। সে জেলখানায় বসে পরীক্ষা দেয়। তার হাত ও পায়ে বেড়ি পরা অবস্থায় বিভাগের ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষায় হাজির করা হয়েছিল। শিক্ষক হিসেবে আমি দুই পরীক্ষায় ছিলাম। এভাবে একজন ছাত্রকে হাজির করা দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। প্রতিকার করার কোনো সাহস ছিল না। পুলিশকে বলার পর তারা সম্ভবত হাতের বেড়ি খুলে দেয় লেখালেখি করার জন্য। চার বা পাঁচ মাস পর সে জেল থেকে ছাড়া পায়। সে আবারো ১ম হয়। ২০১১ সালের অনার্সে ১ম শ্রেণিতে প্রথম হয় এবং এটাই তার জন্য কাল হয়। সে এমএসসিতে শামসুল আলম সরকার স্যারের সুপারভিশনে থিসিস নেয়। সরকার স্যারের সঙ্গে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের খারাপ সম্পর্কের কথা ক্যাম্পাসের প্রাই সকলেই জানে। তারা ও বিভাগের আওয়ামী ক্যাডাররা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এমএসসি’র ফলাফল তৈরির ঠিক আগ মুহূর্তে কয়েকজন আওয়ামী শিক্ষক সভাপতির সহায়তায় সেমিনারে রক্ষিত থিসিসটি কপি পেস্ট করা হয়েছে বলে বিচার চেয়ে তৎকালীন ভিসি মীজান স্যারের কাছে পাঠিয়ে দেন। সরকার স্যারের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ দায়ের করে। ভিসি তদন্ত কমিটি করে দেয়। বিভাগের আওয়ামী ছাত্র ক্যাডাররা এর পক্ষে আন্দোলন করে এবং ছাত্রটির এমএসসি রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়। সরকার স্যারকে থিসিস মার্ক পরীক্ষকের কাছ থেকে হাতে হাতে নিয়ে আসার অপরাধে আজীবন পরীক্ষার কাজ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। এমএসসি থিসিস পরীক্ষার খাতার মতো দুই পরীক্ষকের নম্বর গড় করা হয়। কিছু কিছু জায়গায় কপি পেস্ট থাকলে পরীক্ষক প্রয়োজনে কম নম্বর দিতে পারেন বা নম্বর নাও দিতে পারেন । সে জায়গায় ছাত্রটির এমএসসি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা কতোখানি যুক্তিযুক্ত হয়েছে এই প্রশ্নটি রাখলাম। রফিকুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করে। আমার জানা মতে এমন কোনো মতাদর্শের ছাত্র নাই যার কোনোদিন কোনো ক্ষতি করেছে সরকার স্যার। যাই হোক ছাত্রছাত্রীদের যদি কোনো করণীয় থাকে তবে তোমরা ভেবে দেখবা- এই আশা তোমাদের কাছে রইলো।
লেখক: প্রফেসর, ফলিত গণিত বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
আওয়ামী আমলে, সকল নিয়োগ যাচাই করতে হবে
আমলীগের আমলে যত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে সব যাচাই করে দেখতে হবে। ১ থেকে ৫ (অনার্স রেজাল্ট) এর বাইরে যারা নিয়োগ পাইছে সব কটাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। শোনা যায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ তম (৩১ জন ছাত্রের ভিতর) আমলীগ ক্যাডার লেকচারার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে