ভারত
ভারতের যুবশক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার বদলে চরম বিপত্তির মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে: রাহুল গান্ধী
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
ভারতের একাধিক রাজ্যে ক্রমশই বাড়ছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা। সম্প্রতি এমনই উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছে একটি গবেষণার রিপোর্ট। দেশের প্রতিটি রাজ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। রিপোর্ট বলছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশ। এই তালিকায় দশের মধ্যে নাম রয়েছে রাজস্থানেরও। গত ২০ বছরে দেশে পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গত এক দশকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংখ্যা ৬,৬৫৪ থেকে লাফিয়ে বেড়েছে ১৩,০৪৪ জনে।
সদ্য প্রকাশিত ভয়াবহ এই রিপোর্ট তুলে ধরে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে একহাত নিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান তুলে ধরে এদিন রাহুল গান্ধী লেখেন, ‘বিশ্বের মধ্যে ভারত আজ সর্ব বৃহৎ যুব জনসংখ্যার দেশ। অথচ দুঃখের কথা এটাই যে এই যুবশক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার বদলে তাকে চরম অসুবিধা ও বাধা বিপত্তির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। গত দশকে যেখানে ০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের জনসংখ্যা ৫৮.২০ থেকে ৫৮.১০ কোটি হয়েছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যা ৬,৬৫৪ থেকে লাফিয়ে ১৩,০৪৪ জনে পৌঁছে গেছে। এই ঘটনা দেশের যুব সম্প্রদায়ের সামাজিক, আর্থিক ও মানসিক গুরুতর সমস্যার দিকেই ইঙ্গিত করছে।’
সামগ্রিক আত্মহত্যার হার বার্ষিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্রদের আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৪ শতাংশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, আত্মঘাতী শিক্ষার্থীদের ৫৩ শতাংশই ছিল পুরুষ। বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মানসিক অবসাদ। স্কুল-কলেজে রেজাল্ট আশানরূপ করতে না পারার চাপ, বাবা-মার চাপে নিজের পছন্দমতো বিষয় নিয়ে পড়তে না পারা, উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে আর্থিক প্রতিকূলতা, প্রতিষ্ঠানে র্যাগিংয়ের শিকার, কাঙ্খিত লক্ষ্য ছুঁতে না পারা, ব্রেকআপ, একাকীত্ব প্রভৃতি নানা কারণে হতাশা বা অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রের ভুল নীতিকে দায়ী করে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল গান্ধী লেখেন, ‘বর্তমানে দেশের যুব সম্প্রদায় ভয়াবহ বেকারত্ব, প্রশ্ন ফাঁস, শিক্ষা দুর্নীতি, ব্যয়বহুল শিক্ষা, সামাজিক নিপীড়ন, আর্থিক বৈষম্য, অভিভাবকদের চাপের মতো নানা সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সরকারের কাছে আমার আবেদন ছাত্র-যুবকদের এই কঠিন পথ সহজ করতে যেন সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাদের চলার পথে বাধা না দিয়ে যেন সহায়তার হাত বাড়ানো হয়। অভিভাবকদেরও উচিত তাদের সন্তানদের পাশে দাঁড়ানো এবং উৎসাহ দেওয়া।’
সূত্র : দ্য প্রিন্ট