ঢাকা, ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

স্টাফ রিপোর্টার

(৮ মাস আগে) ২৩ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:৫০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:৩২ অপরাহ্ন

চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। কোটা সংষ্কার করে প্রজ্ঞাপন জারির পর আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই তথ্য জানিয়ে বলেন, সরকার প্রজ্ঞাপন জারির আগে যতো রক্ত মাড়িয়েছে, যতো লাশ পড়েছে এটা অনাকাঙ্খিত, এর জবাব দিতে হবে। প্রজ্ঞাপনের আগে শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নীতিনির্ধারনী সংলাপ প্রয়োজন ছিল। সংলাপ ছাড়া আমরা এই প্রজ্ঞাপনকে চূড়ান্ত সমাধান বলে ধরে নিচ্ছি না। তাই আমরা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সংলাপ চাচ্ছি।  কোটা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয় এজন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি। তারা বলেন, এই প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে কিন্তু আন্দোলন সম্পর্কিত নয়। আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাচ্ছি না। আমাদের সঙ্গে যে জনগণ নেমেছে তাদের দাবিদাবা, তাদের যে হতাহত তার সুস্পষ্ট বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বিকাল পাঁচটায় হওয়া এই সংবাদ সম্মেলনের সময় মিলনায়তনের বাইরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন কক্ষেও ছিলেন পোশাকধারী ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আহত নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ই জুন মহামান্য আদালত ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে যে রায় দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিতর্কিত বক্তব্য, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যক্তিদের দমন পীড়ন ও হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। তখন আমরা সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং নাগরিকদের রাজপথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য। ছাত্র-নাগরিকরা প্রতিরোধ গঠন করে। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ করে একধরনের ডিজিটাল ক্রাকডাউন সৃষ্টি করা হয়। শিক্ষার্থীদের হল থেকে বিতাড়িত করা হয় যা সুস্পষ্ট মানবধিকার লঙ্ঘন। সেনাবাহিনী নামিয়ে কারফিউ জারি করা হয়। এই পরিস্থিতির সুযোগে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য একটি চক্র অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগায় এবং জানমালের ক্ষতি করে। এই দায় সরকারের। সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে। 
তিনি বলেন, আমাকে গুম করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। রক্ত লাশের উপর দাঁড়িয়ে এই প্রজ্ঞাপন আরেকটি ইতিহাস হয়ে থাকল। সরকার প্রথম থেকেই রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে চেয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম আলোচনার ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন। যাতে ভবিষ্যতে আর সমস্যা না তৈরি হয়। আমরা নিরাপত্তাহহীনতায় আাছি। তিনি নির্বিাচারে গ্রেপ্তার না করার আহ্বান জানান। 

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা সবসময় চেয়েছি শান্তিপূর্ণ সমাধান। আমাদের দাবি পেশকে সংলাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা এতো রক্ত পেরিয়ে সংলাপে যাবো না। আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ যে হত্যা চালিয়েছে তার বিচার চাই। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলন শুরু করেছি সেখান থেকে শেষ করতে চাই। 
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, সরকারের সদিচ্ছা যদি আগেও থাকত তাহলে লাশ পরতো না। আমরা শাহবাগে আহ্বান জানিয়েছি আমাদের সঙ্গে বসুন। কিন্তু যখন ধ্বংসযজ্ঞ হয় তখন আমাদের দায়ী করা হয়। এখন মন্ত্রীরা সংবেদনশীল বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা এমন একটা বক্তব্যের জন্য শাহবাগে বসে ছিলাম। আমরা জরুরি ভিত্তিতে চারটি দাবি জানিয়েছিলাম। কারণ এই চার দাবি পুরণ না হলে আটটি দাবি নিয়ে আলোচনা করেও লাভ নেই। আমরা দুই দিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছি এই চারটি জরুরি দাবি পুরণের। এগুলো হলোÑ ইন্টারনেট সচল করতে হবে, কারফিউ তুলে নিতে হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সরিয়ে নিয়ে আবাসিক হল খুলে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং আমাদের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো দু’দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হলে আমাদের আটটি দাবি নিয়ে কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে।

সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, শুনেছি আমার ছেলেকে গুম হয়েছে। আমি মর্গে খোঁজ নিয়েছি পাই নাই। আমি আমার ছেলের সন্ধান চাই। এসময় আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারসহ আন্দোলনে যুক্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে সমন্বয়করা সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে স্থান ত্যাগ করেন এবং সারজিস আলম একটি বেসরকারি টেলিভিশনের গাড়িতে করে ডিআরইউ ছেড়ে যান। তারা স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত

শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা কেন? আমরা শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল গুলো খোলা দেখতে চাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন?... আমার ভাই শহীদ কেন?

Sagor Ahmed
২৫ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২:২৪ পূর্বাহ্ন

আমরা সবসময় চেয়েছি শান্তিপূর্ণ সমাধান। আমাদের দাবি পেশকে সংলাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা এতো রক্ত পেরিয়ে সংলাপে যাবো না। আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ যে হত্যা চালিয়েছে তার বিচার চাই। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলন শুরু করেছি সেখান থেকে শেষ করতে চাই। নোটেড....

masud
২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ২:০৮ অপরাহ্ন

আপনাদের দাবিগুলি যথার্থ এবং আমি মনে করি সরকার ও তাদের সাথে একমত পোষণ করে আন্দোলন আর না বাড়িয়ে আলোচনায় আসা উচিত।

কোটাভিক্ষুক
২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

সংবিধানে সংযোজন না করলে যেকোন সময় আগের মতো ।

Monir
২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১২:০৩ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status