শেষের পাতা
বেনজীরের ডুপ্লেক্স ভবনে দুদকের অভিযান
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদের রূপগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্টের নামে ২৪ কাঠা জমির উপর বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ভবন সিলগালা করে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ভবনটির ভিতরে অভিযান চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দুদকের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টিম এ অভিযান পরিচালনা করে। এর আগে গত ৬ই জুলাই অভিযান চালিয়ে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
ভবনটির ভিতর থেকে অভিযান চালিয়ে দেশীয় প্রযুক্তির এসি, ফ্রিজ, টিভিসহ রান্নাঘরের জিনিসপত্র একটি সাধারণ পরিবারের যেমন থাকে তেমন কিছু সামগ্রী, বইপত্র, একটি ঝাড়বাতি একসেট সোফা দেখা গেছে বলে জানান- নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১শে মার্চ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওইসব প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করে। এতে তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায় তারা। এরপর থেকেই আলোচনায় আসেন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত পর্যটনকেন্দ্র ও পূর্বাচলে রয়েছে ২৪ কাঠার মধ্যে সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ২০ কোটি টাকা।
এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেসব সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব, শেয়ারসহ অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক শুরু করেন তারা।
দুদক দুই দফা সম্পত্তির হিসাবে নিয়ে তলব করলেও বেনজীর ও তার পরিবারের কেউ হাজির হননি। এর প্রেক্ষিতে ৬ই জুলাই দুদকের নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মাইনুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যর একটি দল ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের এডিসি রাজস্ব শফিকুর আলমের নেতৃত্ব একটি দল ভবনটি প্রবেশ গেইটে সম্পত্তি ক্রোকের একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেন। পরে পুরো ভবনটি পরিদর্শন করে ভবনটির দরজা অত্যাধুনিক তালা দিয়ে বন্ধ রাখায় ভিতরে প্রবেশ করতে না পারায় বুধবার পুনরায় অভিযান চালায় দুদক ও জেলা প্রশাসক। তারা তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে প্রতিটি কক্ষে তল্লাশি চালান।
অভিযান শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুর আলম জানান, সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ-এর এই বাড়ির সকল ধরনের ফার্নিচার খুব সাধারণ মানের। দেশীয় প্রযুক্তির এসি, ফ্রিজ, টিভিসহ রান্নাঘরের জিনিসপত্র একটি সাধারণ পরিবারের যেমন থাকে তেমনি আছে। কিছু বইপত্র, একটি ঝাড়বাতি ও একসেট সোফা ছাড়া বিশেষ কিছু নেই।
এত দীর্ঘ সময় তল্লাশি ও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশে বাধার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এডিসি রাজস্ব বলেন, প্রতিটি জিনিস নির্ভুলভাবে তালিকা করার জন্যই এতো সময় ব্যয় ও সাংবাদিকদের ভেতরে ঢুকানো হয়নি। এ ব্যাপারে দুদকের উপ- পরিচালক মঈনুল হাসান বলেন, মামলার আদেশের প্রেক্ষিতে তারা এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভবনটির ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র পেয়েছেন। সেগুলোর তালিকা করা হয়েছে। রিপোর্ট আমরা হেড অফিসে পাঠাবো। পরবর্তীতে কোনো নির্দেশনা এলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত
যেহেতু তেমন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না, তাই সবই গুজব । তাই না ? ক্লিন সনদ কবে ছাড়া হবে ?