দেশ বিদেশ
বিমানকে দুর্নীতিমুক্ত ও টিকিট সমস্যার সমাধান করতে চান নয়া এমডি
স্টাফ রিপোর্টার
১ জুলাই ২০২৪, সোমবার![mzamin](uploads/news/main/116525_bi.webp)
বিমানকে দুর্নীতিমুক্ত, টিকিট নাই অথচ সিট ফাঁকা এ ধরনের নানা সমস্যার সমাধান করতে চান বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা। তিনি বলেছেন, এসব সমাধানকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। এই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান করতে চাই। ডিজিটালের পূর্ণ সুবিধা ব্যবহার করে যাত্রীদের সুবিধা দিতে চাই। গতকাল কুর্মিটোলায় বিমানের বলাকা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব বিমানকে দেয়ার বিষয়ে মো. জাহিদুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তৃতীয় টার্মিনালে সেবা দিতে বিমান পুরোপুরি প্রস্তুত। বিমান এটি গত ৫২ বছর ধরে করছে। বিভিন্ন দেশের অধিকাংশ বিমানবন্দরে যারা ন্যাশনাল কেরিয়ার বা তাদের সিস্টার্স কনসার্ন তারাই দায়িত্ব পালন করে। সেই হিসেবে বিমান এটা দাবি করে। সেই হিসেবে আমরা আশাবাদী। এক হাজার কোটি টাকার যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে।
এ ছাড়া আমাদের এক্সিটিং ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। মালে, কুনমিং, যাকার্তা, ও সিডনিসহ আরও কয়েকটি রুটে আমরা পর্যায়ক্রমে ফ্লাইট চালুর প্রত্যাশা করছি। প্রোফিট-লস সিএ ফার্ম দিয়ে নির্ণয় করা হয়। এ ছাড়া পেট্রোবাংলার বিপিসিতে আমরা নিয়মিত পেমেন্ট করে যাচ্ছি। বকেয়া কমানোর প্রক্রিয়া অন গোয়িং আছে। বিমানের ফ্লাইট ডিলে সম্পর্কে এমডি বলেন, আমাদের অন-টাইম পারফমেন্স নরমালি ৭৪ পার্সেন্ট। গত মাসের সেটি ৬৭ শতাংশ ছিল। কীভাবে ডিলে কমানো যায় সে বিষয়ে আমি পরিকল্পনা করছি। বিমানের স্টাফদের সোনা চোরাচালান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। দুর্নীতি করে কোনো প্রতিষ্ঠান আগাতে পারে না জানিয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখানে কোনো সুযোগ নাই। এর আগে এখানে যারা দুর্নীতি করেছে বিভিন্ন লেয়ারে তাদের শাস্তি হয়েছে। কাউকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, কাউকে পদাবনতি করা হয়েছে, কারও বেতন কমানো হয়েছে। আমিও এই জায়গাগুলোতে কাজ করবো এবং অব্যাহত থাকবো। আমরা টিকিটিংয়ের জায়গা ও দুর্নীতির জায়গা থেকে মুক্ত হতে চাই।
বিমানের এমডি বলেন, রুট সম্প্রসারণ ও যাত্রীর চাপ বিবেচনায় রেখে আগামী ১০ বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে আরও ৩২টি এয়ারক্রাফটের প্রয়োজন। এই চাহিদা মেটাতে ইউরোপীয় বহুজাতিক উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে সক্রিয়ভাবে এয়ারক্রাফট কেনার চিন্তাভাবনা চলছে। তিনি বলেন, আমরা দেখছি, ২০৩৫ সালের মধ্যে রুট সম্প্রসারণের লক্ষে বিমানের মোট ৪৭টি উড়োজাহাজের প্রয়োজন। বর্তমানে বিমান বহরের ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৬টি ফেজ আউট হবে। সেজন্য আরও ৩২টি উড়োজাহাজ পারচেজ অথবা লিজের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, এয়ারবাসের সঙ্গে বিমানের আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে। বোয়িংও বিমানকে তাদের উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। বোয়িংয়ের প্রস্তাব রিভিউ করবো। আমাদের দু’টিরই প্রয়োজন আছে।
গত অর্থবছরে বিমান তার বহরে থাকা ২১টি উড়োজাহাজ (এয়ারক্রাফট) দিয়ে ৩২ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে এবং এই সময়ে সংস্থাটি ১০ হাজার কোটি টাকা আয়ের মাইলফলক অর্জন করেছে। এ বছর আয় আরও বাড়বে। কার্গো থেকে ১২০০ কোটি আয়ের আশা করছি। তিনি বলেন, বিমান মিডিয়াম রিস্ক ক্যাটাগরি থেকে লো রিস্ক ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া বিমান দু’টি ৭৭৭ উড়োজাহাজের পুরো অর্থ পরিশোধ করেছে। আরও দু’টিরও শোধ হওয়ার পথে।”
গত ২৭শে মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বিমানের এমডি পদে মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞাকে নিয়োগের কথা জানানো হয়। তিনি বিসিএস প্রশাসন প্রশাসন ক্যাডারের ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে গত সাড়ে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর জাহিদুল ইসলাম ভূঞা শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। তিনি সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব (শ্রম) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।