দেশ বিদেশ
বেনজীরের ফ্ল্যাটের তালা খুলতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার
১ জুলাই ২০২৪, সোমবারপুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে থাকা গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটের তালা খুলতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। এর আগে গত ৬ই জুন গুলশানের র্যানকন আইকন টাওয়ারে বেনজীরের এ চারটি ফ্ল্যাটসহ অন্য সম্পত্তি দেখভালে তত্ত্বাবধায়ক (রিসিভার) নিয়োগের আদেশ দেন আদালত। রিসিভার হিসেবে দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে ফ্ল্যাটটি পরিদর্শনকালে তিনি সেগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় ভবনটির দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা জানান, ফ্ল্যাটের মালিকদের কাছে চাবি রয়েছে, তারা এখানে থাকেন না এবং কোথায় আছেন তাও জানেন না। এজন্য রিসিভার মো. মঞ্জুর মোর্শেদ অভিযোগসংশ্লিষ্ট (বেনজীর পরিবার) ব্যক্তিদের অনুপস্থিতিতে বিনা বাধায় ফ্ল্যাটে প্রবেশ, মালামালের ইনভেন্টরি, স্পেসের পরিমাপপূর্বক ভাড়া নির্ধারণ করার বিষয়ে সদয় আদেশ চেয়ে আবেদন করেন।
পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত ফ্ল্যাটে প্রবেশে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দেন। তার উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করবেন চারটি ফ্ল্যাটের দেখভালে নিয়োজিত থাকা দুদক কর্মকর্তা।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাবেক পুলিশ মহারিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে ক্রয়কৃত গুলশান-১ এ অবস্থিত র্যানকন আইকোন টাওয়ারের চারটি ফ্ল্যাটের সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুদকের পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট)কে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
এ আদেশ পাওয়ার পর পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা) একটি টিমসহ গত ১৩ই জুন সংশ্লিষ্ট বিল্ডিং এর ফ্ল্যাটগুলো পরিদর্শনে যান। এ ভবনের নিচতলায় রিসেপশনিস্ট মেহরাব হোসেন অপির সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় যে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ ফ্ল্যাটসমূহে বসবাস করেন না।
পরিদর্শনকালে দুদক জানতে পারে, সংশ্লিষ্ট ভবনের ১৩ ও ১৪ তলায় ডুপ্লেক্স আকারে ৯ হাজার বর্গফুটের অধিক স্পেস নিয়ে ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটগুলোর চাবি অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট রয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি এ ভবনে বাস করেন না এবং কোথায় গেছেন তা কেউ বলতে পারেন না বলে রিসেপশনিস্ট জানান।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যেসব সার্ভিস চার্জ, ইলেক্ট্রিসিটি বিল, পানি ও গ্যাস বিলসহ অন্যান্য কিছু বিষয়ে আর্থিক খরচের বিষয়াদি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া প্রদান করতে ওই ফ্ল্যাটগুলো খুলতে হবে এবং এর আবাসিক ভাড়ার হার নিরূপণ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে জায়গা পরিমাপ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ওই ফ্ল্যাটগুলোর অভ্যন্তরে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্রের একটি তালিকা ইনভেন্ট্রি করার জন্য একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।