শেষের পাতা
পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেল প্রকল্প
মেয়াদ শেষেও শুরু হয়নি নির্মাণকাজ
নাজমুল হুদা
২৯ জুন ২০২৪, শনিবারপার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া ৫৭ কিলোমিটার রেলপথ। মিটারগেজ থেকে তা ডুয়েলগেজে রূপান্তরের অনুমোদন হয় ২০১৮ সালের
জানুয়ারিতে। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৬ বছর। তবে সেই মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি নির্মাণকাজ। প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এখন মিটারগেজ লাইনের পাশ দিয়ে নতুন করে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ করবে। বর্তমানে প্রকল্পটি ফিজিবিলিটি স্টাডি পর্যায়ে রয়েছে। তাই চলতি বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পার্বতীপুর-কাউনিয়া ডুয়েলগেজ রেললাইনটি ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে হচ্ছে। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা।
তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এখনো নির্মাণকাজে হাত দিতে না পারা প্রসঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রসেসিং প্রক্রিয়াকে দায়ী করেন প্রকল্প পরিচালক অতিঃ প্রধান প্রকৌশলী মো. আহসান জাবির। এক্ষেত্রে তিনি রেল মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নাম উল্লেখ করেন। আহসান জাবির বলেন, মন্ত্রণালয় বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্পের প্রস্তাব গেলে অনুমোদন পেতে অনেকগুলো প্রসেস পার হতে হয়। সেই প্রসেসে দেরি হয়। এখন ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। এটা শেষ হলে চলতি বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিটেইলস ডিজাইনের কাজ হবে। এরপর থেকে নির্মাণকাজে হাত দেয়া হবে।
ভারত ছাড়াও নেপাল, ভুটানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে এই রেললাইন সক্ষম হবে বলে জানিয়েছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কাজের তেমন গতি না থাকায় ধুঁকছে রেলের এই প্রকল্প।
পার্বতীপুর-কাউনিয়া প্রকল্প প্রসঙ্গে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, বিদ্যমান লাইনে ডুয়েলগেজ করবো না কি আমরা আলাদা একটা লাইন করবো সেই সিদ্ধান্তের বিষয় ছিল। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম আলাদা আরেকটা লাইন করবো। কারণ ওটা ভেঙে লাইন করতে গেলে যে খরচ হবে তার চেয়ে পাশে আরেকটা লাইন করলে খরচ কম হবে।
পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া সেকশনে ৫৭ কি.মি রেললাইনে সাতটি স্টেশন বিল্ডিং, গার্ডার ব্রিজ ১৪টি ও বক্স কালভার্ট ৩৩, চারটি প্ল্যাটফরম শেড নির্মাণের কথা রয়েছে। এ ছাড়া স্থাপন করা হবে ছয়টি কম্পিউটার বেজড সিগন্যালিং সিস্টেম। বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে রেলওয়ে ট্রানজিট স্থাপন করতে পারবে এই রেললাইনের ফলে। চিলাহাটি থেকে পার্বতীপুর হয়ে ঈশ্বরদী পর্যন্ত সেকশনটি ব্রডগেজ। কিন্তু দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ভারতের রাধিকাপুর ও পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত সেকশনটি মিটারগেজ। এ অবস্থায় বিরল সীমান্ত দিয়ে ব্রডগেজ লাইনের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর’ নামে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়।