শেষের পাতা
সৌরভকে হত্যার পর লাশ টুকরো করার লোমহর্ষক বর্ণনা
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে
৫ জুন ২০২৪, বুধবারময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। সৌরভের হত্যাকারী আপন চাচা ইলিয়াছ ও চাচার শ্যালক ফারুকসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার ও খুনের আলামত উদ্ধার করেছে ময়মনসিংহ ডিবি ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ঘাতকরা। মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুইয়া। পুলিশ সুপার বলেন, তিন বছর আগে সৌরভের চাচাতো বোন ইসরাত জাহান ইভার বিয়ে হয় আব্রাহামের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে কানাডায় পড়াশোনা করছেন। তার সঙ্গে ডিভোর্সও হয়নি ইভার। কিন্তু সৌরভ গোপনে তার চাচাতো বোন ইভাকে বিয়ে করেন। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ইভার পরিবার। গত ১লা জুন সৌরভ ময়মনসিংহে আসে আব্রাহামের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। বিষয়টি জেনে ক্ষিপ্ত হন ইভার বাবা। এরপর ইলিয়াস তার দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মৃদুলকে দিয়ে সৌরভকে ফোন করে বাসায় ডেকে আনেন। তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গোয়ালকান্দিতে ইলিয়াস ও তার শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক মাথায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে সৌরভকে হত্যা করে। এরপর লাশ বাথরুমে ফেলে রাখে। পরে চাপাতি দিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে এবং শরীর থেকে দুই পা বিচ্ছিন্ন করে। সৌরভের খণ্ডিত লাশ গুম করার জন্য ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় থেকে ব্রান্ডের একটি লাগেজ ক্রয় করে তারা। আমরা ওই দিনই লাগেজের দোকানের সন্ধান পাই। সেই দোকানের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করি। ফুটেজে আমরা দেখতে পাই- ১লা জুন রাত ৮টার দিকে ইলিয়াস এবং ফারুক দুজনই ওই দোকানে লাগেজ কিনতে যায়। আমরা সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানতে পারি তারাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এরপর ডিবি এবং আমাদের কোতোয়ালি থানা যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে সোমবার রাতে ফারুককে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল আসামি ইলিয়াসকে নেত্রকোনার ধোবাউড়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। লাশ গুম করতে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রাইভেট কার চালককে। প্রাথমিকভাবে তারা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ইলিয়াস সাবেক সেনাসদস্য। সে লাশের পরিচয় যেন কেউ শনাক্ত করতে না পারে, সে জন্য দুই হাতের আঙুলের চামড়া তুলে ফেলেছিল।
উল্লেখ্য, গত ২রা জুন সকালে ময়মনসিংহ সদরের সীমান্তবর্তী মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে সৌরভের চার টুকরো করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।