ঢাকা, ৩ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

কলড্রপ নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর কড়া বার্তা

স্টাফ রিপোর্টার
১ জুলাই ২০২৪, সোমবারmzamin

কলড্রপ নিয়ে দেশের মোবাইল অপারেটরদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আমাদের গ্রাহকেরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কলড্রপ নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মোবাইল গ্রাহকেরা যেমন অসন্তুষ্ট, তেমনি বিটিআরসি যে পরীক্ষাগুলো করেছে সে রিপোর্ট অনুসারেও সেবার মান খুব একটা সন্তোষজনক নয়। তিনি বলেন, মোবাইল গ্রাহক সেবার আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। 

দেশে বিদ্যমান প্রত্যেকটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানিকে গ্রাহকদের প্রতিশ্রুত সেবা প্রদান, গ্রাহক পর্যায়ে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট প্রদান এবং অপারেটরদের যে সকল সুবিধা আমরা দিচ্ছি সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। এরই ধারাবাহিকতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগে দেশে মোবাইল সেবাকে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে উন্নীত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে। প্রতিমন্ত্রী গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিটিআরসি আয়োজিত ‘মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবার মান সংক্রান্ত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। 

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠানে অ্যামটব সভাপতি ও গ্রামীণ ফোনের সিইও ইয়াসির আজমানসহ মোবাইল ফোন  কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত গতকাল মানবজমিন পত্রিকায় কলড্রপ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গতকালের বৈঠকে ওই প্রতিবেদন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কলড্রপ নিয়ে মোবাইল অপারেটরগুলো যে তথ্যই দিক না কেন, তা গুরুত্ববহ হবে না। গ্রাহকদের কাছ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত না একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র না পাবো ততক্ষণ পর্যন্ত শুধুমাত্র কাগজে-কলমে বা ডিজিটাল উপস্থাপনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হবো না। যেভাবেই হোক আমরা গ্লোবাল বেঞ্চমার্কে উন্নীত হতে চাই। কারণ, এটা আমাদের দেশের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে একটা বড় প্রভাব ফেলে। কলড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা সেটা আমরা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাচ্ছি এ কথা উল্লেখ করে পলক বলেন, মোবাইল ওয়ার্ক অপারেটরগুলো যদি  প্রতিশ্রুত সেবা না দেয় তাহলে তাদের গ্রাহককে আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

 তিনি বলেন, আমরা মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করবো। কলড্রপ নিয়ে ঢাকার কয়েকটি এলাকার ড্রাইভ টেস্টের ফলাফল পর্যালোচনা করে পলক বলেন, শহর বা গ্রাম যেখানেই হোক আমরা মিডিয়ার যে রিপোর্ট, সেগুলো আমলে নেবো এবং সেখানে আমরা ড্রাইভ দেবো। এ সময় তিনি জানান, ফাইন্যান্সিয়াল অডিট এবং টেকনিক্যাল অডিটের ওপরও জোর দেয়া হবে। ইন্টারনেটের গতি কেন কম হচ্ছে, গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া কী? সেগুলো আমলে নিয়ে ড্রাইভ দেয়া হবে। আমরা কারিগরি পরিদর্শন দল গঠন করেছি, তারা সেগুলো টেস্ট করছে বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। এক্ষেত্রে অপারটেরদের সহায়তাও দেয়া হবে জানিয়ে পলক বলেন, আমরা অপারেটরদের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে সাঁতার শেখাবো না, আমরা সাঁতার শিখিয়ে সক্ষমতা দিয়ে দেবো, যাতে নদীটা পার হওয়া যায়। তিনি মোবাইল অপারেটরদের উদ্দেশ্যে বলেন, কলড্রপ যাতে বিশ্বের অন্যতম একটা ভালো বেঞ্চমার্কে পৌঁছাতে পারি। সেটা আমাদের মূল লক্ষ্য। কলড্রপে সময় নষ্ট হয়, এনার্জি নষ্ট হয়, গ্রাহক বিরক্ত হয়।

 পাশাপাশি আপনাদেরও কিন্তু টেকনিক্যাল ও ফাইন্যান্সিয়াল লস হয়। এসব বিষয় খেয়াল করে সমাধানে যেতে হবে। সমস্যা যত কঠিনই হোক না কেন সমাধান করতে হবে। কোভিডকালে মোবাইল অপারেটরদের ভূমিকার প্রশংসা করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবা প্রসঙ্গে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ফাইভজি রোল আউটেরও একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং ৪টি মোবাইল অপারেটর কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রথম পর্যায়ে এয়ারপোর্ট, সি-পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাণিজ্যিক ও শিল্পাঞ্চলে ফাইভজি রোল আউট করা হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় রোল আউট করা হবে। আমাদের হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনাল অক্টোবরে উদ্বোধন হতে পারে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অক্টোবরকে টার্গেট করে ৪টি মোবাইল অপারেটরকে একটা চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, যেন অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে ফাইভজি ওখানে নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁও এলাকায় ফাইভজি এনাবল অনেক স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয়। আমার বিশ্বাস সেসব জায়গায়ও  এ বিষয়ে কোম্পানিগুলো মনোযোগ দেবে। এ সভায় পলক জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় ফাইভজি ও আইওটি কীভাবে ব্যবহার করতে পারি সে বিষয়েও কাজ করছি। আমরা আশা করছি সেখানেও দ্রুত ফাইভজি ব্যবহার করতে পারবো।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status